মেয়েদের জননতন্ত্রের নানা সমস্যা ইদানীং কালে যেন ঘরে ঘরে বাড়ছে। এর ফলে শারীরিক অসুস্থতা তো বটেই, সেই সঙ্গে বড় সমস্যা হয়ে উঠছে বন্ধ্যত্ব। বহু দম্পতি ভুগছেন গর্ভধারণ না করতে পারার সমস্যায়। শুধু মহিলারা নয়, পুরুষজনিত বন্ধ্যত্বও চিন্তার কারণ হয়ে উঠেছে। দৈনন্দিন জীবনযাত্রায় নানা অনিয়মে স্পার্ম কাউন্ট কমছে, ইরেকটাইল ডিসফাংশনের সমস্যায় ভুগছেন পুরুষরা।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার রিপোর্ট বলছেন, বিশ্বে প্রতি ৬ জনের মধ্যে অন্তত ১ জন বন্ধ্যত্বের সমস্যায় ভুগছেন। হু-এর রিপোর্টে বলা হয়েছে, ১৯৯০ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত ১৭.৫ শতাংশ সন্তানধারণ করতে পারেননি।
হু-র মতে বন্ধ্যত্ব একটি রোগ। মহিলা, পুরুষ নির্বিশেষে যে কেউ এর সম্মুখীন হতে পারে। মেয়েদের তুলনায় এখন বন্ধ্যত্বের সমস্যা বেশি দেখা যাচ্ছে পুরুষদের। ৫০ শতাংশ বন্ধ্যত্বের কারণ মেল-ইনফার্টিলিটি ফ্যাক্টর। মহিলাদের পেলভিক ইলফ্ল্যামেটরি ডিজিজ বা পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোমের কারণে বন্ধ্যত্ব আসতে পারে। তার চিকিৎসা আছে, সঠিক থেরাপিতে সারিয়ে তোলা যায়। কিন্তু পুরুষজনিত বন্ধ্যত্ব নানা কারণে অবহেলিত থেকে যায়। সঙ্কোচ, লজ্জা, মেল ইগো ইত্যাদি নানা কারণে রোগ লুকিয়ে যাওয়ার প্রবণতা মেল ইনফার্টিলিটি বা পুরুষজনিত বন্ধ্যত্বের প্রধান কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। অথচ এখন বন্ধ্যত্বের চিকিৎসা অনেক উন্নত।
সমীক্ষায় দেখা গেছে, পুরুষদের শুক্রাণুর সংখ্যা উদ্বেগজনকভাবে কমতে শুরু করেছে। তার মধ্যে পশ্চিমবঙ্গও রয়েছে। সমীক্ষা বলছে, ২০১৮ থেকে ২০২১ সাল অবধি এ রাজ্যেরই অনেক দম্পতি বন্ধ্যত্বের সমস্যা নিয়ে ডাক্তার দেখিয়েছেন। গবেষণায় দেখা যাচ্ছে, যেভাবে জীবনযাপনে অসংযম, নেশার প্রকোপ ও নানাবিধ অসুখবিসুখ বাড়ছে তাতে এ রাজ্যেরই ৮৬ শতাংশ পুরুষের বন্ধ্যত্বের ঝুঁকি রয়েছে।
৬৪ হাজারের বেশি দম্পতির ওপরে পরীক্ষা করা হয়েছে। দেখা গেছে, এদের মধ্যে ২ হাজারের বেশি দম্পতি সন্তানের জন্য ইনভিট্রো-ফার্টিলাইজেশনের (আইভিএফ) সাহায্য নিয়েছেন। এই বছরই জানুয়ারি থেকে অক্টোবর অবধি বিভিন্ন ফার্টিলিটি ক্লিনিকের সমীক্ষায় ধরা পড়েছে, স্পার্ম কাউন্ট কমছে পুরুষদের। ইরেকটাইল ডিসফাংশনের সমস্যাতেও ভুগছেন অনেকে।