রাজশাহীতে মায়ের পরকীয়ার জেরে এক বিচারকের কিশোর ছেলেকে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। অভিযুক্ত লিমন মিয়া (৩৫) নামের ওই যুবক নিজেকে বিচারকের স্ত্রী তাসমিন নাহার লুসির প্রেমিক বলে দাবি করেছেন এবং ঘটনাটিকে ‘ভুল বোঝাবুঝি’ ও ‘সাজানো নাটক’ বলে আখ্যা দিয়েছেন। তবে এই ঘটনার কয়েকদিন আগেই নিহত কিশোরের মা লুসি অভিযুক্ত লিমনের বিরুদ্ধে প্রাণনাশের হুমকির অভিযোগে থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছিলেন।
বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) বিকালে রাজশাহী মহানগরীর রাজপাড়া থানার ডাবতলা এলাকার একটি ফ্ল্যাটে এই হত্যাকাণ্ড ঘটে। নিহত তাওসিফ রহমান সুমন (১৫) মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক আব্দুর রহমানের ছেলে এবং সরকারি ল্যাবরেটরি স্কুলের নবম শ্রেণির ছাত্র ছিল। হামলায় সুমনের মা তাসমিন নাহার লুসিও গুরুতর আহত হয়েছেন। অভিযুক্ত লিমনও আহত অবস্থায় বর্তমানে হাসপাতালে পুলিশি হেফাজতে চিকিৎসাধীন।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় লিমন মিয়া সাংবাদিকদের কাছে দাবি করেন, বিচারকের স্ত্রী লুসির সঙ্গে কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে তার পরিচয় এবং বিগত পাঁচ বছর ধরে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক ছিল। তার ভাষ্যমতে, সম্প্রতি লুসি সম্পর্কটি অস্বীকার করে তার সাথে যোগাযোগ বন্ধ করে দেন। এতে তিনি মানসিকভাবে বিপর্যস্ত করে হয়ে পড়েন।
লিমন বলেন, আপনি ফোন না ধরলে আমার দম বন্ধ হয়ে আসে। এই আকুতি নিয়ে লুসির সাথে দেখা করতে রাজশাহীর বাসায় যান তিনি। সঙ্গে নিয়ে যান গোলাপ ফুল, বাদাম ও পপকর্ন। তার দাবি, লুসির সাথে বাইরে বসে কথা বলার প্রস্তাবে রাজি না হয়ে লুসি পাশের ঘরে গিয়ে দরজা বন্ধ করে পুলিশে খবর দেন। এতে আগের একটি ঘটনায় জেল খাটার অপমান মনে পড়ায় এবং বাবার সম্মানের কথা চিন্তা করে তিনি রাগান্বিত হয়ে দরজা ভাঙেন।
লিমনের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী, তিনি ফল কাটার চাকু দিয়ে লুসির হাতে একটি কোপ দেন। এসময় লুসির ছেলে সুমন এসে তাকে বাধা দেয় এবং দুজন মিলে তার হাত থেকে চাকু কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। লিমন বলেন, লুসির ছেলে আমাকে একটি কোপ দিয়েছে, তারপর আমাকে আবার মারা শুরু করছে দুই হাতে। যখন আমি দুই হাতে প্রটেক্ট (বাঁধা) দিতে পারিনি, তখন আমি ওনার ছেলের পায়ে কামড় দিচ্ছি। এর পরের ঘটনা তার মনে নেই বলে জানান তিনি। সুমনের মৃত্যুর খবর তিনি জানেন না এবং তার মাথায় বা পেটে আঘাত করেননি বলে দাবি করেন।
লিমন নিজেকে নির্দোষ দাবি করে বলেন, আমি যদি পরকীয়া করি, ওনিও পরকীয়া করেছে... উনারেও সাজা হওয়া উচিৎ। তিনি ন্যায়বিচার দাবি করে বলেন, বিচারে তার ফাঁসি হলেও তিনি তা মেনে নেবেন। লুসির প্রতি তার ভালোবাসা জানিয়ে তিনি বলেন, জীবনের শেষ নিঃশ্বাস পর্যন্ত বলব, লুসি আমি তোমাকে ভালবাসি।
লিমনের এই প্রেমের দাবির সম্পূর্ণ বিপরীত চিত্র পাওয়া যায় নিহত সুমনের মা তাসমিন নাহার লুসির করা জিডি থেকে। গত ৬ নভেম্বর সিলেটের সুরমা থানায় করা ওই জিডিতে লুসি উল্লেখ করেন, কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশনের সূত্রেই লিমনের সাথে তার পরিচয়। লিমন আর্থিকভাবে দুর্বল হওয়ায় তিনি তাকে সাহায্য করতেন। কিন্তু এক পর্যায়ে লিমন ক্রমাগত টাকা চাইতে থাকলে তিনি অপারগতা প্রকাশ করেন। এরপর থেকেই লিমন তাকে ফোন করে এবং তার মেয়ের ফেসবুক মেসেঞ্জারে প্রাণনাশের হুমকি দিচ্ছিল।
পুলিশ জানিয়েছে, জিডির তদন্তের জন্য আদালতে অনুমতি চাওয়া হয়েছিল, কিন্তু অনুমতি পাওয়ার আগেই এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে যায়। পুলিশ আরও জানতে পেরেছে, এর আগেও সিলেটে লুসিকে উত্ত্যক্ত করার দায়ে স্থানীয়রা লিমনকে গণধোলাই দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করেছিল।
গাইবান্ধার ফুলছড়ি উপজেলার বাসিন্দা লিমন মিয়া সেনাবাহিনীর সাবেক সদস্য বলে জানা গেছে। চার বছর চাকরি করার পর তাকে চাকরিচ্যুত করা হয় বলে একটি সূত্র জানিয়েছে। তার বাবা একজন স্থানীয় বিএনপি নেতা।
রাজশাহী মহানগর পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্ত লিমন পুলিশি হেফাজতে রয়েছে এবং ঘটনাটির পূর্বাপর বিষয় খতিয়ে দেখা হচ্ছে। দুই পক্ষের পরস্পরবিরোধী বক্তব্য এবং একটি কিশোরের নৃশংস হত্যাকান্ড এই ঘটনাকে আরও জটিল করে তুলেছে। তদন্ত শেষে এই রহস্যের জট খুলবে বলে আশা করছেন আরএমপি পুলিশের পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ আবু সুফিয়ান।
বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) বিকালে রাজশাহী মহানগরীর রাজপাড়া থানার ডাবতলা এলাকার একটি ফ্ল্যাটে এই হত্যাকাণ্ড ঘটে। নিহত তাওসিফ রহমান সুমন (১৫) মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক আব্দুর রহমানের ছেলে এবং সরকারি ল্যাবরেটরি স্কুলের নবম শ্রেণির ছাত্র ছিল। হামলায় সুমনের মা তাসমিন নাহার লুসিও গুরুতর আহত হয়েছেন। অভিযুক্ত লিমনও আহত অবস্থায় বর্তমানে হাসপাতালে পুলিশি হেফাজতে চিকিৎসাধীন।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় লিমন মিয়া সাংবাদিকদের কাছে দাবি করেন, বিচারকের স্ত্রী লুসির সঙ্গে কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে তার পরিচয় এবং বিগত পাঁচ বছর ধরে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক ছিল। তার ভাষ্যমতে, সম্প্রতি লুসি সম্পর্কটি অস্বীকার করে তার সাথে যোগাযোগ বন্ধ করে দেন। এতে তিনি মানসিকভাবে বিপর্যস্ত করে হয়ে পড়েন।
লিমন বলেন, আপনি ফোন না ধরলে আমার দম বন্ধ হয়ে আসে। এই আকুতি নিয়ে লুসির সাথে দেখা করতে রাজশাহীর বাসায় যান তিনি। সঙ্গে নিয়ে যান গোলাপ ফুল, বাদাম ও পপকর্ন। তার দাবি, লুসির সাথে বাইরে বসে কথা বলার প্রস্তাবে রাজি না হয়ে লুসি পাশের ঘরে গিয়ে দরজা বন্ধ করে পুলিশে খবর দেন। এতে আগের একটি ঘটনায় জেল খাটার অপমান মনে পড়ায় এবং বাবার সম্মানের কথা চিন্তা করে তিনি রাগান্বিত হয়ে দরজা ভাঙেন।
লিমনের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী, তিনি ফল কাটার চাকু দিয়ে লুসির হাতে একটি কোপ দেন। এসময় লুসির ছেলে সুমন এসে তাকে বাধা দেয় এবং দুজন মিলে তার হাত থেকে চাকু কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। লিমন বলেন, লুসির ছেলে আমাকে একটি কোপ দিয়েছে, তারপর আমাকে আবার মারা শুরু করছে দুই হাতে। যখন আমি দুই হাতে প্রটেক্ট (বাঁধা) দিতে পারিনি, তখন আমি ওনার ছেলের পায়ে কামড় দিচ্ছি। এর পরের ঘটনা তার মনে নেই বলে জানান তিনি। সুমনের মৃত্যুর খবর তিনি জানেন না এবং তার মাথায় বা পেটে আঘাত করেননি বলে দাবি করেন।
লিমন নিজেকে নির্দোষ দাবি করে বলেন, আমি যদি পরকীয়া করি, ওনিও পরকীয়া করেছে... উনারেও সাজা হওয়া উচিৎ। তিনি ন্যায়বিচার দাবি করে বলেন, বিচারে তার ফাঁসি হলেও তিনি তা মেনে নেবেন। লুসির প্রতি তার ভালোবাসা জানিয়ে তিনি বলেন, জীবনের শেষ নিঃশ্বাস পর্যন্ত বলব, লুসি আমি তোমাকে ভালবাসি।
লিমনের এই প্রেমের দাবির সম্পূর্ণ বিপরীত চিত্র পাওয়া যায় নিহত সুমনের মা তাসমিন নাহার লুসির করা জিডি থেকে। গত ৬ নভেম্বর সিলেটের সুরমা থানায় করা ওই জিডিতে লুসি উল্লেখ করেন, কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশনের সূত্রেই লিমনের সাথে তার পরিচয়। লিমন আর্থিকভাবে দুর্বল হওয়ায় তিনি তাকে সাহায্য করতেন। কিন্তু এক পর্যায়ে লিমন ক্রমাগত টাকা চাইতে থাকলে তিনি অপারগতা প্রকাশ করেন। এরপর থেকেই লিমন তাকে ফোন করে এবং তার মেয়ের ফেসবুক মেসেঞ্জারে প্রাণনাশের হুমকি দিচ্ছিল।
পুলিশ জানিয়েছে, জিডির তদন্তের জন্য আদালতে অনুমতি চাওয়া হয়েছিল, কিন্তু অনুমতি পাওয়ার আগেই এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে যায়। পুলিশ আরও জানতে পেরেছে, এর আগেও সিলেটে লুসিকে উত্ত্যক্ত করার দায়ে স্থানীয়রা লিমনকে গণধোলাই দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করেছিল।
গাইবান্ধার ফুলছড়ি উপজেলার বাসিন্দা লিমন মিয়া সেনাবাহিনীর সাবেক সদস্য বলে জানা গেছে। চার বছর চাকরি করার পর তাকে চাকরিচ্যুত করা হয় বলে একটি সূত্র জানিয়েছে। তার বাবা একজন স্থানীয় বিএনপি নেতা।
রাজশাহী মহানগর পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্ত লিমন পুলিশি হেফাজতে রয়েছে এবং ঘটনাটির পূর্বাপর বিষয় খতিয়ে দেখা হচ্ছে। দুই পক্ষের পরস্পরবিরোধী বক্তব্য এবং একটি কিশোরের নৃশংস হত্যাকান্ড এই ঘটনাকে আরও জটিল করে তুলেছে। তদন্ত শেষে এই রহস্যের জট খুলবে বলে আশা করছেন আরএমপি পুলিশের পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ আবু সুফিয়ান।
মোঃ মাসুদ রানা রাব্বানী :