ঢাকার ফুটপাত বিক্রি বা লিজদান ও ভাড়া উত্তোলনে জড়িতদের তালিকা প্রস্তুত করে আদালতে দাখিল করার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। এই তালিকা প্রস্তুতের জন্য পাঁচ সদস্যের অনুসন্ধান কমিটিও গঠন করতে বলা হয়েছে। এছাড়া ফুটপাত বিক্রি ও ভাড়া উত্তোলনের সঙ্গে জড়িতদের আইনি ব্যবস্থা গ্রহণেরও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি কাজী মো. ইজারুল হক আকন্দ সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ সোমবার রুল জারিসহ এই আদেশ দেন। একই আদেশে রাজধানীর মূল ফুটপাতগুলো দখল করে যেন কোনো স্থায়ী/অস্থায়ী দোকান ও স্থাপনা আর যাতে বসতে না পারে সে ব্যাপারে ৭ দিনের মধ্যে কার্যকরী পদক্ষেপ নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের প্রধান দুই নির্বাহী কর্মকর্তা, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক), ঢাকার উত্তর ও দক্ষিণের যুগ্ম পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক), ঢাকার জেলা প্রশাসকসহ রাজধানীর ১৫টি থানার ওসিকে এসব আদেশ বাস্তবায়নের জন্য বলা হয়েছে।
অনুসন্ধান কমিটি গঠনের বিষয়ে আদেশে বলা হয়েছে, উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তাদের নিয়ে পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করতে হবে। কমিটিতে দুই সিটি করপোরেশন থেকে দুজন, সিআইডি থেকে একজন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে একজন এবং অপর একজন রাজউক থেকে রাখতে বলা হয়েছে। ঢাকার দক্ষিণ ও উত্তরের দুই মেয়র, স্বরাষ্ট্রসচিব এবং স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের সচিবকে এই কমিটি গঠন করতে বলা হয়েছে।
রুলে রাজধানীর ঢাকার ফুটপাত বিক্রি ও ভাড়া দেওয়া বন্ধে বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তা কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না এবং তা বন্ধের কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না তা জানতে চাওয়া হয়েছে। স্বরাষ্ট্র সচিবসহ ২৯ জন বিবাদীকে চার সপ্তাহের মধ্যে এ রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
ফুটপাত বিক্রি ও ভাড়া উত্তোলন বন্ধের নির্দেশনা চেয়ে গত রোববার জনস্বার্থে হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ'র (এইচআরপিবি) এই রিট দায়ের করে। আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। তার সঙ্গে আরও ছিলেন আইনজীবী মো. ছারওয়ার আহাদ চৌধুরী ও অ্যাডভোকেট রিপন বাড়ৈ। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল আব্বাস উদ্দিন।
শুনানিতে মনজিল মোরসেদ আদালতে বলেন, রাজধানীতে ফুটপাত বিক্রি ও ভাড়া নৈরাজ্যে ভুক্তভোগী হচ্ছে সাধারণ মানুষ। ফুটপাত দখল করে রাখায় সাধারণ মানুষ মূল সড়ক দিয়ে হাঁটতে বাধ্য হচ্ছে এবং এর ফলে সৃষ্টি হচ্ছে তীব্র যানজট এবং মাঝে মাঝেই হচ্ছে দুর্ঘটনা। ফুটপাত যুক্ত রাখার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ, পুলিশ বাহিনী তাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করছে না বলে সাধারণ মানুষ চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছে।