২৩ নভেম্বর ২০২৪, শনিবার, ১১:৩১:২৬ অপরাহ্ন


আল্লাহর সঙ্গে শিরক কত প্রকারের হতে পারে?
ধর্ম ডেস্ক:
  • আপডেট করা হয়েছে : ২৭-১১-২০২২
আল্লাহর সঙ্গে শিরক কত প্রকারের হতে পারে? ফাইল ফটো


আল্লাহর সঙ্গে বা তার ইবাদতে শরিক বা অংশীদার স্থাপন করা হারাম তথা নিষিদ্ধ। আল্লাহর সঙ্গে এ শিরক বিভিন্ন প্রকারে হতে পারে। আল্লাহর সঙ্গে শিরকের এ প্রকারভেদগুলো কেমন হতে পারে? নিন্মে এর কয়েকটি উল্লেখ করা হলো-

১. আল্লাহকে অস্বীকার করা

আল্লাহ তাআলাকে ইবাদতের উপযুক্ত মনে না করে তার সঙ্গে শিরক করা। ইবাদত পাওয়ার একমাত্র উপযুক্ত সত্তা আল্লাহ তাআলাকে না মেনে তাঁর সঙ্গে অন্য কাউকে যোগ্য বলে মনে করা। অথচ আল্লাহ তাআলা বলেন-

وَلاَ تَجْعَلْ مَعَ اللهِ إِلَهًا آخَرَ فَتُلْقَى فِيْ جَهَنَّمَ مَلُوْمًا مَدْحُوْرًا

‘আল্লাহর সঙ্গে অন্য কোনো উপাস্য স্থির কর না। তাহলে নিন্দিত ও (আল্লাহর অনুগ্রহ থেকে) বিতাড়িত অবস্থায় জাহান্নামে নিক্ষিপ্ত হবে।’ (সুরা বনি ইসরাঈল : আয়াত ৩৯)

আল্লাহ তাআলা আরও বলেন

لاَ تَجْعَلْ مَعَ اللهِ إِلَهًا آخَرَ فَتَقْعُدَ مَذْمُوْمًا مَخْذُوْلاً

‘আল্লাহর সঙ্গে অন্য কোনো উপাস্য স্থির করো না। তাহলে তুমি নিন্দিত ও অসহায় হয়ে পড়বে।’ (সুরা বনি ইসরাঈল : আয়াত ২২)

তিনি আরও বলেন-

وَمَنْ يَدْعُ مَعَ اللهِ إِلَهًا آخَرَ لاَ بُرْهَانَ لَهُ بِهِ فَإِنَّمَا حِسَابُهُ عِنْدَ رَبِّهِ إِنَّهُ لاَ يُفْلِحُ الْكَافِرُوْنَ

‘যে কেউ আল্লাহর সঙ্গে অন্য উপাস্যকে ডাকে, যার কোন সনদ তার কাছে নেই, তার হিসাব তার পালনকর্তার কাছে রয়েছে। নিশ্চয়ই কাফিররা সফলকাম হবে না।’ (সুরা মুমিনুন : আয়াত ১১৭)

আল্লাহ তাআলা নবীদেরকেও এ ব্যপারে সতর্ক করে দিয়েছেন এভাবে-

فَلاَ تَدْعُ مَعَ اللهِ إِلَهًا آخَرَ فَتَكُوْنَ مِنَ الْمُعَذَّبِيْنَ

‘(হে নবি!) আপনি আল্লাহর সঙ্গে অন্য কোনো উপাস্যকে ডাকবেন না। তাহলে আপনি শাস্তিতে নিপতিত হবেন।’ (সুরা শুআরা : আয়াত ২১৩)

২. মৃতব্যক্তির কাছে দোয়া করা

মৃতব্যক্তির কাছে কিছু চাওয়া বা অনিষ্ট থেকে বাঁচার জন্য দোয়া করা শিরকে আকবার তথা বড় শিরক। কোনো মুমিন যদি এ কাজ করে তবে তার ঈমান বিনষ্ট হয়ে যাবে। কারণ ভাল-মন্দ দেওয়া, না দেওয়ার মালিক একমাত্র আল্লাহ তাআলা। তিনি বলেন-

قُلْ أَتَعْبُدُوْنَ مِنْ دُوْنِ اللهِ مَا لاَ يَمْلِكُ لَكُمْ ضَرًّا وَلاَ نَفْعًا وَاللهُ هُوَ السَّمِيْعُ الْعَلِيْمُ

‘(হে নবি!) আপনি বলে দিন, তোমরা কি আল্লাহ ছাড়া এমন বস্তুর ইবাদত কর, যে তোমাদের অপকার ও উপকার করার ক্ষমতা রাখে না। অথচ আল্লাহ সব শুনেন ও জানেন।’ (সুরা মায়েদা : আয়াত ৭৬)

আল্লাহর নবি হজরত মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিজেই নিজের উপকার-অপকার করতে পারতেন না বলে কুরআনে প্রমাণ মিলে। সেখানে অন্যদের মাধ্যমে কি করে উপকার আশা করা যায়? আল্লাহ তাআলা বলেন-

قُلْ لاَ أَمْلِكُ لِنَفْسِيْ نَفْعًا وَلاَ ضَرًّا إِلاَّ مَا شَاءَ اللهُ

‘(হে নবি!) আপনি বলে দিন, আমি আমার নিজের কল্যাণ সাধনের এবং অকল্যাণ সাধনের মালিক নই কিন্তু আল্লাহ যা চান।’ (সুরা আরাফ : আয়াত ১৮৮)

আল্লাহ তাআলা আরও বলেন-

قُلْ أَفَاتَّخَذْتُمْ مِنْ دُوْنِهِ أَوْلِيَاءَ لاَ يَمْلِكُوْنَ لِأَنْفُسِهِمْ نَفْعًا وَلاَ ضَرًّا

‘(হে নবি!) আপনি বলুন, তবে কি তোমরা আল্লাহ ছাড়া এমন অভিভাবক স্থির করেছ, যারা ভাল ও মন্দের মালিকও নয়।’ (সুরা রাদ : আয়াত ১৬)

অন্যত্র আল্লাহ তাআলা ঘোষণা দেন-

وَإِنْ يَمْسَسْكَ اللهُ بِضُرٍّ فَلاَ كَاشِفَ لَهُ إِلاَّ هُوَ وَإِنْ يَمْسَسْكَ بِخَيْرٍ فَهُوَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيْرٌ، وَهُوَ الْقَاهِرُ فَوْقَ عِبَادِهِ

‘আল্লাহ যদি তোমাকে কোন কষ্ট দেন, তবে তিনি ছাড়া তা অপসারণকারী কেউ নেই। পক্ষান্তরে যদি তিনি তোমার মঙ্গল করেন, তবে তিনি সব কিছুর উপর ক্ষমতাবান। তিনিই তার বান্দার উপর পরাক্রান্ত’ (আনআম : আয়াত ১৭-১৮)

মহান আল্লাহ বলেন-

قُلْ أَفَرَأَيْتُمْ مَا تَدْعُوْنَ مِنْ دُوْنِ اللهِ إِنْ أَرَادَنِيَ اللهُ بِضُرٍّ هَلْ هُنَّ كَاشِفَاتُ ضُرِّهِ أَوْ أَرَادَنِيْ بِرَحْمَةٍ هَلْ هُنَّ مُمْسِكَاتُ رَحْمَتِهِ قُلْ حَسْبِيَ اللهُ عَلَيْهِ يَتَوَكَّلُ الْمُتَوَكِّلُوْنَ

‘(হে নবি! আপনি) বলুন, তোমরা ভেবে দেখেছ কি, যদি আল্লাহ আমার অনিষ্ট করার ইচ্ছা করেন, তবে তোমরা আল্লাহ ছাড়া যাদেরকে ডাক, তারা কি সে অনিষ্ট দূর করতে পারবে? অথবা তিনি আমার প্রতি রহমত করার ইচ্ছা করলে তারা কি সে রহমত রোধ করতে পারবে? বলুন, আমার পক্ষে আল্লাহই যথেষ্ট। (প্রকৃত পক্ষে) নির্ভরকারীরা তাঁরই উপর নির্ভর করে।’ (সুরা যুমার : আয়াত ৩৮)

 অন্যত্র তিনি বলেন-

وَاتَّخَذُوْا مِنْ دُوْنِهِ آلِهَةً لاَ يَخْلُقُوْنَ شَيْئًا وَهُمْ يُخْلَقُوْنَ وَلاَ يَمْلِكُوْنَ لِأَنْفُسِهِمْ ضَرًّا وَلاَ نَفْعًا وَلاَ يَمْلِكُوْنَ مَوْتًا وَلاَ حَيَاةً وَلاَ نُشُوْرًا

‘তারা আল্লাহর পরিবর্তে কত উপাস্য গ্রহণ করেছে, যারা কিছুই সৃষ্টি করতে পারে না বরং তারা নিজেরাই সৃষ্ট। তারা নিজেদের ভালও করতে পারে না মন্দও করতে পারে না। আর জীবন, মরণ ও পুনরুজ্জীবনের মালিকও তারা নয়।’ (সুরা ফুরক্বান : আয়াত ৩)

আল্লাহ তাআলা বলেন-

وَالَّذِيْنَ تَدْعُوْنَ مِنْ دُوْنِهِ مَا يَمْلِكُوْنَ مِنْ قِطْمِيْرٍ، إِنْ تَدْعُوْهُمْ لاَ يَسْمَعُوْا دُعَاءَكُمْ وَلَوْ سَمِعُوْا مَا اسْتَجَابُوْا لَكُمْ وَيَوْمَ الْقِيَامَةِ يَكْفُرُوْنَ بِشِرْكِكُمْ وَلاَ يُنَبِّئُكَ مِثْلُ خَبِيْرٍ-

‘তাঁর (আল্লাহর) পরিবর্তে তোমরা যাদের ডাক, তারা তুচ্ছ খেজুর আটিরও অধিকারী নয়। তোমরা তাদের ডাকলে তারা তোমাদের সে ডাক শুনে না। শুনলেও তোমাদের ডাকে সাড়া দেয় না। কেয়ামতের দিন তারা তোমাদের শিরক অস্বীকার করবে। বস্তুত আল্লাহর ন্যায় তোমাকে কেউ অবহিত করতে পারবে না।’ (সুরা ফাতির : আয়াত ১৩-১৪)

৩. মৃতব্যক্তির কাছে সাহায্য চাওয়া

মৃতব্যক্তির কাছে সাহায্য চাওয়া বা কাউকে গাওছুল আজম (সর্বোচ্চ সহযোগিতাকারী) মনে করাও বড় গুনাহের অন্তর্ভুক্ত; যা মানুষকে ইসলাম থেকে বের করে দেয়। মহান আল্লাহ বলেন-

إِنَّمَا تَعْبُدُوْنَ مِنْ دُوْنِ اللهِ أَوْثَاناً وَتَخْلُقُوْنَ إِفْكاً إِنَّ الَّذِيْنَ تَعْبُدُوْنَ مِنْ دُوْنِ اللهِ لاَ يَمْلِكُوْنَ لَكُمْ رِزْقاً فَابْتَغُوْا عِنْدَ اللهِ الرِّزْقَ وَاعْبُدُوْهُ وَاشْكُرُوْا لَهُ إِلَيْهِ تُرْجَعُوْنَ-

‘তোমরা তো আল্লাহর পরিবর্তে কেবল প্রতিমারই পূজা করছ এবং মিথ্যা উদ্ভাবন করছ। তোমরা আল্লাহর পরিবর্তে যাদের ইবাদত করছ, তারা তোমাদের রিজিকের মালিক নয়। কাজেই আল্লাহর কাছে রিযিক তালাশ কর, তাঁর ইবাদত কর এবং তাঁর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ কর। তাঁরই কাছে তোমরা প্রত্যাবর্তিত হবে।’ (সুরা আনকাবুত : আয়াত ১৭)

আল্লাহ পাক আরও বলেন-

وَمَنْ أَضَلُّ مِمَّنْ يَدْعُوْ مِنْ دُوْنِ اللهِ مَنْ لاَّ يَسْتَجِيْبُ لَهُ إِلَى يَوْمِ الْقِيَامَةِ وَهُمْ عَنْ دُعَائِهِمْ غَافِلُوْنَ

‘যে ব্যক্তি আল্লাহর পরিবর্তে এমন বস্তুর পূঁজা করে, যে কেয়ামত পর্যন্তও তার ডাকে সাড়া দেবে না, তার চেয়ে অধিক পথভ্রষ্ট আর কে? তারাতো তাদের পূঁজা সম্পর্কেও বেখবর।’ (সুরা আহকাফ : আয়াত ৫)

কোন কিছু চাইতে হলে শুধু আল্লাহর কাছেই চাইতে হবে। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন-

إِذَا سَأَلْتَ فَاسْأَلِ اللهَ وَإِذَا اسْتَعَنْتَ فَاسْتَعِنْ بِاللهِ

‘যখন তুমি কোন কিছু চাইবে তখন আল্লাহর কাছেই চাইবে। আর যখন সাহায্য প্রার্থনা করবে তখন আল্লাহর কাছেই করবে।’ (তিরমিজি ২৫১৬; জামে ৭৯৫৭)

৪. আল্লাহ ছাড়া অন্যের নামে মানত করা

আল্লাহ ছাড়া মৃত বা জীবিত কারো নামে মানত করা শিরক। গায়রুল্লাহর নামে মানত করলে ঐ মানত পূর্ণ করা যাবে না। হজরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা বর্ণনা করেছেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এরশাদ করেছেন-

مَنْ نَذَرَ أَنْ يُطِيْعَ اللهَ فَلْيُطِعْهُ وَمَنْ نَذَرَ أَنْ يَعْصِىَ اللهَ فَلاَ يَعْصِهِ

‘যে ব্যক্তি আল্লাহর আনুগত্যের কাজে মানত করে, সে যেন তা পূরা করার মাধ্যমে তার আনুগত্য করে। আর যে ব্যক্তি আল্লাহর নাফরমানিমূলক কাজে মানত করে, সে যেন তার নাফরমানি না করে। (অর্থাৎ মানত পূরা না করে)।’ (বুখারি ৬৬৯৬)

নযর বা মানত করা ইবাদতের অন্তর্ভুক্ত হবে, যদি তা একমাত্র আল্লাহর উদ্দেশ্যে হয়। আর আল্লাহর নামে মানত করলে তা আদায় করা ওয়াজিব। আল্লাহ ছাড়া অন্যের নামে মানত করলে তা শিরক হবে। বিধায় তা পূর্ণ করা হারাম। এরূপ মান্নতের নিয়ত করে থাকলে তা ত্যাগ করতে হবে এবং তওবা করতে হবে। (ফাতহুল মাজিদ ১৩৬ পৃষ্ঠা)

৫. মুশরিকদের পশু জবাইয়ের স্থানকে নির্ধারণ করা

যে স্থানে মুশরিকরা তাদের দেব-দেবীর উদ্দেশ্যে পশু জবাই করে সে স্থানটি শিরকের নিদর্শনে পরিণত হয়। কারণ এর দ্বারা তাদের উদ্দেশ্য হচ্ছে, দেব-দেবীর নৈকট্য পাওয়া। আল্লাহর সঙ্গে শরিক করা। একারণেই যদি কোনো মুসলমান আল্লাহকে সন্তুষ্ট করার নিয়তেও উক্ত স্থানে পশু জবাই করে, তবুও তা হবে মুশরিকদের অনুরূপ কাজ। মুশরিকদের দৃষ্টিতে তাদের পুণ্যময় স্থানের অংশীদার। মুশরিকদের কোন কাজের সঙ্গে বাহ্যিক বা আভ্যন্তরীণ মিল তাদের প্রতি আসক্তিরই নামান্তর। (তাওহীদের মর্মকথা, ৬৬ পৃষ্ঠার টীকা)

মৃতব্যক্তির নামে কোন কিছু জবাই করাও হারাম। মহান আল্লাহ বলেন-

حُرِّمَتْ عَلَيْكُمُ الْمَيْتَةُ وَالدَّمُ وَلَحْمُ الْخِنْزِيْرِ وَمَا أُهِلَّ لِغَيْرِ اللهِ بِهِ

‘তোমাদের জন্য হারাম করা হয়েছে মৃতপ্রাণী, রক্ত, শূকরের গোশত, যেসব জন্তু আল্লাহ ছাড়া অন্যের নামে উৎসর্গ করা হয়’। একটু পরেই বলেন, وَمَا ذُبِحَ عَلَى النُّصُبِ وَأَنْ تَسْتَقْسِمُوْا بِالْأَزْلَامِ ذَلِكُمْ فِسْقٌ ‘যে জন্তু যজ্ঞবেদীতে যবেহ করা হয় এবং যা ভাগ্য নির্ধারক শর দ্বারা বণ্টন করা হয় (তাও হারাম)। এসব পাপ কাজ।’ (সুরা মায়েদা : আয়াত ৩)

এ ব্যাপারে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন-

لَعَنَ اللهُ مَنْ لَعَنَ وَالِدَهُ وَلَعَنَ اللهُ مَنْ ذَبَحَ لِغَيْرِ اللهِ وَلَعَنَ اللهُ مَنْ آوَى مُحْدِثًا وَلَعَنَ اللهُ مَنْ غَيَّرَ مَنَارَ الأَرْضِ

‘(১) যে ব্যক্তি নিজ পিতা-মাতাকে অভিশাপ দেয় তার উপর আল্লাহর লানত (২) যে ব্যক্তি গায়রুল্লাহর উদ্দেশ্যে পশু-প্রাণী জবাই করে তার উপর আল্লাহর লানত (৩) যে ব্যক্তি কোন বিদআতীকে আশ্রয় দেয় তার উপর আল্লাহর লানত (৪) যে ব্যক্তি জমির সীমানা পরিবর্তন করে, তার উপর আল্লাহর লানত।’ (মুসলিম ১৯৭৮; মিশকাত ৪০৭০)

উল্লিখিত বিষয় সমূহ সুস্পষ্ট রূপে শিরকে আকবর, যা থেকে বিরত থাকা একান্ত প্রয়োজন। কেননা আল্লাহ তাআলা শিরকের ব্যাপারে বলেন-

إِنَّ اللهَ لاَ يَغْفِرُ أَنْ يُشْرَكَ بِهِ وَيَغْفِرُ مَا دُوْنَ ذَلِكَ لِمَنْ يَشَاءُ وَمَنْ يُشْرِكْ بِاللهِ فَقَدْ ضَلَّ ضَلاَلاً بَعِيْدًا

‘নিশ্চয়ই আল্লাহ তাআলা শিরকের গুনাহ ক্ষমা করবেন না। তবে অন্যান্য গুনাহ ক্ষমা করতে পারেন। আর যে আল্লাহর সঙ্গে শরিক করে সে সুদূর ভ্রান্তিতে পতিত হয়।’ (সুরা নিসা : আয়াত ১১৬)

অন্যত্র আল্লাহ তাআলা বলেন-

إِنَّهُ مَنْ يُشْرِكْ بِاللهِ فَقَدْ حَرَّمَ اللهُ عَلَيْهِ الْجَنَّةَ وَمَأْوَاهُ النَّارُ وَمَا لِلظَّالِمِيْنَ مِنْ أَنْصَارٍ

‘নিশ্চয়ই যে আল্লাহর সঙ্গে শরিক স্থাপন করে আল্লাহ তাআলা তার জন্য জান্নাত হারাম করে দেন এবং তার আবাসস্থল হয় জাহান্নাম। আর জালিমদের কোনো সাহায্যকারী নেই।’ (সুরা মায়েদা : আয়াত ৭২)

হজরত ইবনে মাসউদ রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন-

مَنْ مَاتَ وَهْوَ يَدْعُو مِنْ دُوْنِ اللهِ نِدًّا دَخَلَ النَّارَ

‘যে ব্যক্তি আল্লাহর সঙ্গে কাউকে শরিক করা অবস্থায় মৃত্যুবরণ করবে সে জাহান্নামে প্রবেশ করবে।’ (বুখারি ৪৪৯৭)

এ কারণেই নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন তোমরা সাতটি জিনিস থেকে বিরত থাকবে। তাহলো-

হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন-

اجْتَنِبُوا السَّبْعَ الْمُوبِقَاتِ قَالُوا يَا رَسُولَ اللهِ وَمَا هُنَّ قَالَ الشِّرْكُ بِاللهِ، وَالسِّحْرُ، وَقَتْلُ النَّفْسِ الَّتِى حَرَّمَ اللهُ إِلاَّ بِالْحَقِّ، وَأَكْلُ الرِّبَا، وَأَكْلُ مَالِ الْيَتِيمِ، وَالتَّوَلِّى يَوْمَ الزَّحْفِ، وَقَذْفُ الْمُحْصَنَاتِ الْمُؤْمِنَاتِ الْغَافِلاَتِ-

‘তোমরা সাতটি ধ্বংসাত্মক জিনিস থেকে বেঁচে থাক। সাহাবায়েকেরাম জিজ্ঞাসা করলেন, হে আল্লাহর রাসুল! ঐ ধ্বংসাত্মক জিনিসগুলো কি? তিনি জবাবে বললেন, (১) ‘আল্লাহর সঙ্গে শিরক করা, (২) যাদু করা, (৩) অন্যায়ভাবে এমন কোন ব্যক্তিকে হত্যা করা, যাকে আল্লাহ হারাম করেছেন, (৪) সুদ খাওয়া, (৫) এতিমের ধন-সম্পদ ভোগ করা, (৬) ধর্মযুদ্ধ কালীন সময়ে (রণক্ষেত্র) থেকে পলায়ন করা, (৭) সতী-সাধ্বী মুমিন নারীদের প্রতি মিথ্যা অপবাদ আরোপ করা।’ (বুখারি ৬৮৫৭; মুসলিম ৮৯)

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে শিরকের ভয়াবহতা থেকে হেফাজত করুন। শিরকের যাবতীয় প্রকার থেকে সতর্ক হয়ে চলার তাওফিক দান করুন। আমিন।