ঘুমের ধরন আমাদের শরীরের সুস্থতা ও মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলে। চিতঘুম (পিঠের ওপর ঘুমানো) এবং কাতঘুম (একপাশে কাত হয়ে ঘুমানো) এই দুই ধরনের ঘুমের বিভিন্ন উপকারিতা রয়েছে। কোনটি বেশি ভালো তা নির্ভর করে ব্যক্তিগত অভ্যাস, শারীরিক অবস্থা এবং বিশেষ প্রয়োজনে।
চিতঘুমের উপকারিতা
১. মেরুদণ্ডের সঠিক অবস্থান : পিঠের ওপর ঘুমানোর সময় মেরুদণ্ড সোজা থাকে, যা পিঠের ব্যথা কমাতে সহায়ক।
২. শ্বাস-প্রশ্বাসের উন্নতি : চিতঘুম শ্বাস-প্রশ্বাসের ক্ষেত্রে সমস্যা কমিয়ে দেয়, কারণ এই অবস্থানে শ্বাসনালীগুলো অবরুদ্ধ হয় না।
৩. এলার্জি এবং রিফ্লাক্স সমস্যা কমানো : পিঠের ওপর ঘুমালে গ্যাসট্রিক রিফ্লাক্স বা এসিডিটি সমস্যা কমে, কারণ খাবার উল্টে আসার প্রবণতা কম থাকে। এ ছাড়া, সাইনাসের সমস্যা থাকলে চিতঘুম সাহায্য করে।
৪. ব্রণের সমস্যা কমানো : মুখের ত্বক বালিশে ঘষা লাগে না বলে ব্রণ কম হতে পারে।
কাতঘুমের উপকারিতা
১. গর্ভাবস্থায় উপকারী : গর্ভবতী নারীদের জন্য বাম পাশের কাতঘুম সবচেয়ে উপকারী। এতে রক্ত সঞ্চালন ভালো হয় এবং শরীরে রক্তচাপও ঠিক থাকে।
২. ঘুমের সমস্যা কমানো : কাত হয়ে ঘুমানোর ফলে স্লিপ অ্যাপনিয়া বা শ্বাস আটকে যাওয়ার সমস্যা কম হয়।
৩. হজমের উন্নতি : কাত হয়ে ঘুমালে পরিপাক প্রক্রিয়া ভালো হয়, বিশেষ করে বাম পাশের কাতঘুম হজমশক্তি বাড়ায়।
৪. শ্বাসনালী খুলে রাখা : ডান কিংবা বাম পাশে কাত হয়ে ঘুমালে শ্বাসনালী খোলা থাকে, ফলে নাক ডাকার প্রবণতা কমে।
কোনটি শরীরের জন্য ভালো?
যদি মেরুদণ্ড বা পিঠের ব্যথা থাকে, তাহলে চিতঘুম বেশি ভালো। তবে গর্ভাবস্থা, অ্যাসিডিটি, বা শ্বাসের সমস্যার ক্ষেত্রে কাতঘুম বেশি উপকারী। বিশেষজ্ঞরা সাধারণত বাম পাশের কাতঘুমকে সেরা হিসেবে বিবেচনা করেন, কারণ এতে হৃদযন্ত্র ও পরিপাকতন্ত্রের জন্য এটি সুবিধাজনক।
তবে ঘুমের ধরন নির্ধারণে সবার শরীরের আলাদা চাহিদা এবং সমস্যা বিবেচনা করা জরুরি।