ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার আচারগাঁও ইউনিয়নের গারুয়া গ্রামের পাশ দিয়ে বয়ে গেছে নরসুন্দা নদী। বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টায় ৬ শিশু-কিশোর একটি কলাগাছের ভেলা নিয়ে নদীতে নামে। তারা তাদের আনন্দের পাশাপাশি গোসল করার উদ্দেশ্যে নামলেও পানির নিচে তাদের জন্য এক ভয়াবহ মরণফাঁদ অপেক্ষা করছিল। সেই ফাঁদে জড়িয়ে ৬ জনের মাঝে ৪ জন বেঁচে ফিরলেও দুজন মারা গেছে।
নদীর তলদেশে পানির স্রোত আটকে একটি ভীম জাল স্থাপন করেছিল আলিমুদ্দিন নামে এক ব্যক্তি। পানির নিচে থাকায় কিশোরের দল তা টের পায়নি এবং সেই জালে জড়িয়েই সলিল সমাধি হয় দুই কিশোরের। তাদের একজন সোহাগ মিয়া (১৪) এবং আরেকজন কামরুল ইসলাম (১৩)। তারা দুজনই গারুয়া গ্রামের বাসিন্দা এবং দুজনই গারুয়া এবতেদায়ী মাদ্রাসার শিক্ষার্থী ছিল। এ ঘটনার পর থেকে জাল স্থাপনকারী আলিমুদ্দিন পলাতক রয়েছে।
স্থানীয়রা জানায়, কিশোর বাচ্চাগুলো গোসলে নেমে ভীম জালে আটকে পানিতে তলিয়ে যেতে থাকে। এসময় তাদের দাপাদাপি ও চিৎকার শুনে কয়েকজন যুবক এগিয়ে এলে ৪ জনকে উদ্ধার করতে পারলেও প্রবল স্রোত থাকায় দুজনকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। পরে পুলিশ এবং ফায়ার সার্ভিসকে খবর দেয়া হলে ফায়ার সার্ভিসের বিশেষ ডুবুরি দল গিয়ে বিকেল সাড়ে ৫টায় দুজনকে মৃত অবস্থায় উদ্ধার করে।
নান্দাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রাশেদুজ্জামান রাশেদ জানান, খবর পেয়ে ডুবুরিদের সহায়তায় দুই কিশোরের মরদেহ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যেই লাশগুলো হস্তান্তর করার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন। তবে এখন পর্যন্ত কোনো অভিযোগ বা মামলা দায়ের হয়নি। নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা হলে পুলিশ অভিযানে নামবে। তবে মাছ ধরার এ বিশেষ জালের ব্যবহার বন্ধে উপজেলা প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় করে শিগগিরই বিশেষ অভিযান পরিচালনা কথা জানান তিনি।