একাদশ শ্রেণিতে এবার সাত লাখ আসন ফাঁকা থাকবে। কারণ হিসেবে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আসনের তুলনায় পাস করেছে কম শিক্ষার্থী। তাই নতুন কলেজকে পাঠদানের অনুমতি দেয়ার আগে প্রয়োজনীয়তা যাচাইয়ের পরামর্শ দিয়ে শিক্ষাবিদরা বলছেন, বছর বছর আসন বাড়ানোর পরিবর্তে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মান বাড়ানোই বড় চ্যালেঞ্জ। আর আন্তঃ শিক্ষা বোর্ড বলছে, কোনো প্রতিষ্ঠান পরপর তিন বছর শিক্ষার্থীশূন্য থাকলে বাতিল হবে পাঠদানের অনুমতি।
নভেম্বরে প্রকাশিত চলতি বছরের এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় পাস করে ১৭ লাখ ৪৩ হাজার ৬১৯ শিক্ষার্থী। অন্যদিকে ৯টি সাধারণ, কারিগরি ও মাদ্রাসা বোর্ড মিলিয়ে একাদশ শ্রেণিতে মোট আসনসংখ্যা ২৫ লাখ ৩০ হাজার ৩০৩টি। তাই এবার ভর্তিতে হবে না আসনসংকট। মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ও নাতি-নাতনির জন্য ৫ শতাংশ, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সন্তানদের জন্য ২ শতাংশ কোটা ছাড়া ৯৩ শতাংশ আসনে মেধার ভিত্তিতে ভর্তি করা হলেও খালি থাকবে ৭ লাখ আসন।
গত বছরও ১৩১টি কলেজ একজন শিক্ষার্থীও পায়নি। সব মিলিয়ে শূন্য ছিল কয়েক লাখ আসন। তাই নতুন কোনো কলেজকে পাঠদানের অনুমতি দেয়ার আগে প্রয়োজনীয়তা যাচাইয়ের পরামর্শ দিয়েছেন শিক্ষাবিদরা। তারা বলছেন, আসন বাড়ানোর পরিবর্তে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মান, শিক্ষকদের দক্ষতা ও অবকাঠামোগত উন্নয়নই বড় চ্যালেঞ্জ।
শিক্ষাবিদ অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, দেশে ১৭ লাখ শিক্ষার্থী ভর্তি হবে না। যদি ১৭ লাখ ভর্তি হওয়ার পরও আসন ফাঁকা থাকে, তাহলে বোঝা যাচ্ছে এখানে পরিকল্পনার অভাব ছিল। কেন যাচাই-বাচাই না করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান অনুমোদন করা হলো। এগুলো দেখা উচিত।
আন্তঃ শিক্ষা বোর্ড বলছে, পিছিয়ে পড়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মান্নোয়নে নানা বিশেষ ব্যবস্থা নেয়া হবে। তারপরও কোনো প্রতিষ্ঠান পরপর কয়েক বছর শিক্ষার্থীশূন্য থাকলে বাতিল হবে পাঠদানের অনুমতি।
বাংলাদেশ আন্তঃ শিক্ষা বোর্ড সমন্বয় সাবকমিটির সভাপতি অধ্যাপক তপন কুমার সরকার বলেন, ‘তিন বছর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শিক্ষার্থীশূন্য থাকলে সেসব প্রতিষ্ঠান বিলুপ্ত করা হবে। কেননা, আমাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অভাব নেই, তবে মানসম্মত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অভাব রয়েছে।’
এবার বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিক্ষার্থী, প্রবাসীদের সন্তান, বিকেএসপি থেকে পাস করা শিক্ষার্থী, খেলাধুলা এবং সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে বিভাগীয় বা জাতীয় পর্যায়ে অবদানের জন্য পুরস্কারপ্রাপ্তরা ম্যানুয়ালি আবেদন করতে পারবে। আর ডিসেম্বরে চলমান অনলাইন আবেদন এবং জানুয়ারিতে কলেজে চূড়ান্ত ভর্তি প্রক্রিয়া শেষে পহেলা ফেব্রুয়ারি থেকে একাদশ শ্রেণির ক্লাস শুরু হবে।