নাটোরের সিংড়া উপজেলার বিনগ্রাম স্কুল মাঠে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের একটি অনুষ্ঠানে প্রকাশ্যে অশ্লীল নৃত্য পরিবেশন করার ঘটনায় রামানন্দ খাজুরা ইউপির ৯ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি সহ ৪ জন এবং বিনগ্রাম সরকারী প্রাথমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্কুলে প্রধান শিক্ষককে দায়ি করে শোকজ করেছেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। দুই প্রতিষ্ঠানের দুই প্রধানকে তিন দিনের শোকজ করেছে সংশ্লিষ্ট শিক্ষা অফিস এবং বাকি ৪ জনকে ৭ দিনের শোকজ করেছে রামানন্দ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ।
স্থানীয় সুত্রে জানা যায়, সোমবার (২৮ মার্চ) দিবাগত রাতে স্কুল মাঠে এই সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে বিনগ্রাম উচ্চ বিদ্যালয়, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও স্থানীয় প্রভাত কাকুলী নামের একটি সমিতি। পরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভিডিও'টি ভাইরাল হলে ব্যাপক সমালোচনা ও প্রতিবাদের ঝড় উঠে।
ভাইরাল হওয়া ভিডিও'তে দেখা যায়, অনুষ্ঠানে জিন্স প্যান্ট ও শার্ট পরিহিত একটি মহিলা আপত্তিকর ও অশ্লীল নৃত্য পরিবেশন করছে। এ সময় উর্ত্তী বয়সের যুবকেরা তার হাতে টাকা দিয়ে নাচানাচি করছে। আবার অনেকে মঞ্চে উঠে ওই মহিলার সাথে হেলে-দুলে নাচানাচির পাশাপাশি তার মাথায় টাকা ছিটিয়ে দিচ্ছে। ভিডিও'টি এলাকায় যেন এখন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে দাঁড়িয়েছে। অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ত্ব করেন স্থানীয় ৯ নম্বর ওয়ার্ড আ.লীগের সভাপতি দেলোয়ার হোসেন দেলু।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক গ্রামবাসীরা জানান, স্বাধীনতার সূবর্ণজয়ন্তী অনুষ্ঠানে এমন আপত্তিকর ও অশ্লীল নৃত্য পরিবেশন খুবই দুঃখজনক। আর স্থানীয় প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে এ ধরণের আপত্তিকর নৃত্য এটা শিক্ষার্থীদের মাঝে প্রভাব ফেলেছে।
অনুষ্ঠানের আয়োজক প্রভাত কাকুলী সমিতির সভাপতি ইউনুছ খান বলেন, অনুষ্ঠানের আয়োজন তার সমিতি হলেও এ বিষয়ে তিনি জড়িত নন।
এ বিষয়ে অনুষ্ঠানের সভাপতি আ.লীগ নেতা দেলোয়ার হোসেন দেলু বলেন, যা ঘটেছে আমার অনুপস্থিতিতে ঘটেছে। আমি শুধু খেলাধুলা অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেছি। আর নাচ-গানের সাথে আমি জড়িত নই। তবে শুনেছি গ্রামের কিছু ছেলে-পেলেরা এটা করেছে।
এ বিষয়ে বিনগ্রাম উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবদুল কুদ্দুস বলেন, আমরা ছেলে-মেয়েদের খেলাধুলা শেষ করে বাড়ি চলে এসেছি। আর শিক্ষকদের অনুপস্থিতিতে এ ধরণের নাচ-গানের আয়োজন করা হয়েছে। স্কুলের কোন শিক্ষক এখানে জড়িত নয়।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আমিনুর রহমান বলেন, স্কুলে অশ্লীল নৃত্যের ঘটনায় স্কুলের প্রধান শিক্ষক ও সভাপতিকে শোকজ করা হয়েছে। আগামী তিনদিনের মধ্যে জবাব দিতে বলা হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এম এম সামিরুল ইসলাম বলেন, স্কুল মাঠে এই ধরণের নাচ-গানের পরিবেশ খুবই দুঃখজনক। এ ঘটনায় স্কুলের সভাপতি ও প্রধান শিক্ষককে শোকজ করা হয়েছে।
রাজশাহীর সময় / এএইচ