কক্সবাজারে কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয় ভাংচুর ও ছাত্রলীগ নেতাকে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে মামলা হয়েছে। ২৪ জুলাই (বুধবার) সন্ধ্যায় কক্সবাজার সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের আহ্বায়ক রাজীবুল ইসলাম মোস্তাক বাদী হয়ে ১০৩ জনের নাম উল্লেখ করে কক্সবাজার সদর মডেল থানায় করা মামলাটি দায়ের করেন।
মামলার এজাহার বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, বিএনপি-জামায়াত ও শিবির নেতাকর্মীদের সঙ্গে আসামি করা হয়েছে আওয়ামী লীগ পরিবারের অনেককে। মামলার ১৭নং আসামি করা হয়েছে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ও জেলা হোটেল শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক এনামুল কবিরকে।
এ ঘটনায় দলীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে বিরাজ করছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। অনেকেই এতে চাপা ক্ষোভ প্রকাশ করছেন। নাশকতার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে কীভাবে শ্রমিক লীগ নেতা এনামুল কবির উল্টো নাশকতা মামলার আসামি হলেন? এ নিয়ে জ্যেষ্ঠ নেতারাও রয়েছেন ধোঁয়াশায়।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ১৬ জুলাই বিকেল ৪টার দিকে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকারীরা বিকেল ৪টায় মিছিল সহকারে কক্সবাজার শহরের লালদীঘি পাড়ে আসে। সেখানে অবস্থিত জেলা আওয়ামী লীগ, জাসদ ও জাতীয় পার্টির কার্যালয় ভাংচুর করে। এ সময় আওয়ামী লীগের কার্যলয়ে থাকা কক্সবাজার সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের আহ্বায়ক রাজীবুল ইসলামকে কুপিয়ে হত্যা চেষ্টা করেন আন্দোলনকারীরা। পরে তাকে সেখান থেকে উদ্ধার করে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়।
প্রতিক্রিয়া জানিয়ে জেলা হোটেল শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক ছাত্রলীগ নেতা এনামুল কবির বলেন, কী আর করব? এ ঘটনায় আমার কী বলার আছে। আসামি হিসেবে আমার নাম দেখে বিস্মিত হয়েছি। মূলত ব্যক্তিগত ক্ষোভ থেকে আমাকে আসামি করা হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে দলের দুঃসময়ে পাশে ছিলাম আমি। যেটি জেলা আওয়ামী লীগ অবগত। দুঃসময়ের কর্মী হয়ে আজ নিজ দলের কর্মীর করা মামলায় আমি ঘর ছাড়া।
ক্ষোভ জানিয়ে জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ও নাশকতা প্রতিরোধ কমিটির সদস্য শহিদুল হক সোহেল বলেন, এনামুল কবির ছাত্রলীগের দুঃসময়ের কর্মী। সে আমার সাথে রাজনীতি করে এবং সে আমার নিকটতম আত্মীয়। কেউ শত্রুতা করে এজাহারে নাম দিয়েছে। এটি নিয়ে জেলা আওয়ামী লীগের অনুষ্ঠানে মাননীয় হুইপ এমপি কমল ভাই ক্ষোভ প্রকাশ করেন এবং চার্জশিট থেকে বাদ দেওয়ার কথা জানান।
জেলা হোটেল শ্রমিক লীগের সভাপতি রুহুল কাদের মানিক বলেন, শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক এনামকে ষড়যন্ত্রমূলক মামলা থেকে নিষ্কৃতি দানের আহ্বান জানাচ্ছি। যেদিন এই ঘটনা হয় আন্দোকারীদের প্রতিরোধ করতে জেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ও কক্সবাজার ৩ আসনের সাংসদ ও মাননীয় হুইপসহ আমি ও এনাম উপস্থিত ছিলাম। কিন্তু দুই দিন পর জানতে পারলাম এনাম মামলার আসামি।
এই বিষয়ে কক্সবাজার সদর মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রকিবুজ্জামান বলেন, সুষ্ঠু তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।