মোহাম্মদ নবী-নাজিবুল্লাহ জাদরান জুটিতে ভালো পুঁজির স্বপ্ন দেখছিল আফগানিস্তান। কিন্তু তাসকিন আহমেদের আঘাতে বেশি দূর যেতে পারেনি এই জুটি। পরে সাকিবও উইকেট উৎসবে যোগ দেওয়ায় ২১৫ রানেই থেমেছে আফগানিস্তানের ইনিংস। ফলে সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে বাংলাদেশের সামনে লক্ষ্য ২১৬ রান।
চট্টগ্রামে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নামা আফগানিস্তান শুরুতেই হারিয়ে বসে উইকেট। বেশি আক্রমণাত্মক হতে গিয়ে তৃতীয় ওভারে মোস্তাফিজের শিকারে পরিণত হন আফগান ওপেনার রাহমানুল্লাহ গুরবাজ। ডাউন দ্য উইকেটে এসে মিডউইকেটে উড়িয়ে মারার চেষ্টা করেছিলেন। বল জমা পড়েছে তামিম ইকবালের হাতে। তাতে ১৪ বল খেলা এই ওপেনার ফিরেছেন ৭ রানে।
তাসকিনের দ্বিতীয় ওভারেও রাহমানুল্লাহ গুরবাজের ক্যাচ উঠেছিল। কিন্তু সুযোগ কঠিন হওয়ায় হাতে জমাতে পারেননি আফিফ। তাসকিনের ষষ্ঠ ওভারে আরও একটি উইকেট পড়তে পারতো আফগানিস্তানের। শর্ট বলে পুল করেছিলেন নতুন নামা ইব্রাহিম জাদরান। কিন্তু ডিপ স্কয়ার লেগে তার ক্যাচ ফেলে দিয়েছেন মাহমুদউল্লাহ!
‘জীবন’ পেয়ে পরে জুটি গড়ার দিকে মনোযোগ দেন ইব্রাহিম। প্রাথমিক ধাক্কা সামালও দেওয়া হয় তাতে। রহমতকে সঙ্গে নিয়ে যোগ করেন ৪৫ রান। ১৪তম ওভারে এসে এই জুটিতে আঘাত হেনেছেন শরিফুল। তার বলে ইব্রাহিম স্লিপে ক্যাচ দিয়ে ফিরেছেন। একবার জীবন পাওয়া এই আফগান ব্যাটার সাজঘরে ফেরার আগে করেছেন ১৯ রান। তাতে ছিল ১টি চার ও ১টি ছয়।
তার পরেও রহমত ঢিমেতালে প্রান্ত আগলে ছন্দ ধরে রাখার চেষ্টায় ছিলেন। কিন্তু দ্বিতীয় স্পেলে বোলিং করতে এসে রহমতকে আর থিতু হতে দেননি তাসকিন। দারুণ এক বাউন্সারে মুশফিকের ক্যাচ বানিয়েছেন। ফলে ৬৯ বলে ৩৪ রানে শেষ হয় আফগান ব্যাটারের ইনিংস। রহমতের ইনিংসে ছিল ৩টি চারের মার। অবশ্য তার বিদায়ের পর ছন্দ পতন ঘটে ইনিংসের। দ্রুত সাজঘরে ফিরে যান অধিনায়ক হাশমতউল্লাহও। মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের বলে কটবিহাইন্ড হওয়ায় ২৮ রানে শেষ হয় তার ইনিংস।
হঠাৎ চাপে পড়ে যাওয়া পরিস্থিতিতে দলকে উদ্ধার করে মূলত মোহাম্মদ নবী ও নাজিবুল্লাহ জুটি। নবী রয়ে সয়ে খেললেও আগ্রাসী ছিলেন জাদরান। এই জুটি ভালো স্কোরের স্বপ্নও দেখাচ্ছিল। কিন্তু নবীকে মুশফিকের গ্লাভসবন্দি করিয়ে মাথা ব্যথা দূর করেছেন তাসকিন। তার পরেও হাল ছেড়ে দেননি নাজিবুল্লাহ। গুলবাদিনকে সঙ্গে নিয়ে হাফসেঞ্চুরি তুলে নিয়েছেন। জুটি গড়ারও চেষ্টায় ছিলেন তারা। কিন্তু বেশিরভাগ সময় খরুচে থাকা সাকিবের বোলিংয়েই সাজঘরে ফিরিয়েছে নাইবকে (১৭)। একই ওভারে রশিদ খানকে বোল্ড করে আফগান ইনিংসের রুপই পাল্টে দেন বামহাতি অলরাউন্ডার! ঝটপট ফিরে যান মুজিব উর রহমানও। মোস্তাফিজুর রহমানের বল বুঝতেই পারেননি তিনি। এমন সময়ে স্কোর ছিল ৮ উইকেটে ১৯৫। সঙ্গীদের আসা-যাওয়ার মিছিলে নাজিবুল্লাহও বেশি দূর যেতে পারেননি। শরিফুলের বলে ক্যাচ তুলে দিয়েছেন। তবে ফেরার আগে স্কোর দুইশো অতিক্রম করেছে তারই কল্যাণে। আফগান ইনিংসের সর্বোচ্চ স্কোরার নাজিবুল্লাহ ৮৪ বলে করেছেন ৬৭ রান। তাতে ছিল ৪টি চার ও ২টি ছয়। তার বিদায়ের পর পরই ৪৯.১ ওভারে ২১৫ রানে গুটিয়ে যায় আফগানিস্তানের ইনিংস।
রাজশাহীর সময় /এএইচ