বেশির ভাগ জমিতে ধানের শীষ দেখা দিয়েছে। কিছু দিন পরে কৃষকের ঘরে ঘরে উঠবে সোনালী ফসল ধান। কৃষক সেই ধান বিক্রি করে মানুষের কাছ থেকে নেওয়া ঋণের টাকা পরিশোধ করে দুই-চার পয়সা লাভের স্বপ্ন দেখে থাকেন। কৃষকদের সেই হটাৎ করে জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলার সোনাপুর,তাতীপাড়া ও ডাঙ্গাপাড়া এলাকার প্রায় অর্ধশতাধিক কৃষকদের এমন স্বপ্ন এখন দুঃস্বপ্নে পরিণত হয়েছে।
সোনাপুর এলাকায় অবস্থিত বিবিসি ইটভাটার নির্গত বিষাক্ত গ্যাস ও কালো ধোঁয়ায় ৭শ’ ব্রয়লার মুরগির মৃত্যু, আমসহ প্রায় শতাধিক বিঘা জমির ধান ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ইটভাটার বিষাক্ত গ্যাস ও কালো ধোঁয়ায় কপাল পুড়েছে স্থানীয় কৃষকদের। ক্ষতি পুশিয়ে নেওয়ার শঙ্কায় আছেন কৃষকরা।
তাতীপাড়া গ্রামের জরিনা বেগম নামে এক বৃদ্ধা মহিলা বলেন, ইটভাটর গ্যাসের কারনে দুই দিনে আমার ফার্মের ৭শ ব্রয়লার মুরগি মারা গেছে। আমরা এর বিচার চাই। সরকারের কাছে আমাদের আকুল আবেদন।
সোনাপুর তাতীপাড়া গ্রামের প্রান্তিক কৃষক জফুর উদ্দীন মন্ডল (৯৫) কান্না জাড়িত কন্ঠে বলেন, ইটভার বিষাক্ত গ্যাসে আমার ৪ বিঘা জমির ধান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ ব্যাপারে ইটভাটার মালিককে বললে তিনি বলেন বিষয়টি পরে দেখা হবে। কৃষি অফিস থেকে লোক এসে পরিদর্শন করে বলেন ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
কৃষক সেলিম মিয়া (২১) বলেন, প্রতি বিঘা ৭ হাজার টাকা দরে অগ্রীম টাকা দিয়ে অন্যের কাছ থেকে ৭ বিঘা জামি নিয়ে ধান চাষাবাদ করেছি। লাভ তো দুরের কথা এখন খরচের টাকা নিয়ে চিন্তিত। ইটভাটার গ্যাসের কারনে আমার মত এলাকার বহু কৃষকের যে ক্ষতি হয়েছে সেই দায়ভার নিবে কে-? সরকার ও স্থানীয় প্রশাসনের কাছে সুষ্ঠ বিচারের দাবি জানাচ্ছি। একই এলাকার কৃষক সাইফুল ইসলাম (৩৫) জাতীয় দৈনিক যায়য়ায়কাল কে বলেন, ইটভাটার বিষাক্ত গ্যাসে এলাকার প্রায় দেড়’শ বিঘা জমির ধান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আমাদের কৃষকের এমন দুঃসময়ে কাউকে পাশে পাচ্ছিনা।
সোনাপুর বিবিসি ইটভাটার স্বত্তাধীকারী আরিফ হোসেন এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমার ইটভাটার কারনেই যে জমির ধান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তা ঠিক নয়। তবে ২০/৩০ বিঘা জমির ধানের কিছু ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের সঙ্গে কথা হয়েছে।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকতার্ কৃষিবিদ লুৎফর রহমান বলেন, সোনাপুর বিবিসি ইটভাটর বিষাক্ত গ্যাসে ৫০/৬০ বিঘা জমির ধানের কিছুটা ক্ষতি হয়েছে। মাঠ পরিদর্শন করে ফসলের ক্ষতির পরিমান যেন বৃদ্ধি না পায় এজন্য স্থানীয় কৃষকদের পরামর্শ প্রদান করা হয়েছে। সেই সঙ্গে কৃষকরা যদি এর ক্ষতিপুরুণ চেয়ে যথাযথা কতৃপক্ষের নিকট আবেদন করে তাহলে কৃষি বিভাগ তাদের সব ধরনের সহযোগিতা করবে।
উপজেলা নিবার্হী অফিসার মো. বরমান হোসেন জাতীয় দৈনিক যায়যায়কাল কে জানান, এ ঘটনায় কৃষকরা অভিযোগ করলে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষথেকে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে এমনি অসহায় কৃষকরা যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সেই দিকে লক্ষ্য রাখা হবে।
রাজশাহীর সময় / এম আর