বগুড়ায় কয়েক দিনের বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলে সারিয়াকান্দিতে যমুনা ও বাঙালি নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। নদীতে নাব্যতা ফিরে আসায় বিভিন্ন রুটে নৌ-যান চলাচল স্বাভাবিক হয়ে জনমনে স্বস্তি দেখা দিয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড বলছে, পানি এখন বিপৎসীমার নিচে রয়েছে। জুনের মাঝামাঝি পর্যন্ত নদীতে পানি এভাবে কমবেশি হতে পারে।
বগুড়া পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র জানায়, বৃষ্টিপাত ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলে সারিয়াকান্দি উপজেলায় যমুনা ও বাঙালি নদীতে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে।
রোববার এ নদীতে পানির উচ্চতা হয় ১৪.০০ মিটার। গত বৃহস্পতিবার মথুরাপাড়া পয়েন্টে যমুনা নদীর পানির উচ্চতা ছিল ১৩.৮৬ মিটার। তিন দিনে যমুনা নদীতে ১৪ সেন্টিমিটার পানি বেড়েছে। এ নদীতে পানির বিপৎসীমা ১৬.২৫ মিটার। অর্থাৎ যমুনা নদীতে পানি বিপৎসীমার ২.২৫ মিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
অন্যদিকে বাঙালি নদীতে পানি বৃদ্ধি পেয়ে গত বৃহস্পতিবার উচ্চতা দাঁড়ায় ১৩.০৫ মিটার। রোববার এ নদীতে পানির উচ্চতা বেড়ে হয় ১৩.৭৬ মিটার। তিনদিনে সারিয়াকান্দিতে বাঙালি নদীর পানি বৃদ্ধি পায় ৭১ সেন্টিমিটার। এ নদীর পানির বিপৎসীমা ১৫.৪০ মিটার। অর্থাৎ বাঙালি নদীর পানি বিপৎসীমার ১.৬৪ মিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
এদিকে সারিয়াকান্দি উপজেলায় যমুনা ও বাঙালি নদীতে পানি বৃদ্ধিতে স্বাভাবিক প্রবাহ চালু হয়েছে। অনেক মরে যাওয়া খালে প্রাণের সঞ্চার হয়েছে। এতে চরাঞ্চলের মানুষ নৌকায় খুব সহজে এক স্থান থেকে অন্যত্র যেতে পারছেন। তাদের উৎপাদিত কৃষিপণ্য দ্রুত বাজারজাত করা সম্ভব হচ্ছে। এছাড়া চরাঞ্চলে পালিত কুরবানির পশু জেলা সদর, বিভিন্ন উপজেলার হাট-বাজার ও দেশের বিভিন্ন এলাকায় নিয়ে বাজারজাত করা যাচ্ছে।
সারিয়াকান্দির কালিতলা নৌঘাটে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় যমুনা নদীতে এখন নাব্যতা সংকট নেই। এ ঘাট থেকে দূরপাল্লার সব ধরনের নৌকা খুব সহজে চলাচল করছে। এছাড়া কিছুদিন আগে বন্ধ হওয়া সব নৌরুট চালু হয়েছে। এতে ওইসব রুটে চলাচলকারী জনগণ ও নৌকার মালিকদের মাঝে স্বস্তি দেখা দিয়েছে।
কালিতলা ঘাটের মাঝি মিজানুর রহমান, সুজন মিয়া প্রমুখ জানান, গত খরায় যমুনা নদীর বিভিন্ন এলাকায় নাব্যতা সংকট দেখা দেয়। চর জেগে ওঠায় নৌকা চলাচল বিঘ্নিত হয়। এতে ঘাট স্থানান্তর ও কয়েকটি রুটে নৌকা চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। এখন নদীতে জোয়ার আসায় তারা বাধাহীনভাবে নৌকা চালাতে পারছেন। আয় হওয়ায় সংসারের অভাব কেটে গেছে।
বগুড়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী নাজমুল হক বলেন, উজানে ভারি বৃষ্টিপাতের কারণে যমুনা ও বাঙালি নদীতে পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে বর্তমানে দুই নদীতেই পানি স্থিতিশীল হয়েছে। আশা করা যাচ্ছে, দুই-একদিনের মধ্যে পানি কমে যাবে। তারপর আবারও বাড়বে। আগামী জুন মাসের ১৫ তারিখ পর্যন্ত পানি এ রকম কমবেশির মধ্যেই থাকবে। তবে জুন মাসের শেষের দিক থেকে পানি একেবারে স্থায়ীভাবে বাড়তে শুরু করবে। এ মুহূর্তে পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করার কোনো আশঙ্কা নেই।