ওমিক্রন ভ্য়ারিয়েন্টকে হালকা চালে নিতে বারণ করেছিল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। করোনা থেকে কবে মুক্তি মিলবে, এই প্রশ্নেরই উত্তর যখন খুঁজছেন সকলে, সেই সময়ই এই ভ্যারিয়েন্টের দাপট কতটা, তা মৃতের সংখ্যাতেই ফুটে উঠল।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে, ২০২১ সালের নভেম্বরের শেষ সপ্তাহে এই ভ্যারিয়েন্টের খোঁজ মেলার পর থেকে এখনও অবধি বিশ্ব জুড়ে ৫ লক্ষ মানুষের মৃত্যু হয়েছে। একইসঙ্গে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে, ওমিক্রনই শেষ নয়। এরপরও করোনা অন্য কোনও নতুন ভ্যারিয়েন্ট আছড়ে পড়তে পারে এবং তা আরও দ্রুত ছড়িয়ে পড়বে।
মঙ্গলবারই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ইন্সিডেট ম্যানেজার আবদি মাহমুদ জানান, গত বছরের নভেম্বর মাসে ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টকে ‘উদ্বেগের কারণ’ হিসাবে চিহ্নিত করার পর থেকে এখনও অবধি বিশ্ব জুড়ে ১৩ কোটিরও বেশি ওমিক্রন আক্রান্ত ও ৫ লক্ষেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে।
তিনি আরও জানান, বিশ্বজুড়ে এতদিন ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টই ‘ডমিন্যান্ট ভ্যারিয়েন্ট’ হলেও, ওমিক্রন ডেল্টার থেকেও বেশি সংক্রামক হওয়ায় তা বর্তমানে করোনার ডমিন্যান্ট ভ্যারিয়েন্টে পরিণত হয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সোশ্যাল মিডিয়া চ্যানেলে লাইভ কথাবার্তার সময়ই মাহমুদ বলেন, “কার্যকরী টিকার যুগে দাঁড়িয়েও অর্ধেক মিলিয়ন মানুষের মৃত্যু হচ্ছে। এটা দুর্ভাগ্যজনকের থেকেও বেশি কিছু। যেখানে সবাই বলছেন যে ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টের ক্ষমতা কম, এতে সংক্রমণ গুরতর আকার ধারণ করছে না, এই তথ্যটা তাদের চোখ এড়িয়ে গিয়েছে যে ওমিক্রনের খোঁজ মেলার পর থেকে এখনও অবধি ৫ লক্ষ মানুষের মৃত্যু হয়েছে।”
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার টেকনিক্যাল প্রধান ডঃ মারিয়া ভ্য়ান কেরকোভে বলেন, “ওমিক্রনে আক্রান্তের সংখ্যা অবিশ্বাস্য। সাধারণ চোখে সংক্রমণের হার দেখে মনে হচ্ছে যে, আগের ঢেউগুলি যখন সংক্রমণের শীর্ষে পৌঁছেছিল, সেগুলি ওমিক্রনের ঢেউয়ের তুলনায় কিছুই নয়। ওমিক্রনে আসল আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা এর থেকেও অনেক গুণ বেশি হতে পারে।”
তিনি বলেন, “ভুলে গেলে চলবে না যে আমরা এখনও অতিমারির মধ্যেই রয়েছি। একাধিক দেশে এখনও ওমিক্রন শীর্ষে পৌঁছয়নি। তবে আশা করছি যে ধীরে ধীরে আমরা সংক্রমণের শেষে দিকে এগোচ্ছি। ”
বিগত কয়েক সপ্তাহ ধরেই করোনায় মৃতের সংখ্যা ক্রমশ বৃদ্ধি পাওয়ায়, তা উদ্বেগ বাড়াচ্ছে বলেই ডানান ডঃ মারিয়া ভ্যান কারকাভে। ইতিমধ্যেই ওমিক্রনের চারটি সাব- ভ্যারিয়েন্টের উপরও কড়া নজরদারি শুরু করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। এরমধ্যে বিএ.১ সা ভ্যারিয়েন্টটি বিশ্বজুড়ে ডমিন্যান্ট ভ্যারিয়েন্ট হলেও, বিএ.২ সাব ভ্যারিয়েন্টটি আরও বেশি সংক্রামক ও ভয়ঙ্কর বলেই মনে করা হচ্ছে। এই বিষয়ে ডঃ কারকাভে বলেন, “এখনও অবধি এমন কোনও ইঙ্গিত মেলেনি যে বিএ.২ সাব ভ্যারিয়েন্ট আরও বেশি ভয়ঙ্কর হতে পারে। এর জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণ তথ্যের প্রয়োজন, যা এখনও প্রাথমিক পর্যায়েই রয়েছে।”
রাজশাহীর সময় /এএইচ