০৪ ডিসেম্বর ২০২৪, বুধবার, ০২:২৫:৩২ অপরাহ্ন


আক্কেলপুরে উপজেলা স্যানিটারী ইন্সপেক্টরের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ !
মেজবা উদ্দিন (আক্কেলপুর(জয়পুরহাট) প্রতিনিধি):
  • আপডেট করা হয়েছে : ০৯-০৪-২০২২
আক্কেলপুরে উপজেলা স্যানিটারী ইন্সপেক্টরের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ ! আক্কেলপুরে উপজেলা স্যানিটারী ইন্সপেক্টরের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ !


জয়পুরহাটের আক্কেলপুরে উপজেলা স্যানিটারী ইন্সপেক্টর সামছুন্নাহারের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। তিনি বিভিন্ন সেমাই কারখানা থেকে অর্থ এবং সেমাই উপঢৌকন হিসাবে নিয়ে কারখানা মালিকদের সুবিধা দিয়ে থাকেন এবং উপঢৌকন না দিলে তাদের সাথে খারাপ আচরণ করেন ও কারখানা বন্ধের হুমকি প্রদান করেন বলে জানিয়েছেন এক প্রতিবন্ধি কারখানা মালিক।

জানা গেছে, উপজেলার সোনামুখী ইউনিয়নের কাঁঠালবাড়ি মোড়ে অবস্থিত এক হাত বিহীন শারীরিক প্রতিবন্ধী ওবাইদুল ইসলামের বাঁধন বেকারী ও ফয়সাল লাচ্চা সেমাই নামক কারখানাটি তিনি বিভিন্ন এনজিও থেকে ঋণ গ্রহন ও জমি বিক্রয় করে প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি শারিরীক প্রতিবন্ধী হওয়া সত্বেও প্রতি বছরের ঈদ এবং রমজানকে কেন্দ্র করে জীবিকার তাগিদে নিজে পরিশ্রম করে নিজ কারখানায়  কয়েকজন শ্রমিক নিয়ে সেমাই তৈরি করেন। সেই কারখানায় গিয়ে বিভিন্ন সময় উপঢৌকন এবং টাকায় নেয় উপজেলা স্যানিটারী ইন্সপেক্টর সামছুন্নাহার। কিন্তু টাকা বা উপঢৌকন না দিলে কারখানা অপরিচ্ছন্ন, খাবারে রং ব্যবহার ইত্যাদি কথা বলে কারখানা বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি দেন তিনি। 

ওবাইদুল ইসলাম অভিযোগ করে বলেন, ‘গত কয়েক বছর ধরেই দিনে ও রাতে আমাকে বিরক্ত করে স্যানিটারি ইন্সপেক্টর। পুলিশ নিয়ে এসে হুমকি দেয়। কী সমস্যা? তা জানতে চাইলেও বলেনা। ওনার যে পরিমাণ সেমাই দরকার বাসার জন্য নিয়ে যেতে বলি। আমি প্রতিবন্ধী মানুষ, ব্যবসা করে খাই। গত কয়েক দিন আগেও আমার কাছ থেকে ২২ কেজির এক খাচা লাচ্ছা সেমাই চেয়েছেন। আমি কয়েকদিন পরে দিতে চেয়েছি। গত দুই বছর আগেও আমার কাছ থেকে দুই খাচা সেমাই নিয়ে গেছেন। এবছর সেমাই না দেওয়ায় তিনি এসে আমাকে কাজ করতে দিবেন না সহ বিভিন্ন হুমকি দিচ্ছেন’। 

ওবাইদুলের স্ত্রী শিল্পী কান্না জরিত কন্ঠে সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা গরিব মানুষ,কী করে খাব? আমাদের দুটি বাচ্চা আছে। ওনি প্রতিবারেই এসে আমাদের হুমকি দিয়ে যায়। বাজারের লোকেরা বলে ওনি কেন প্রায় এসে সেমাই নিয়ে যায়। ওনার হুমকির ভয়ে আমরা বলেছি আপনার কাজের দরকার পরলে আমাদের নিয়ে চলেন, আমরা আপনার বাসায় কাজ করে খাব। এর পরেও আসতেই থাকে স্যানিটারি ইন্সপেক্টর। আসলেই সেমাই নিয়ে যায়। আমরা ভয়ে তাকে সেমাই দিয়ে দেই’।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যক্তি বলেন, ‘স্যানিটারী ইন্সপেক্ট সামছুন্নাহারের স্বামীর বাড়ি ও বাবার এই উপজেলায় হওয়াই তিনি প্রভাব খাটিয়ে এমন কার্যকলাপ পরিচালনা করেন’।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা স্যানিটারী ইন্সপেক্ট সামছুন্নাহার বলে, ‘আমার বিরুদ্ধে ষঢ়যন্ত্র চলছে। ওই কারখানায় পরিদর্শনে গিয়ে দেখি তারা সেমাইয়ে কৃত্রিম রং মেশাচ্ছে, অপরিচ্ছন্ন পরিবেশে সেমাই তৈরী এবং শ্রমিকদের অপরিচ্ছন্নতা রয়েছে। বিষয়গুলো নিয়ে তাদের সাথে কথা বললে তারা আমার সাথে খারাপ আচরণ করে। উপঢৌকন বা অর্থ গ্রহন এসবকিছু মিথ্যা’। 

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পঃপঃ কর্মকর্তা ডা. রাধেশ্যাম আগরওয়ালা বলেন, ‘আমি ইতিপূর্বে তার অনেক অনিয়মের অভিযোগ মৌখিকভাবে পেয়েছি। তাকে সাবধান করা হয়েছিল। এ বিষয়ে আমি নিজে ওই প্রতিবন্ধি ওবায়দুলের কারখানা পরিদর্শন করেছি। উপঢৌকন বা অর্থ গ্রহনের বিষয়ে কারখানা মালিকের স্ত্রী শিল্পি বলেছেন। এ বিষয়ে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করা হবে’।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার এস.এম হাবিবুল হাসান বলেন, ‘তার অনিয়মের বিষয়ে খতিয়ে দেখে সত্যতা পেলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে’।

রাজশাহীর সময় / এম আর