পরমাণু শক্তিধর দুই দেশ ভারত এবং পাক দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে চাপানউতরের মধ্যে আপৎকালীন পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুতি নেওয়া শুরু হয়েছে পাকিস্তানের রাওয়ালপিন্ডি শহরে। পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম ‘দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউন’-এর প্রতিবেদন অনুসারে, উদ্ভূত পরিস্থিতির জেরেই এই প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। সেখানকার অসামরিক প্রতিরক্ষা দফতর এবং রাওয়ালপিন্ডি জেলা প্রশাসন বিভিন্ন পদক্ষেপ করতে শুরু করেছে। রাওয়ালপিন্ডি শহর জুড়ে ১৬টি আপৎকালীন সাইরেন বসানো হয়েছে। একই সঙ্গে নজরদারি এবং উদ্ধারকাজের জন্য ৩৮টি চেকপয়েন্টও বসানো হয়েছে, যেগুলি সর্বক্ষণ সচল থাকবে। উদ্ধারকাজে সাহায্য করতে ইচ্ছুকদের প্রশিক্ষণও দেওয়া হচ্ছে। প্রায় সাড়ে তিন হাজার স্বেচ্ছাসেবককে প্রশিক্ষণ দিচ্ছে স্থানীয় অসামরিক প্রতিরক্ষা দফতর। স্বেচ্ছাসেবকদের মধ্যে অনেক মহিলাও রয়েছেন বলে দাবি করা হচ্ছে পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যমে।
‘দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউন’ অনুসারে, রাওয়ালপিন্ডি ক্যান্টনমেন্ট থানা, অসামরিক প্রতিরক্ষা দফতরের সদর কার্যালয় এবং স্থানীয় একটি স্কুলে এই প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। আগামী দিনে আরও একটি স্কুলে প্রশিক্ষণকেন্দ্র খোলার ভাবনাচিন্তা চলছে বলে খবর। ওই প্রতিবেদন অনুসারে, আহতদের কী ভাবে উদ্ধার করতে হবে, কোনও ভবনে আগুন লাগলে বা ভেঙে পড়লে কী ভাবে মানুষকে নিরাপদে অন্যত্র সরাতে হবে, কী ভাবে আগুন নেভাতে হবে, সেই বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে অসামরিক প্রতিরক্ষা দফতরের সদর কার্যালয়ে।
কোনও আপৎকালীন পরিস্থিতি তৈরি হলে প্রথমে সদর দফতরের সাইরেন বেজে উঠবে। সেখান থেকে শহরের বাকি সাইরেনগুলিও বেজে উঠবে। ওই পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যমকে অসামরিক প্রতিরক্ষা দফতরে জেলা আধিকারিক তালিব হুসেন জানিয়েছেন, কোনও আপৎকালীন পরিস্থিতি তৈরি হোক বা না হোক, দফতর সবসময় সজাগ রয়েছে। প্রশিক্ষণের উপর নজর রাখছেন দফতরের ডেপুটি কমিশনার হাসান ওয়াকার চিমা। মহিলা স্বেচ্ছাসেবকদের প্রশিক্ষণের জন্যও বিশেষ ব্যবস্থা করা হয়েছে সেখানে।
বস্তুত, পহেলগাঁও কাণ্ডের পর থেকে ভারত এবং পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা ক্রমশ বৃদ্ধি পেয়েছে। ভারতের অভিযোগ, ওই ঘটনায় সীমান্তপারের যোগ রয়েছে। যদিও সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছে পাকিস্তান। দুই দেশই একে অন্যের বিরুদ্ধে বেশ কিছু কূটনৈতিক পদক্ষেপ করেছে। তার পরে প্রায় প্রতি রাতেই কাশ্মীরে নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর সংঘর্ষবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করে গুলি চালানোর অভিযোগ উঠেছে পাক সেনার বিরুদ্ধে। পাল্টা জবাব দিয়েছে ভারতীয় সেনাও। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ভারতের তরফে সামরিক পদক্ষেপ করা হতে পারে আশঙ্কা করছে পাকিস্তান।