আজকাল বেশিরভাগ মানুষই হাই কোলেস্টেরল কিংবা উচ্চ রক্তচাপ জনিত সমস্যায় ভোগেন। অগোছালো জীবনধারা, স্ট্রেস, উদ্বেগ, খারাপ খাদ্যাভ্যাস ইত্যাদি এর মূল কারণ। এসব কিছুর ফলে হার্টের স্বাস্থ্যের মারাত্মক ক্ষতি হয়, যা অনেক সময়ই প্রাণঘাতী হয়ে ওঠে। এছাড়াও, আমাদের কিছু দৈনন্দিন বদভ্যাস আছে, যার ফলে হার্ট ক্ষতিগ্রস্থ হয়।
এই অভ্যাসগুলো থকে বেরিয়ে এলে কিছুটা হলেও হার্টের পক্ষে উপকার হবে। চলুন তবে জেনে নেয়া যাক দৈনন্দিন জীবনের কোন কোন বদভ্যাস হার্টের ক্ষতি করতে সক্ষম-
শারীরিক দিক থেকে সক্রিয় না থাকা: হৃত্পিণ্ড শরীরের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। হার্ট ভালো রাখতে, নিয়মিত শারীরিক দিক থেকে সক্রিয় থাকা কিন্তু অত্যন্ত জরুরি। গুড ডায়েট এবং নিয়মিত ব্যায়াম আমাদের অজান্তেই শরীরের বিভিন্ন উপকার করে। তাই নিয়মিত ২০-৩০ মিনিট শরীরচর্চা, খেলাধূলা, হাঁটাহাঁটি, দৌড়ানো, হার্টের স্বাস্থ্য ভাল রাখতে অনেকটা সাহায্য করতে পারে। তাছাড়া এটি কোলেস্টেরল, রক্তচাপ এবং ওজনকে নিয়ন্ত্রণে রাখতেও সহায়তা করে।
ধূমপান: ধূমপান যে স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে কতটা ক্ষতিকর, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। এটি মূলত হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বর্ধক হিসেবে কাজ করে। এমনকি অনেক বিজ্ঞাপনেও ধূমপানের ক্ষতিকারক দিক তুলে ধরতে, 'Smoking Kills' এই ট্যাগলাইনটি ব্যবহার করা হয়। কার্বন মনোক্সাইড হল সিগারেটের একটি প্রধান উপাদান এবং এটি হেলদি ব্লাড কাউন্ট এবং উচ্চ কোলেস্টেরল হ্রাস করে। ধূমপান ফুসফুস, হার্ট এবং আর্টারিকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ করে। সকালে ঘুম থেকে উঠে এই জিনিসগুলো একেবারেই দেখবেন না, সারাদিন খারাপ কাটবে!
মানসিক চাপ বা স্ট্রেস: কাজ, পারিবারিক চিন্তা কিংবা অন্য কোনো কারণে হওয়া অতিরিক্ত স্ট্রেস বা মানসিক চাপ হার্টের ওপর মারাত্মকভাবে চাপ সৃষ্টি করতে পারে এবং শরীরে বাজে কোলেস্টেরলের মাত্রা বৃদ্ধি করতেও সক্ষম। এর ফলে ধমনী ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পাশাপাশি, হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকিও কয়েকগুণ বৃদ্ধি পায়। মানসিক চাপ মোকাবেলা করার জন্য, অনেকে মদ্যপান, ধূমপান এবং অতিরিক্ত পরিমাণে খাওয়া শুরু করে, এর সবই হার্টের আরো ক্ষতি করে। স্ট্রেস মোকাবিলার জন্য আপনার নিয়মিত ব্যায়াম ও মেডিটেশন করা উচিত, যা শরীরকে প্রশান্তি দেয় এবং হরমোনকে নিয়ন্ত্রণ করে। এর ফলে হার্টও ভালো থাকে। এছাড়া, মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে গান শুনুন কিংবা পরিবার ও পোষ্যের সঙ্গেও সময় কাটাতে পারেন।
জাঙ্ক ফুড: মুখরোচক মশলাদার ও ভাজাভুজি জাতীয় খাবারের নাম মনে আসতেই যেন জিভে জল চলে আসে। কিন্তু ঘন ঘন বাইরের খাবার খাওয়া, জাঙ্ক ফুড এবং প্রক্রিয়াজাত খাবার খাওয়া কিন্তু স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে মারাত্মক ক্ষতিকর। এর ফলে খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা বৃদ্ধি করার পাশাপাশি রক্তচাপ বৃদ্ধি করতেও সক্ষম। এর ফলে হার্টেরও মারাত্মক ক্ষতি হয়।
অতিরিক্ত মদ্যপান: অতিরিক্ত অ্যালকোহল পান হার্ট অ্যাটাক হওয়ার অন্যতম প্রধান কারণ। এটি শরীরে ট্রাইগ্লিসারাইডের মাত্রা বৃদ্ধি করে, যার ফলে কোলেস্টেরলের মাত্রাও বৃদ্ধি পায়। তাছাড়া, অতিরিক্ত মদ্যপান ওজন বৃদ্ধি হয় এবং ধমনীরও ক্ষতি করে। পরিমিত মাত্রায় মদ্যপান এবং এর পাশাপাশি শরীরচর্চা করা কিন্তু হার্টের ক্ষেত্রে তুলনামূলকভাবে নিরাপদ।
অত্যাধিক লবণযুক্ত খাবার খাওয়া: অতিরিক্ত লবণ সেবনও স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে অত্যন্ত ক্ষতিকর। লবণ সোডিয়ামের উত্স। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে যে, উচ্চ সোডিয়ামযুক্ত খাবার খাওয়া স্ট্রোক হওয়ার সম্ভাবনা বাড়ায়, কারণ এটি সরাসরি হার্টকে প্রভাবিত করে। অত্যধিক লবণযুক্ত খাবার খাওয়া রক্তচাপ বৃদ্ধি করতে পারে।
রাজশাহীর সময় /এএইচ