ঢাকা , মঙ্গলবার, ০৪ নভেম্বর ২০২৫ , ২০ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
রাজশাহী-১ আসনে বিএনপির মনোনয়ন পেলেন শরিফ উদ্দিন প্রাথমিক তালিকায় নেই রুমিন ফারহানার নাম রাজশাহী-৬ (বাঘা-চারঘাট) আসনে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সাঈদ চাঁদকে মনোনয়ন ​চারঘাটের বড়াল নদে ডুবে দুই স্কুলছাত্রের মৃত্যু মোহনপুরে বিনা মূল্যে কৃষককের মাঝে বীজ ও সার বিতারণ নওগাঁ-৬ (আত্রাই-রাণীনগর) আসনে বিএনপির মনোনয়ন পেলেন শেখ রেজাউল ইসলাম রেজু নগরীতে প্রতিবেশীর বিরুদ্ধে নারীর মারধরের অভিযোগ, প্রতিপক্ষের অস্বীকার পাবনা ৪টি আসনে প্রার্থীর নাম ঘোষণা করলো বিএনপি রংপুর রেঞ্জে ডিআইজির লালমনিরহাট সদর থানা পরিদর্শন পাবনায় বিসিকের আয়োজনে ১০ দিনব্যাপি উদ্যোক্তা মেলা শুরু তাহিয়্যাতুল মসজিদ আদায়ে রাসূল (ছা.) এর নির্দেশনা পুণ্ড্র ইউনিভার্সিটিতে ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের সেমিনার অনুষ্ঠিত তানোরে পশুহাটে ময়লার ভাগাড় জনমনে ক্ষোভ নিয়ামতপুরে বন্যার পানিতে নেমে কৃষকের মৃত্যু নিয়ামতপুরে বিনামূল্যে কৃষি প্রণোদনা বিতরণ বাঘায় গৃহবধূ মুন্নির মৃত্যু: আত্মহত্যা নাকি পরিকল্পিত হত্যা? তদন্ত দাবি এলাকাবাসীর কে কি লিখছে, তাতে যায় আসে না: ভাবনা যৌন নিপীড়নের সময় ‘আমি তোমাদের মায়ের বয়সী’ বলে কাঁদেন সুদানি নারী ফরিদপুরে দুই গ্রামবাসীর মধ্যে সংঘর্ষ, আহত ১৫ ধৈর্যের বিনিময় আল্লাহর ভালোবাসা

তানোরে ডিএপি সারের ‘কৃত্রিম সংকটে’ খরচ বাড়ছে কৃষকের

  • আপলোড সময় : ০৩-১০-২০২৫ ০৬:১০:৫৫ অপরাহ্ন
  • আপডেট সময় : ০৩-১০-২০২৫ ০৬:১০:৫৫ অপরাহ্ন
তানোরে ডিএপি সারের ‘কৃত্রিম সংকটে’ খরচ বাড়ছে কৃষকের তানোরে ডিএপি সারের ‘কৃত্রিম সংকটে’ খরচ বাড়ছে কৃষকের
রাজশাহীর তানোরে সরকার নির্ধারিত পরিবেশকের (ডিলার) মিলছে না সার, ডাই অ্যামোনিয়াম ফসফেট (ডিএপি) সারের কৃত্রিম সংকটে খরচ বাড়ছে কৃষকের। তবে ডিলারদের ঘরে সার না থাকলেও খোলাবাজারে বেশী দাম দিলেই সার মিলছে। চাষিদের ডিএপি সার ব্যবহারের জন্য উৎসাহিত করছে কৃষি বিভাগ। কিন্তু তানোরে সরকার নির্ধারিত পরিবেশকদের (ডিলার) কাছে গিয়ে প্রয়োজন অনুযায়ী সারটি পাচ্ছেন না কৃষকেরা। যদিও কৃষি বিভাগ বলছে, ডিএপির পর্যাপ্ত সরবরাহ রয়েছে। কৃষকদের অভিযোগ, চাহিদা বাড়ায় এই সারের কৃত্রিম সংকট তৈরি করা হয়েছে। ফলে বাজার থেকে বেশি দামে তাঁদের কিনতে হচ্ছে।

মাঠপর্যায়ে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে,  বিভিন্ন এলাকার খুচরা দোকানে ‘বাংলা ডিএপি’ সার ৫০ কেজির প্রতি বস্তা ২ হাজার ২০০ থেকে ২ হাজার ৩০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বেসরকারিভাবে আমদানি করা ‘ডিকে ব্রান্ডের’ ডিএপি ১ হাজার ৭০০ টাকা এবং বিএডিসির সার ১ হাজার ৩০০ থেকে ১ হাজার ৩৫০ টাকা বস্তা হিসাবে চাষিরা কিনতে বাধ্য হচ্ছেন। অথচ যেকোনো ধরনের ডিএপি সারের নির্ধারিত মূল্য ১ হাজার ৫০ টাকা বস্তা। কৃষকেরা বলেন, তদারকির অভাবে এই সার চলে যাচ্ছে খুচরা বিক্রেতা ও কীটনাশক বিক্রির দোকানে। সেখান থেকেই চাষিদের বেশি দামে কিনতে হচ্ছে। পরিবেশকদের কাছে সার থাকলেও প্রান্তিক চাষিদের কাছে তা বিক্রি করা হচ্ছে না। ‘সরবরাহ শেষ’ দাবি করে আগামী মাসে যোগাযোগ করতে বলছেন পরিবেশকেরা।

জানা গেছে, রাজশাহী জেলার জন্য সেপ্টেম্বর মাসের ডিএপি সারের চাহিদা ছিল ২ হাজার ৫২১ মেট্রিক টন। গত ১৮ আগস্ট সমপরিমাণ সার বরাদ্দ করা হয়েছে। একই সঙ্গে সরকার নির্ধারিত মূল্যে কৃষক পর্যায়ে বিতরণ নিশ্চিত করার জন্য বলা হয়েছে।উপজেলার বাধাইড় ইউনিয়নের (ইউপি) বিসিআইসি সার ডিলার মেসার্স নাবিলা ট্রেডার্স-এর স্বত্বাধিকারী সেলিম।কিন্ত্ত ব্যবসা দেখভাল করেন বাবু। বাবু বলেন,গত সেপ্টেম্বর মাসে প্রায় সাড়ে ২৫ মেট্রিক টন ডিএপি সার বরাদ্দ হয়েছে। সার উত্তোলন ও গুদামে মজুদ করা আছে।এখন ধানে ডিএপি সারের প্রয়োজন নাই,তাই কৃষি কর্মকর্তা এখন ডিএপি সার বিক্রি করতে নিষেধ করেছেন। তবে যারা আসছে তাদের কিছু কিছু করে সার দেয়া হচ্ছে।স্থানীযরা জানান,সেলিম মান্দা উপজেলার তেঁতুলিয়া ইউপির বাসিন্দা। সাবাইহাটেও তার সারের দোকান রয়েছে,তানোরের বরাদ্দের সার কৌশলে সেখানেও বিক্রি করেন। তিনি অর্থের বিনিময়ে  বাধাইড় ইউপির নাগরিকত্ব সনদ নিয়ে ডিলারসীপ নিয়েছেন বলে কৃষকেরা অভিযোগ তুলে বলেন, সরেজমিন অনুসন্ধান করা হলে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যাবে।

উপজেলার কলমা ইউনিয়নের (ইউপি)বিএডিসির পরিবেশক সুলতান আহমেদ। তাঁর দোকান দেখাশোনা করেন ছেলে সাখাওয়াত হোসেন। গত ২৩ সেপ্টেম্বর বিকেলে একজন কৃষক ডিএপি সারের জন্য যোগাযোগ করলে সাখাওয়াত হোসেন তাঁকে বলেছেন, এখন ইউরিয়া ছাড়া আর কোনো সার নেই।

খুচরা দোকানে ‘বাংলা ডিএপি’ সার ৫০ কেজির প্রতি বস্তা ২ হাজার ২০০ থেকে ২ হাজার ৩০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বেসরকারিভাবে আমদানি করা ‘ডিকে ব্রান্ডের’ ডিএপি ১ হাজার ৭০০ টাকা এবং বিএডিসির সার ১ হাজার ৩০০ থেকে ১ হাজার ৩৫০ টাকা বস্তা হিসাবে চাষিরা কিনতে বাধ্য হচ্ছেন।

এদিকে সংকটের খবর শুনে সন্ধ্যার পরে কলমা বাজারে গিয়ে দেখা যায়, সাখাওয়াত হোসেনের দোকান বন্ধ। ফোন করা হলে বাড়ি থেকে আসেন। ডিএপি সার আছে কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, তাঁর দোকানে সব ধরনের সারই আছে। দেখতে চাইলে তিনি গুদাম খোলেন। ভেতরে ডিএপি সার পাওয়া যায়। সাখাওয়াত জানান, সেপ্টেম্বর মাসের জন্য তিনি মোট ২৬ মেট্রিক টন ডিএপি সার বরাদ্দ পেয়েছিলেন, যার সাড়ে ১২ মেট্রিক টন এখনো মজুত রয়েছে।
গত বুধবার সকালে ওই ডিলারের কাছে ডিএপি সার নিতে যান চন্দনকোঠা গ্রামের কৃষক রবিউল ইসলাম। প্রতিবেদকের সঙ্গে পরিচিত এই কৃষক বলেন, সাখাওয়াত হোসেন তাঁকে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, ইউরিয়া ছাড়া আর কোনো সার নেই।

এরপর মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘আসলে ওই সব কৃষকের এখন ডিএপি সারের প্রয়োজন নেই। ওরা এখন সার নিয়ে গিয়ে মজুত করবে। এ জন্যই ওদের সার দেওয়া হয় নাই। আগামী মাসে যখন তারা আলু চাষ করবে, তখন তাদের দেওয়া হবে।’

এ বিষয়ে রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক উম্মে সালমা বুধবার বিকেলে বলেন, কোথাও বেশি দামে সার বিক্রি করার সুযোগ নেই। তাঁদের সব ধরনের সার পর্যাপ্ত পরিমাণে রয়েছে। ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি আরও বলেন, কোথাও কেউ সার না পেলে বা বেশি দাম চাইলে তাঁরা সরাসরি কৃষি অফিসে অভিযোগ করবেন, তা না করে কেন সাংবাদিকের কাছে যাচ্ছেন ? এটা কি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ?

এদিকে পরিবেশকের কাছে গিয়ে সার না পাওয়ার অভিজ্ঞতার কথা উল্লেখ করে তানোরের শংকরপুর গ্রামের কৃষক বাবলু মুঠোফোনে বলেন, তাঁর কিছু নিচু জমিতে ধান হয়েছে।কিন্ত্ত সার না পাওয়ায় ধানের জমিতে সার প্রয়োগ করতে পারেননি।

এদিকে বিভিন্ন এলাকায় পরিবেশকের দোকানের দেয়ালে ডিএপি সারের ছবিসহ কৃষি বিভাগের একটি লিফলেট লাগানো দেখা যায়। সেখানে ব্যাখা করে বলা হয়েছে, ১ বস্তা ডিএপি সার ব্যবহার করলে ১ বস্তা টিএসপি সারের সমপরিমাণ ফসফেট এবং অতিরিক্ত ২০ কেজি ইউরিয়া সারের গুণাগুণ পাওয়া যায়। অর্থাৎ একজন কৃষকের জমিতে যদি ৩০ কেজি ইউরিয়া এবং ৫০ কেজি ফসফেট সারের প্রয়োজন হয়, সেখানে এক বস্তা ডিএপি ব্যবহার করলে ফসফেটের চাহিদা পূরণ হয়ে যায় এবং ইউরিয়ার ঘাটতি থাকে মাত্র ১০ কেজি।

এ ব্যপারে তানোর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাইফুল্লাহ আহমেদের মুঠোফোন একাধিকবাবর কল করা হলেও তিনি কল গ্রহণ না করায় তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

নিউজটি আপডেট করেছেন : Admin News

কমেন্ট বক্স
সর্বশেষ সংবাদ
নগরীতে প্রতিবেশীর বিরুদ্ধে নারীর মারধরের অভিযোগ, প্রতিপক্ষের অস্বীকার

নগরীতে প্রতিবেশীর বিরুদ্ধে নারীর মারধরের অভিযোগ, প্রতিপক্ষের অস্বীকার