বিশ্বব্যাপী মৃত্যুর অন্যতম প্রধান কারণ ক্যান্সার। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, হঠাত্ করে ক্যান্সারের প্রকোপ বেড়ে গিয়েছে শুধুমাত্র আমাদের অস্বাস্থ্যকর জীবনধারা এবং খাদ্যাভাসের কারণে। প্যাকেটজাত খাবার, প্রসেসড ফুড, ভেজাল খাবারের চল দিন দিন বেড়েই চলেছে। আর সেটাই ক্যান্সারের মূল কারণ হয়ে উঠেছে।
শরীর সুস্থ রাখতে সুষম খাবার খাওয়া জরুরি। শাকসব্জি, ফলমূল বেশি করে খাওয়ার কথা বলেন চিকিত্সকরা। কিন্তু ভাজাভুজি, প্রসেসড খাবারের প্রতিই অধিকাংশের ঝোঁক বেশি। এর ফল ক্যান্সার। হ্যাঁ, বেশ কয়েকটি খাবারের অভ্যাসই কিন্তু জীবনে ঘটাতে পারে ছন্দোপতন। ডেকে আনতে পারে ক্যান্সারের মতো মারণ রোগ। তাই সময় থাকতে রোজকার ডায়েট থেকে বাদ দিন বেশ কিছু খাবার।
প্রক্রিয়াজাত মাংস: মাংস ঠিক ভাবে রান্না করা হলে তা শরীরের জন্য ভীষণই উপকারী। কিন্তু মাংস যখন প্রসেস করা হয়, তখন তা শরীরের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকারক। প্রসেসড মিট বা প্রক্রিয়াজাত মাংস বেশি খেলে পেটে ক্যানসার হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে। মাংস থেকে বেকন, সসেজ, হট ডগস তৈরি করার সময়ে তা বিভিন্ন প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে যায়, নানা রকম রাসায়নিক যোগ করতে হয় তাতে। যা মলাশয়ের ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়। তাই এই সব খাবার কম খাওয়াই স্বাস্থ্যের জন্য ভালো।
রেড মিট: গবেষণা বলছে, রেড মিট বা লাল মাংস বেশি খেলে তাও স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকর। বিশেষ করে উচ্চ তাপমাত্রায় রান্না করা রেড মিট খেলে (গ্রিল করা বা আগুনে ঝলসানো) তা মলাশয়ের ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়।
ভাজাভুজি: ডিপ ফ্রায়েড খাবারের মধ্যে কার্সিনোজেনিক যৌগ থাকতে পারে। ফলে নিয়মিত ভাজা খাবার খেলেও কিন্তু ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে।
মিষ্টি পানীয়: চিনি দেওয়া পানীয় নিয়মিত খেতে থাকলে তাতে কিন্তু স্থূলত্বের সমস্যা বাড়তে পারে। দীর্ঘ দিন ধরে স্থূলত্বের সমস্যা বিভিন্ন ধরনের ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বাড়িয়ে দেয়।
মদ: অত্যধিক মদ্যপানের ফলে বিভিন্ন ধরনের ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি থাকে। খাদ্যনালির ক্যান্সার তো বটেই, এ ছাড়াও লিভার, ব্রেস্ট ক্যান্সার হতে পারে।
পরিশোধিত খাবার: সাদা তেলে ভাজা ময়দার লুচি কার না ভালো লাগে! কিন্তু ময়দা ও সাদা তেল দু'টিই পরিশোধিত বা রিফাইন্ড হওয়ায়, তা ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ায়। এই ধরনের খাবার বেশি খেলে স্তন ক্যান্সার ও ডিম্বাশয়ে ক্যান্সার হওয়ার আশঙ্কা থেকে যায়। তাই যতটা সম্ভব এই ধরনের খাবার খাওয়া কমান।
প্যাকেটজাত খাবার: খিদে পেলে চটজলদি ইনস্ট্যান্ট নুডলস বানিয়ে খেয়ে নিই আমরা। ইডলি, উপমা, পাস্তা সবই এখন ইনস্ট্যান্ট বানানো সম্ভব। এই রকম চটজলদি খাবারে ছেয়ে গিয়েছে বাজার। তবে এই ধরনের প্যাকেটজাত খাবারে বিসফেনল নামে এক ধরনের রাসায়নিক থাকে। নিয়মিত এই সব ইনস্ট্যান্ট খাবার শরীরে গেলে তা থেকে ক্যান্সার হতে পারে।