১৯ মার্চ ২০২৪, মঙ্গলবার, ০৫:২২:২৪ অপরাহ্ন


বাবুডাইং আদিবাসী আলোর পাঠশালায় বাঁশ-কঞ্চির শহীদ মিনার দিয়ে মাতৃভাষা দিবস উদযাপন
চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি
  • আপডেট করা হয়েছে : ২১-০২-২০২২
বাবুডাইং আদিবাসী আলোর পাঠশালায় বাঁশ-কঞ্চির শহীদ মিনার দিয়ে মাতৃভাষা দিবস উদযাপন বুডাইং আদিবাসী আলোর পাঠশালায় বাঁশ-কঞ্চির শহীদ মিনার দিয়ে মাতৃভাষা দিবস উদযাপন


গ্রামবাসীদের সঙ্গে নিয়ে সোমবার ‘ইংবেন বয়হাওয়া রাগোয়া ইকুশ না: ফেব্রুয়ারি, ইংকি আত হিরিং ইং....’ অর্থাৎ ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি আমি কি ভুলিতে পারি.....’ কোল ও বাংলায় প্রভাতফেরিতে একুশের গান গেয়ে, প্রভাতফেরির পর নিজেদের বানানো শহীদ মিনারে পুষ্পাঞ্জলি অর্পণ, ছড়া-কবিতা আবৃত্তি, আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপন করেছে রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার বাবুডাইং আদিবাসী আলোর পাঠশালার শিক্ষার্থীরা।

দিবসটি উপলক্ষে সাতদিন আগে থেকেই শিক্ষার্থীরা মাটি নিয়ে এসে শহীদ মিনারের বেদী তৈরি করে। এরপর বাঁশ-কঞ্চি দিয়ে শহীদ মিনার তৈরি করে। বেদী প্রাঙ্গণ লেপেপুছে আলপনা আঁকে। এরপর সোমবার সকালে বিদ্যালয় প্রাঙ্গণ থেকে প্রভাতফেরি বের করা হয়। এতে সকল শিক্ষার্থী, গ্রামবাসী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ বন্ধুসভার বন্ধুরাও অংশ নেয়। প্রভাতফেরি শেষে  শহীদ মিনারে পুষ্পাঞ্জলি অর্পণ করা হয়। এরপর গ্রামের মোড়ল মাধব কোল সরেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. সুজারুদ্দিন, বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা ও অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক কানাই চন্দ্র দাস, গ্রামের মোড়ল সুরেন কোল টুডু, চাঁপাইনবাবগঞ্জে প্রথম আলো বন্ধুসভার উপদেষ্টা মতিউর রহমান, সাবেক সভাপতি ওজিফা খাতুন, প্রথম আলোর নিজস্ব প্রতিবেদক আনোয়ার হোসেন, জহির রায়হান, এসআইএল ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ, রাজশাহী-চাঁপাইনবাবগঞ্জের সমন্বায়ক নিকোলাস মুর্মু, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আলী উজ্জামান নূর প্রমূখ। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক সাঈদ মাহমুদ।

কবিতা আবৃত্তি করে শিক্ষার্থী ‍লাবিবা, মমতা হাসদা, দীপ। এছাড়া বিদ্যালয়ের কোল সাংস্কৃতিক দল আদিবাসী নাচ পরিবেশন করে। 

বক্তারা বলেন, বরেন্দ্রর এই গহিনে অবস্থিত কোল ক্ষুদ্র জাতিসত্তার মানুষেল বাস। এছাড়াও পদ্মা নদী ভাঙণের শিকার হয়ে বাবুডাইং বনের পাশে আশ্রয় নেয়া বাঙালি মানুষজন বাস করে এলাকায়। উভয় সম্প্রদায়ের সন্তানেরা এ আলোর পাঠশালা থেকে শিক্ষা গ্রহণ করে থাকে। এ পাঠশালার কারণেই নিভৃতের এ গ্রামে প্রতিবছর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপিত হয়। শিক্ষার্থীরা নিজেদের মনের মাধুরী মিশিয়ে বেশ কয়েকদিন আগে থেকেই শহীদ মিনার তৈরির কাজ করে থাকে। প্রভাতফেরিতে সকলে বুনোফুল নিয়ে অংশ নেয়। এরপর শহীদ মিনারে ভাষা শহীদদের শ্রদ্ধা জানাতে পুষ্পাঞ্জলি অর্পণ করে। নিজেদের ভাষায় গান গায়। সবমিলিয়ে ভাষা শহীদদের স্মরণ ও শ্রদ্ধা জানাতে নানা কর্মকান্ড করে থাকে। যা সচরাচর অন্যান্য জায়গায় দেখা যায় না। এ উদ্যোগ প্রশংসনীয়। এটি চলমান থাকুক। 

রাজশাহীর সময় /এএইচ