নাটোরে ওয়ার্ড যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. মিঠুন আলীর ডান হাতের কবজি বিচ্ছিন্ন করার ঘটনায় জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. শরিফুল ইসলাম রমজান ও জেলা আওয়ামী লীগের শীর্ষ তিন নেতাকে প্রধান আসামি করে ৩০ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরো ১০ জনের নামে নাটোর থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। এ ঘটনায় পুলিশ অভিযুক্ত পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে। সোমবার (২৪ জুলাই) দিবাগত রাত ১২টার দিকে আহত মিঠুর ভাই স্বপ্ন বাদশা বাদী হয়ে নাটোর সদর থানায় এ মামলা দায়ের করেন। নাটোর সদর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সাজ্জাদ হোসেইন মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
অভিযুক্ত আসামিরা হলেন- জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. শরিফুল ইসলাম রমজান (৫০), জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোর্তজা আলী বাবলু (৬০), নাটোর পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি মোস্তাক আলী মুকুল (৫২), মো. সোহাগ (২৭), মো. নান্নু শেখ (৫০), মো. আশরাফ (৫০), রিপন (২৮), সাব্বির (২৮), মাহতাব (২৭), তোতা (১৬), আলম (৪৫), সাইফুল (৪০), নাহিদ (৪৫), জীবন (৩২), শরীফ (৩৫), শুভ (২২), তরিকুল (২৮), আশা (৩২), ঈমন (২৭), জিহাদ (২৭), অনন্য (২৮), সিজু (২৭) সাব্বির (২৯), হাসান (৩০), জনি (৩৫), ওবায়দুল সরদার (৪০), রুমন (২৬), মহসিন (৩১), নাসির (২৭) এবং সেন্টুসহ অজ্ঞাত আরো ৮-১০ জন আসামি করে মামলা দায়ের করেন।
এর আগে গতকাল সোমবার (২৪ জুলাই) বিকেলে এ ঘটনায় দোষীদের গ্রেপ্তার ও তাদের শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল এবং প্রতিবাদ সমাবেশ করেছেন জেলা যুবলীগের নেতাকর্মীরা। জেলা যুবলীগের সভাপতি বাশিরুর রহমান খান চৌধুরীর (এহিয়া) নেতৃত্বে এ প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সাবেক কাউন্সিলর ও আওয়ামী লীগ নেতা নান্নু শেখ এবং ওয়ার্ড যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মিঠুন আলীর সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল।
এ বিরোধে গত ১৬ এপ্রিল যুবলীগ নেতা মিঠুনসহ তার সমর্থকরা সাবেক কাউন্সিলর নান্নু শেখকে কুপিয়ে জখম করেন। এর পর থেকেই এলাকায় দুই গ্রুপের মধ্যে উত্তেজনা চলছিল। রবিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে মিঠুনসহ তার সমর্থকরা বলারীপাড়া এলাকা দিয়ে যাওয়ার সময় রাজার পুকুর পাড়ে মুখোশ পরা অবস্থায় ২০-২৫ জন যুবক মিঠুনের ওপর হামলা করে। ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে তার হাতের কবজি কেটে দেয়।
এ সময় মিঠুনকে বাঁচাতে গেলে মিঠুনের সমর্থক আরমান আলী, আব্দুল্লাহ আল রাব্বি ও বকুল মিয়াসহ চারজন আহত হন। এসময় মিঠুন আলীকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় উদ্ধার করে নাটোর আধুনিক সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকার লালমাটিয়ায় সিটি হাসপাতালের নেওয়া হয়।
এ বিষয়ে শরিফুল ইসলাম রমজান বলেন, এটি একটি পরিকল্পিত মিথ্যা মামলা। বর্তমান এমপি শফিকুল ইসলাম শিমুলের মদদপুষ্ট হয়ে নাটোরে আওয়ামী লীগের রাজনীতিকে দুর্বল ও তার অবস্থান সুসংসহত করার লক্ষ্যে জেলা আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। তিনি এ ঘটনা সম্পর্কে কিছুই জানতেন না।
নাটোর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, এ ঘটনায় পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।