রাজধানীতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গুলি করে হত্যার অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আরও দুটি হত্যা মামলা করার তথ্য পাওয়া গেছে। ৪ ও ৫ নভেম্বর রাজধানীর উত্তরা পূর্ব ও হাতিরঝিল থানায় মামলা দুটি রেকর্ড হয়েছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে দুই শতাধিক হত্যা মামলা হয়েছে।
পুলিশ ও আদালতসংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, ৫ আগস্টের পর শেখ হাসিনা ছাড়া সর্বাধিক মামলার আসামি হয়েছেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান—১৮৯টি। এরপর সবচেয়ে বেশি মামলা হয়েছে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের (১৫৭টি) বিরুদ্ধে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানসহ বেশ কয়েকজন সাবেক মন্ত্রী, সংসদ সদস্য, সরকারি আমলাসহ বিভিন্ন পেশার শীর্ষ পর্যায়ের অন্তত ৮০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
উত্তরায় গুলি করে হত্যা
রাজধানীর উত্তরায় আলমগীর হোসেন নামের এক ব্যক্তিকে গুলি করে হত্যার অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ৩১ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। বুধবার রাজধানীর উত্তরা পূর্ব থানায় মামলাটি রেকর্ড করা হয়। মামলায় দাবি করা হয়েছে, গত ৫ আগস্ট বেলা ১১টার দিকে উত্তরা পূর্ব থানার আজমপুর এলাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র–জনতার মিছিল চলছিল। মিছিলে অংশ নেন আলমগীর। পরে স্থানীয় আওয়ামী লীগ, যুবলীগের ২০০ থেকে ৩০০ জন মিছিলে গুলি চালান। তখন গুলিবিদ্ধ হন আলমগীর। পরে তাঁকে বাংলাদেশ-কুয়েত মৈত্রী সরকারি হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। মামলায় শেখ হাসিনা ছাড়া ওবায়দুল কাদের, আসাদুজ্জামান খান, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র আতিকুল ইসলাম, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস, ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবির, সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব কবির বিন আনোয়ারকে আসামি করা হয়েছে।
হাতিরঝিলে গুলি করে হত্যা
রাজধানীর হাতিরঝিলে মো. বাবু নামের এক ব্যক্তিকে গুলি করে হত্যার অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ৭৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। ৪ নভেম্বর রাজধানীর হাতিরঝিল থানায় মামলাটি রেকর্ড হয়েছে। মামলার বাদী হলেন মো. বাবুর খালাতো ভাই মো. ইসমাইল হোসেন। মামলায় বলা হয়, গত ১৯ জুলাই বেলা তিনটার দিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার মিছিল চলছিল। মিছিলে অংশ নেন বাবু। একপর্যায়ে পুলিশসহ অন্য আসামিরা ছাত্র-জনতার মিছিলে গুলি ছোড়ে। তখন বাবু গুলিবিদ্ধ হন। পরে তাঁকে স্থানীয় বেটার লাইফ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
মামলায় শেখ হাসিনা ছাড়া ওবায়দুল কাদের, আসাদুজ্জামান খান, সাবেক তথ্য ও যোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্মেদ পলক, সাবেক সংসদ সদস্য প্রাণ গোপাল দত্তসহ অন্যদের আসামি করা হয়।