নাটোরের বাগাতিপাড়া উপজেলার দয়ারামপুর ইউনিয়নের জয়ন্তিপুর দাখিল মাদরাসাটি প্রতিষ্ঠার ৪৮ বছরেও এমপিওভুক্ত হয়নি। ফলে বেতন জোটেনি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটিতে কর্মরত শিক্ষক-কর্মচারীদের। বেতন না পেয়ে চাকরির বয়স শেষ হওয়ায় অনেক শিক্ষক গেছেন অবসরে । আবার নতুন শিক্ষক যোগদানও করেছেন। বর্তমানে কর্মরত ১৫ জন শিক্ষক-কর্মচারী বেতন ভাতাদী না পেয়ে পরিবার পরিজন নিয়ে তারা মানবেতর জীবন যাপন করছেন।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সূত্রে জানা যায়, জয়ন্তিপুর দাখিল মাদরাসা ৪৮ বছর পূর্বে ১৯৭৫ সালে স্থাপিত হয়েছে। প্রথমে এটি ফুরকানিয়া মাদরাসা হিসেবে ও পরে এবতেদায়ী এবং সবশেষে দাখিল মাদরাসায় উন্নীত হয়। শর্তপূরনের অংশ হিসেবে প্রতিষ্ঠানের নামে জমি বরাদ্দ, অবকাঠামো নির্মাণ, শিক্ষক নিয়োগ, ছাত্র-ছাত্রী ভর্তি, আসবাবপত্র ও নিয়মিত পাঠদান প্রক্রিয়া চালু থাকলেও বিনা পারিশ্রমিকে শ্রম দিতে হচ্ছে দীর্ঘ দিন থেকে। সবশেষ ২ দফা এমপিওভুক্তির আশা করলেও তালিকায় তাদের নাম আসেনি। শেষবারে আপিল করেছেন এবং শুনানীও শেষ হয়েছে। এখন ফলাফলের অপেক্ষা করছেন প্রতিষ্ঠানটিতে কর্মরত ১৫ জন শিক্ষক-কর্মচারী। এমপিওভুক্ত না হওয়ায় প্রতিষ্ঠানের কর্মরত সকলেই মানবেতর জীবন যাপন করছেন। এর মধ্যে কেউ কেউ মুদি দোকান, টিউশনি করে বা বিকল্প উপায়ে সংসার চালাচ্ছেন।
মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলায় একটি সরকারি কলেজ ও একটি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় রয়েছে। আর বেসরকারী পর্যায়ে ৬৫টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৮টি মাদ্রাসা, ৪৩টি মাধ্যমিক ও ১৪টি কলেজ রয়েছে। এর মধ্যে বেশ কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পূর্নাঙ্গভাবে, কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নিম্ন মাধ্যমিক থেকে উচ্চ স্তর এবং কিছু প্রতিষ্ঠান হাইস্কুল থেকে কলেজে উন্নীত করে এমপিও ভুক্তির অপেক্ষা করছে।
মাদরাসার সুপারিনটেডেন্ট রবিউল ইসলাম বলেন, ৪ যুগ পূর্বে স্থাপিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি থেকে অনেক শিক্ষক অবসরে গেছেন। তাঁরা সারা জীবন বিনা পয়সায় শ্রম দিয়ে খালি হাতে বিদায় নিয়েছেন। একদিন এমপিওভুক্ত হবে এ আশায় বারবারই নতুনভাবে শিক্ষক-কর্মচারী নিয়োগপ্রাপ্ত হয়ে দায়িত্বপালন করেছেন। কিন্তু তাদের কেউ বেতন পাননা।
তিনি আরও বলেন, বেতন না পেয়ে চাকরি করছি বলে নিজেকে অন্যের কাছে উপস্থাপন করাও লজ্জার ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে।