বান্দরবানের নাইক্ষ্যছড়ির তুমব্রুতে বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তের শূন্যরেখায় আশ্রিত রোহিঙ্গাদের সরিয়ে আনার কাজ শেষ হয়েছে।
রোববার সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত ৮ম দফায় উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়নের তুমব্রু বাজার থেকে বাসে করে ৬৭ পরিবারের ২৪২ রোহিঙ্গাকে উখিয়ার কুতুপালং ট্রানজিট পয়েন্টে আনা হয়েছে। ফলে এখন তুমব্রুতে কোনো রোহিঙ্গা নেই।
গত এক মাসে সাত দফায় ৪৬৩ পরিবারের দুই হাজার ২৮৫ রোহিঙ্গাকে উখিয়ায় হস্তান্তর করা হয়েছে। এই এক মাসে সেখান থেকে মোট দুই হাজার ৫২৭ রোহিঙ্গাকে ক্যাম্পে আনা হয়।
স্থানান্তর কার্যক্রমের সময় উপস্থিত ছিলেন- কুতুপালং ৭নং ক্যাম্পের সিআইসি (নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট) প্রীতম সাহা ও ঘুমধুম ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান একেএম জাহাঙ্গীর আজিজ।
কক্সবাজারস্থ আরআআসি অফিস সূত্র জানান, চলতি মাসের ৫ তারিখ প্রথম দফা রোহিঙ্গাদেরকে ট্রানজিট ক্যাম্পে আনা হয়। তখন ছিল ৩৬ পরিবারের ১৮৪ জন রোহিঙ্গা। এভাবে গত রোববার সর্বশেষ ২৪২ জন রোহিঙ্গাকে নেয়া হয়। এভাবে ৮ম দফায় মোট স্থানান্তর করা হয় ২৫২৭ জন রোহিঙ্গাকে। যাদের মধ্য থেকে গত ৫ ফেব্রুয়ারি থেকে ১৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত নিবন্ধিত রোহিঙ্গা থেকে ৭ কিস্তিতে কুতুপালং সংলগ্ন ঘুমধুম ট্রানজিট ক্যাম্পে নেয়া হয় ২৩৮৭ জনকে। এ সময় কিছু রোহিঙ্গা অনিবন্ধিত ছিল। যা নিয়ে সংশ্লিষ্টরা বিড়ম্বনায় পড়ে। নতুন করে গণনা করা হয় গত বৃহস্পতিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি)। তখন গুনে পাওয়া য়ায় ২৪২ জন নতুন আশ্রিত রোহিঙ্গাকে। তাদেরকে রোববার ঘুমধুমের সেই আলোচিত ট্রানজিট ক্যাম্পে সরানো হয়।
এ বিষয়ে চেয়ারম্যান একেএম জাহাঙ্গীর আজিজ বলেন, রোববার সকাল সাড়ে ১০টায় প্রথম দফা মালামালসহ ১৩০ রোহিঙ্গাকে নিয়ে ট্রানজিট ক্যাম্পে পৌঁছে দেয় ১টি বাস ও ১টি ট্রাক। আর দুপুর ২টার দিকে অবশিষ্ট রোহিঙ্গাদের নিয়ে যাওয়া হয় সেই একই ক্যাম্পে। বর্তমানে তুমব্রু গ্রামে আর কোনো রোহিঙ্গা অবশিষ্ট নেই।
এদিকে স্থানীয় বাসিন্দা আলী আকবর, জামাল সওদাগরও আলম বলেন, সরকারের গুরুত্বপূর্ণ এক সিদ্ধান্তের কারণে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়নের তুমব্রু গ্রাম থেকে সব রোহিঙ্গাকে ট্রানজিট ক্যাম্পে নেয়া শেষ হয়েছে।
কক্সবাজাস্থ শরনার্থী, ত্রাণ ও প্রত্যবাসন কমিশনার (আরআরআরসি) মোহাম্মদ মিজানুর রহমান জানান, শূন্যরেখা থেকে তুমব্রুতে আশ্রিত সব রোহিঙ্গাকে উখিয়ায় সরিয়ে আনার কাজ শেষ হয়েছে। সর্বশেষ ৬৭ পরিবারের ২৪২ রোহিঙ্গাকে উখিয়ার কুতুপালং ট্রানজিট পয়েন্টে আনা হয়। সব মিলিয়ে ৫৩০ পরিবারের দুই হাজার ৫২৭ রোহিঙ্গাকে স্থানান্তর সম্পন্ন হয়েছে। তুমব্রুতে আর কোনো রোহিঙ্গা নেই।