পাবনায় আন্তঃজেলা ডাকাত ও ছিনতাইকারী চক্রের মূলহোতাসহ চার সদস্যকে গ্রেপ্তারর করেছে পুলিশ।
এসময় তাদের কাছ থেকে ছিনতাইয়ের কাজে ব্যবহৃত দুইটি মোটরসাইকেল, একটি পিস্তল, গুলি, ৫টি মোবাইল ফোন, নির্দিষ্ট পোষাক, হ্যান্ড ব্যাগ ও ছিনতাই করা ৩ লাখ ৮৩ হাজার উদ্ধার করা হয়।
পুলিশ জানায়, এদের নেই কোনও স্থানীয় ঠিকানা। বিভিন্ন সময় বিভিন্ন জেলায় বাসা ভাড়া নিয়ে সেই এলাকার বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও বড় বড় ব্যবসায়ীদের টার্গেট করতো এবং তাদের পিছু নিতো।
পরবর্তীতে তারা যখন ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলন করেন তখন কয়েকজন ব্যাংক থেকেই তাদের টার্গেট করে পিছু নিতো এবং রাস্তায় অপেক্ষামান তাদের গ্রুপকে তথ্য প্রদান করতো। এরপরই ওই ব্যবসায়ী বা ব্যক্তি সুবিধামত জায়গায় পৌছালেই প্রথমেই গুলি করে আতঙ্ক সৃষ্টি করে এবং টাকা ছিনতাই করে পালাতো।
মঙ্গলবার (১১ অক্টোবর) বিকেলে পাবনা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান, পুলিশ সুপার (এসপি) আকবর আলী মুন্সী।
এসময় উপস্থিত ছিলেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) মাসুদ আলম, শেখ জিন্নাহ আল মামুন, সদর সার্কেল রোকনুজ্জামান ও গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) ওসি আনোয়ার হোসেন প্রমুখ।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- পাবনা সদরের দক্ষিন মাছিমপুরের ইউসুফ আলীর ছেলে মাসুদ রানা (৩২), গাইবান্ধার সাদুল্যাপুরের রাগোবেন্দ্রপুর (গুচ্ছগ্রাম নালডিংগী) গ্রামের ধুলা মিয়া ওরফে দুলা মিয়ার ছেলে আল আমিন (৩৬), মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার জয়রা (১৫২ জয়রা উপজেলা রোড) এলাকার মৃত আইয়ুব আলী খানের ছেলে ইব্রাহিম খান ওরফে মোর্শেদ খান ওরফে মামা (৪৯) এবং বাগেরহাট জেলার শরনখোলা থানার দক্ষিণ রাজাপুর গ্রামের আবুল হোসেনের ছেলে আব্দুর রহিম (৩২)।
আকবর আলী মুন্সী বলেন, পাবনায় সম্প্রতি কয়েকটি ছিনতাই ঘটনা ঘটে। সবগুলোকে অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে প্রত্যেকটি ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ ও পর্যালোচনা এবং আধুনিক তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে আমরা এই চক্রকে চিহ্নিত করি। পাবনা শহরের বাংলা ক্লিনিকের গলিতে ছদ্ববেশে ভাড়া নেয়া দেলোয়ার বাড়ি থেকে মুল পরিকল্পনাকারী মাসুদ রানাকে গ্রেপ্তার করি।
এরপর তাকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদের পর তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে বাকি আসামিদের ঢাকা, সাভার, আশুলিয়া, গাজিপুর সহ বিভিন্ন স্থান থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরা সবাই আন্তঃজেলা ডাকাত ও ছিনতাই কারিদলের সদস্য।
এসপি আরও জানান, এই সব ঘটনার পরপরই জেলায় নিরাপত্তা আরও বাড়ানো হয়েছে। রাস্তায় চেকপোস্ট বসানো হয়েছে, এগুলো এখন থেকে নিয়মিত থাকবে। এছাড়াও ব্যাংকগুলোতেও সাদা পোশাকে আমাদের গোয়েন্দা সদস্যরা তৎপর থাকবে। আমরা পাবনাবাসীকে নিরাপত্তা দিতে বদ্ধপরিকর।
এসময় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) মাসুদ আলম বলেন, ‘আসামিরা পেশাদার ছিনতাইকারী। তারা দেশের বিভিন্ন জেলায় চুরি,ডাকাতি, ছিনতাই, দস্যুতা, খুন, মাদক ব্যবসা করে থাকে।
গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে মাসুদ রানার বিরুদ্ধে ২টি, আল আমিনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন জেলায় ৬টি, ইব্রাহিমের ৭টি এবং আব্দুর রহিমের বিরুদ্ধে ৪টি মামলা রয়েছে। এই চক্রের আরও দুইজন সদস্য পলাতক রয়েছে তাদেরকেও গ্রেপ্তারের অভিযান অব্যহত রয়েছে।