১৯ মে ২০২৪, রবিবার, ০৩:০০:৫৮ অপরাহ্ন


রাজশাহীতে বৃষ্টিহীন শ্রাবণে চৈত্রের খরা পাট জাগ দেওয়া নিয়ে দুশ্চিন্তায় কৃষক
মঈন উদ্দিন
  • আপডেট করা হয়েছে : ২৪-০৭-২০২৩
রাজশাহীতে বৃষ্টিহীন শ্রাবণে চৈত্রের খরা পাট জাগ দেওয়া নিয়ে দুশ্চিন্তায় কৃষক রাজশাহীতে বৃষ্টিহীন শ্রাবণে চৈত্রের খরা পাট জাগ দেওয়া নিয়ে দুশ্চিন্তায় কৃষক


চলতি বর্ষাকালে রাজশাহী অঞ্চলে কাঙ্খিত বৃষ্টির দেখা মেলেনি। পহেলা শ্রাবণে এক পশলা বৃষ্টির পর কদিন ধরে আবারো রুক্ষ আবহাওয়া। পুকুর-পুষ্কুনিকেতে পানি না থাকায় মাঠে পাট কাটার উপযোগী হলেও জাগ দেওয়ার পানির অভাবে পাট কাটার সাহস পাচ্ছে না কৃষক। এসব নিয়ে চরম অস্বস্তির মধ্যে রয়েছে এ অঞ্চলের কৃষক ।

কৃষি অফিস ও কৃষক সুত্রে জানাগেছে, গত দুবছর ধরে পাটের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় এবার রাজশাহীতে বেড়েছে পাটের চাষ। গত বছরের তুলনায় এবার জেলায় পাট চাষ বেড়েছে ৪৪২ হেক্টর জমিতে। তবে এবছর বৃষ্টিপাত কম হওয়ায় পাট জাগ দেওয়া নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন চাষীরা। একই অবস্থা আমন ধান চাষের ক্ষেত্রেও। অনাবৃষ্টির কারণে পাট ও ধান নিয়ে উভয় সংকট সৃষ্টি হয়েছে।

কৃষি বিভাগ বলছে, এখনও পাট কাটা শুরু হয়নি। কিছুদিনের মধ্যে পুরোদমে পাট কাটা শুরু হবে। তবে গত বছর পাটের দাম ভালো পাওয়ায় এবছর চাষের পরিমাণ বেড়েছে।

রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, গত বছর রাজশাহী জেলায় পাট চাষ হয়েছিলো ১৯ হাজার ১৫৮ হেক্টর জমিতে। এবছর রাজশাহী জেলায় পাটের চাষ হয়েছে ১৯ হাজার ৬০০ হেক্টর জমিতে। এবার সবচেয়ে বেশী পবায় ২ হাজার ২৬৫ হেক্টর জমিতে পাটের চাষাবাদ হয়েছে। মাঠে মাঠে এখন পাট কাটার উপযোগী হয়েচে। তবে জাগ দেওয়ার মত পানি না থাকায় এখনো পাট কাটার সাহস পাচ্ছেন না কৃষক।

জেলার পবা উপজেলার কয়েকজন পাটচাষি বলেন, গত বছ তিনি পাচ চাষ করে ভালো দামও পেয়েছিলেন। তাই এবছর তারা অধিক পরিমাণ জমিতে পাট চাষ করেছেন। পাটের আবাদও ভালো হয়েছে। এখনও পাট কাটা শুরু করেনি। কারণ হিসেবে তারা বলেন পাট জাগ দেওয়ার মত পানি নেই। তারা বলেন, পাটের আবাদ ভালো হয়েছে। পাট কাটারও সময় হয়েছে। অনেকেই পাট কেটেছে। কিন্তু খালবিলে পানি নেই। তাই অনেকেই পাট কাটতে পারছে না।

স্থানীয় পাট ব্যবসায়ীরা জানান, এবছর রাজশাহীতে বৃষ্টিপাত কম হওয়ার কারণে পুকুর, খালে পানি নেই। তাই পাট কাটতে পারছেন না কৃষকরা। তবে নীচু এলাকাগুলোর পাটের জমিতে পানি জমেছে। সেগুলো কেটে সেখানেই জাগ দিচ্ছেন অনেকে।

তারা আরও জানান, কয়েক বছর থেকে পাটের ভালো দাম পাচ্ছেন চাষীরা। গত বছর অনেক চাষি মৌসুমের শেষে পাট বিক্রি করেন। ফলে তুলনামূলক ভালো দাম পেয়েছেন। রাজশাহীতে সরকারি পাটকল বন্ধ থাকলেও বেসরকারি বেশ কয়েকটি পাটকল রয়েছে। এই পাটকলগুলোর প্রতিনিধিরা পাট কিনে থাকেন। এছাড়া বেশির ভাগ পাট রাজশাহীর বাইরে চলে যায়।

রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক মোজদার হোসেন বলেন, রাজশাহীতে গত বছরের চেয়ে পাট চাষ বেড়েছে। বৃষ্টিপাত কম হওয়ার কারণে এখনও রাজশাহীতে সেইভাবে পাট কাটা শুরু হয়নি। আশা করা হচ্ছে বৃষ্টিপাত হওয়া সাপেক্ষ আগামী ১৫-২০ দিনের মধ্যে পুরোদমে পাট কাটা শুরু হবে।

রাজশাহী আবহাওয়া অফিস জানায়, এখন বর্ষা মৌসুম। ইতিমধ্যে আষাঢ় শেষ হয়ে শ্রাবনের প্রথম সপ্তাহ চলছে। আশানুরূপ বৃষ্টিপাত হয়নি। এই বছর তুলনামূলক রাজশাহীতে বৃষ্টিপাত কম হয়েছে। বৃষ্টিপাতের সময় এখন ওআছে। তিনি বলেন, আশা করা যাচ্ছে চলতি শ্রাবণে এবার কাঙ্খিত বৃষ্টিপাত হবে।