করোনা মহামারিতে বিশ্বজুড়ে দৈনিক মৃত্যুর সংখ্যা কমেছে। গত ২৪ ঘণ্টায় সারা বিশ্বে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ১১ হাজারের বেশি মানুষ। একই সময়ে ভাইরাসটিতে নতুন করে আক্রান্তের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ২৪ লাখ।
এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় বিশ্বজুড়ে সবচেয়ে বেশি সংক্রমণের ঘটনা ঘটেছে জার্মানিতে। অন্যদিকে দৈনিক প্রাণহানির তালিকায় শীর্ষে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। প্রাণহানির তালিকায় এরপরই রয়েছে ভারত, ব্রাজিল, রাশিয়া, ইতালি, পোল্যান্ড ও যুক্তরাজ্য। এতে বিশ্বব্যাপী করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৪০ কোটি ৩৪ লাখের ঘর। অন্যদিকে মৃতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৫৭ লাখ ৯৪ হাজার।
বৃহস্পতিবার (১০ ফেব্রুয়ারি) সকালে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত, মৃত্যু ও সুস্থতার হিসাব রাখা ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডোমিটারস থেকে পাওয়া সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় সারা বিশ্বে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ১১ হাজার ২৯৭ জন। অর্থাৎ আগের দিনের তুলনায় মৃত্যুর সংখ্যা কমেছে দেড় শতাধিক। এতে বিশ্বজুড়ে মৃতের সংখ্যা পৌঁছেছে ৫৭ লাখ ৯৪ হাজার ৬৩৩ জনে।
একই সময়ের মধ্যে ভাইরাসটিতে নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ২৪ লাখ ৭ হাজার ৪৪৭ জন। অর্থাৎ আগের দিনের তুলনায় নতুন শনাক্ত রোগীর সংখ্যা বেড়েছে আড়াই লাখের বেশি। এতে মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত ভাইরাসে আক্রান্ত মোট রোগীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪০ কোটি ৩৪ লাখ ৩৬ হাজার ৮০৭ জনে।
এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় বিশ্বে করোনায় সবচেয়ে বেশি সংক্রমণের ঘটনা ঘটেছে জার্মানিতে। এই সময়ের মধ্যে দেশটিতে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ২ লাখ ৩৮ হাজার ৪১০ জন এবং মারা গেছেন ২৪৬ জন। করোনা মহামারির শুরু থেকে ইউরোপের এই দেশটিতে এখন পর্যন্ত ১ কোটি ১৬ লাখ ৪৯ হাজার ৮৭৪ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং ১ লাখ ১৯ হাজার ৯৭২ জন মারা গেছেন।
অন্যদিকে দৈনিক প্রাণহানির তালিকায় শীর্ষে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এই সময়ের মধ্যে দেশটিতে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ২ লাখ ১৮ হাজার ৮১৮ জন এবং মারা গেছেন ২ হাজার ৬১১ জন। করোনাভাইরাসে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এই দেশটিতে এখন পর্যন্ত ৭ কোটি ৮৮ লাখ ১৫ হাজার ৭৫৩ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং ৯ লাখ ৩৫ হাজার ৭৪৮ জন মারা গেছেন।
লাতিন আমেরিকার দেশ ব্রাজিল করোনায় আক্রান্তের দিক থেকে তৃতীয় ও মৃত্যুর সংখ্যায় তালিকার দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ১ হাজার ২৯৫ জন এবং নতুন করে করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন ১ লাখ ৮৩ হাজার ৫৩৩ জন। অপরদিকে মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত দেশটিতে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ২ কোটি ৬৯ লাখ ৬০ হাজার ১৫৩ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ৬ লাখ ৩৫ হাজার ১৮৯ জনের।
করোনায় আক্রান্তের তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে প্রতিবেশী দেশ ভারত। তবে ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যার তালিকায় দেশটির অবস্থান তৃতীয়। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ১ হাজার ২৪১ জন এবং নতুন করে করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন ৬৫ হাজার ১৪৬ জন। মহামারির শুরু থেকে দেশটিতে এখন পর্যন্ত মোট আক্রান্ত ৪ কোটি ২৪ লাখ ৭৬ হাজার ১২২ জন এবং মারা গেছেন ৫ লাখ ৬ হাজার ৫৪৯ জন।
গত ২৪ ঘণ্টায় রাশিয়ায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৬৬৯ জন এবং নতুন করে করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন ১ লাখ ৮৩ হাজার ১০৩ জন। এছাড়া মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত দেশটিতে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ১ কোটি ৩৩ লাখ ৩০ হাজার ৭৬৯ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ৩ লাখ ৩৭ হাজার ৩৯০ জনের।
স্পেনে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৬২ হাজার ৮৩৯ জন এবং মারা গেছেন ২৮২ জন। একই সময়ের মধ্যে ইউক্রেনে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৩৮ হাজার ২৫৭ জন এবং মারা গেছেন ২৪০ জন।
গত ২৪ ঘণ্টায় তুরস্কে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ১ লাখ ৮ হাজার ৫৬৩ জন এবং মারা গেছেন ২৬৬ জন। একই সময়ে ইতালিতে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৮১ হাজার ৩৬৭ জন এবং মারা গেছেন ৩৮৪ জন।
এছাড়া গত একদিনে যুক্তরাজ্যে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৬৮ হাজার ২১৪ জন এবং মারা গেছেন ২৭৬ জন। করোনা মহামারির শুরু থেকে দেশটিতে এখন পর্যন্ত ১ কোটি ৮০ লাখ ১১৯ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং ১ লাখ ৫৮ হাজার ৯৫৩ জন মারা গেছেন। গত একদিনে কলম্বিয়ায় নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৮ হাজার ৭৮৫ জন এবং মারা গেছেন ২০৭ জন।
এছাড়া করোনায় আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় দক্ষিণ আফ্রিকায় ২১৩ জন, কানাডায় ১৩১ জন, আর্জেন্টিনায় ২১৭ জন, গ্রিসে ৭৮ জন, পোল্যান্ডে ৩১০ জন, হাঙ্গেরিতে ১০১ জন, ইরানে ১১৬ জন, জাপানে ১৪১ জন, রোমানিয়ায় ১৭১ জন এবং ভিয়েতনামে ৯৩ জন মারা গেছেন। অন্যদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় মেক্সিকোতে মারা গেছেন ১৩২ জন। মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত উত্তর আমেরিকার এই দেশটিতে মৃত্যু হয়েছে ৩ লাখ ৯ হাজার ৮৮৪ জনের।
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের উহানে প্রথম করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। এরপর ২০২০ সালের ১১ মার্চ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) করোনাকে ‘বৈশ্বিক মহামারি’ হিসেবে ঘোষণা করে। এর আগে একই বছরের ২০ জানুয়ারি বিশ্বজুড়ে জরুরি পরিস্থিতি ঘোষণা করে সংস্থাটি।
রাজশাহীর সময় /এএইচ