হাঙ্গেরির ছোট শহর সলনোক। ১৯২৯ সালের ডিসেম্বরে এখাকার একটি স্থানীয় আদালতে শুরু হয় চাঞ্চল্যকর এক বিচার। এই বিচারের কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল নাগিরেভ গ্রাম, যেখানে স্বামীদের খাবারে আর্সেনিক বিষ মিশিয়ে হত্যার অভিযোগে অভিযুক্ত হন একের পর এক নারী।
ওই সময় নিউইয়র্ক টাইমস জানিয়েছিল, প্রায় ৫০ জন নারী এ মামলায় বিচারের মুখোমুখি হয়েছেন। ১৯১১ থেকে ১৯২৯ সাল পর্যন্ত নাগিরেভে ৫০ জনেরও বেশি পুরুষকে আর্সেনিক খাইয়ে হত্যা করা হয়েছে বলে পত্রিকাটি উল্লেখ করে।
পরবর্তীতে ‘এঞ্জেল মেকার’ নামে পরিচিত হয়ে ওঠেন স্বামী হত্যাকারী ওই নারীরা। ‘এঞ্জেল মেকার’ অর্থ স্বামী বা শিশুকে হত্যা করে ‘পরলোকে পাঠানো’।
বিচারের সময়ে একটি নাম বারবার উঠে আসে; ঝুঝানা ফাজেকাশ। তিনি ছিলেন গ্রামের ধাত্রী। কিন্তু, চিকিৎসা ও রাসায়নিক বিষয়ে জ্ঞান থাকায় কার্যত স্থানীয় চিকিৎসকের ভূমিকা পালন করতেন ওই নারী। মূলত, স্থানীয় ডাক্তার বা পুরোহিতের অভাবেই গ্রামের নারীদের প্রধান ভরসা হয়ে ওঠেন তিনি।
২০০৪ সালে বিবিসিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে মারিয়া গুনিয়া নামে এক গবেষক বলেন, নারীরা ঘরের ভেতরের নির্যাতন, স্বামীদের হিংস্রতা আর অবিশ্বস্ততার কথা ফাজেকাশকে জানাতেন। তখন ফাজেকাশ বলতেন, ‘যদি সহ্য করতে না পারেন, আমার কাছে সমাধান আছে।
আর এই সমাধানটাই ছিল আর্সেনিক, যা ফাজেকাশ নিজেই তৈরি করতেন। পরবর্তী সময় যুক্তরাজ্যের দ্য টাইমস পত্রিকার তথ্যানুসারে, ফাজেকাশের বাড়ির বাগান থেকে পুঁতে রাখা বিষের শিশি উদ্ধার করা হয়।
নাগিরেভ কুনসাগ অঞ্চলের তিজা নদীর তীরে একটি ছোট কৃষিপ্রধান বসতি। সেখানে কম বয়সী নারীদেরকে বয়সে বড় পুরুষদের সঙ্গে পারিবারিকভাবে বিয়ে দেওয়া হতো। জমি, উত্তরাধিকার আর আইনি বাধ্যবাধকতা ওই সময়টায় বিবাহবিচ্ছেদকে অসম্ভব করে তুলেছিল।
১৯১১ থেকে ১৯২৯ সালের মধ্যে গ্রামের কবরস্থানে ৫০ জনের বেশি পুরুষ সমাহিত হয়। সন্দেহ ঘনীভূত হলে মরদেহগুলো উত্তোলন করা হয় এবং ৫০টির মধ্যে ৪৬টি মরদেহেই আর্সেনিকের অস্তিত্ব মেলে।
পুলিশ ফাজেকাশকে গ্রেপ্তার করতে গেলে তিনি আগেই নিজের কাছে রাখা বিষ পান করে আত্মহত্যা করেন।
স্ত্রীর হাতে স্বামীকে আর্সেনিক প্রয়োগে প্রথম হত্যাকাণ্ডটি ঘটে ১৯১১ সালে। ওই বছর ফাজেকাশ গ্রামে আসেন। তবে, তাকে একা দায়ী করা হয়নি। ১৯২৯ সাল থেকে সলনোক শহরের আদালতে ২৬ জন নারীকে বিচারের মুখোমুখি করা হয়। আটজনের মৃত্যুদণ্ড হয়, সাতজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয় এবং বাকিরা বিভিন্ন মেয়াদে সাজা পান।
স্বামীকে হত্যার পেছনে ওই নারীদের উদ্দেশ্য নিয়ে নানা তত্ত্ব রয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি কারণ হলো দারিদ্র্য, লোভ, একঘেঁয়েমি এবং প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় রুশ যুদ্ধবন্দিদের সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি হওয়া। স্বামীরা ফিরে এসে কঠোর আচরণ শুরু করলে নারীরা ক্ষুব্ধ হয়ে এমন পদক্ষেপ নেন বলে ধারণা করা হয়।
কেবল নাগিরেভই নয়, কাছের টিজাকুর্ট শহর থেকেও মৃতদেহ উত্তোলনের পর আর্সেনিকের উপস্থিতি ধরা পড়ে। যদিও সেসব ঘটনায় কাউকে দোষী সাব্যস্ত করা যায়নি। ধারণা করা হয়, পুরো অঞ্চলে মৃতের সংখ্যা ৩০০ ছাড়িয়েছে।
আজ নাগিরেভের ভয়ংকর ইতিহাস অনেকটাই বিস্মৃত। তবে মারিয়া গুনিয়া বিদ্রূপ করে বলেন, এই ঘটনার পর থেকে পুরুষদের স্ত্রীদের প্রতি আচরণে উল্লেখযোগ্য উন্নতি হয়েছিল।
ওই সময় নিউইয়র্ক টাইমস জানিয়েছিল, প্রায় ৫০ জন নারী এ মামলায় বিচারের মুখোমুখি হয়েছেন। ১৯১১ থেকে ১৯২৯ সাল পর্যন্ত নাগিরেভে ৫০ জনেরও বেশি পুরুষকে আর্সেনিক খাইয়ে হত্যা করা হয়েছে বলে পত্রিকাটি উল্লেখ করে।
পরবর্তীতে ‘এঞ্জেল মেকার’ নামে পরিচিত হয়ে ওঠেন স্বামী হত্যাকারী ওই নারীরা। ‘এঞ্জেল মেকার’ অর্থ স্বামী বা শিশুকে হত্যা করে ‘পরলোকে পাঠানো’।
বিচারের সময়ে একটি নাম বারবার উঠে আসে; ঝুঝানা ফাজেকাশ। তিনি ছিলেন গ্রামের ধাত্রী। কিন্তু, চিকিৎসা ও রাসায়নিক বিষয়ে জ্ঞান থাকায় কার্যত স্থানীয় চিকিৎসকের ভূমিকা পালন করতেন ওই নারী। মূলত, স্থানীয় ডাক্তার বা পুরোহিতের অভাবেই গ্রামের নারীদের প্রধান ভরসা হয়ে ওঠেন তিনি।
২০০৪ সালে বিবিসিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে মারিয়া গুনিয়া নামে এক গবেষক বলেন, নারীরা ঘরের ভেতরের নির্যাতন, স্বামীদের হিংস্রতা আর অবিশ্বস্ততার কথা ফাজেকাশকে জানাতেন। তখন ফাজেকাশ বলতেন, ‘যদি সহ্য করতে না পারেন, আমার কাছে সমাধান আছে।
আর এই সমাধানটাই ছিল আর্সেনিক, যা ফাজেকাশ নিজেই তৈরি করতেন। পরবর্তী সময় যুক্তরাজ্যের দ্য টাইমস পত্রিকার তথ্যানুসারে, ফাজেকাশের বাড়ির বাগান থেকে পুঁতে রাখা বিষের শিশি উদ্ধার করা হয়।
নাগিরেভ কুনসাগ অঞ্চলের তিজা নদীর তীরে একটি ছোট কৃষিপ্রধান বসতি। সেখানে কম বয়সী নারীদেরকে বয়সে বড় পুরুষদের সঙ্গে পারিবারিকভাবে বিয়ে দেওয়া হতো। জমি, উত্তরাধিকার আর আইনি বাধ্যবাধকতা ওই সময়টায় বিবাহবিচ্ছেদকে অসম্ভব করে তুলেছিল।
১৯১১ থেকে ১৯২৯ সালের মধ্যে গ্রামের কবরস্থানে ৫০ জনের বেশি পুরুষ সমাহিত হয়। সন্দেহ ঘনীভূত হলে মরদেহগুলো উত্তোলন করা হয় এবং ৫০টির মধ্যে ৪৬টি মরদেহেই আর্সেনিকের অস্তিত্ব মেলে।
পুলিশ ফাজেকাশকে গ্রেপ্তার করতে গেলে তিনি আগেই নিজের কাছে রাখা বিষ পান করে আত্মহত্যা করেন।
স্ত্রীর হাতে স্বামীকে আর্সেনিক প্রয়োগে প্রথম হত্যাকাণ্ডটি ঘটে ১৯১১ সালে। ওই বছর ফাজেকাশ গ্রামে আসেন। তবে, তাকে একা দায়ী করা হয়নি। ১৯২৯ সাল থেকে সলনোক শহরের আদালতে ২৬ জন নারীকে বিচারের মুখোমুখি করা হয়। আটজনের মৃত্যুদণ্ড হয়, সাতজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয় এবং বাকিরা বিভিন্ন মেয়াদে সাজা পান।
স্বামীকে হত্যার পেছনে ওই নারীদের উদ্দেশ্য নিয়ে নানা তত্ত্ব রয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি কারণ হলো দারিদ্র্য, লোভ, একঘেঁয়েমি এবং প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় রুশ যুদ্ধবন্দিদের সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি হওয়া। স্বামীরা ফিরে এসে কঠোর আচরণ শুরু করলে নারীরা ক্ষুব্ধ হয়ে এমন পদক্ষেপ নেন বলে ধারণা করা হয়।
কেবল নাগিরেভই নয়, কাছের টিজাকুর্ট শহর থেকেও মৃতদেহ উত্তোলনের পর আর্সেনিকের উপস্থিতি ধরা পড়ে। যদিও সেসব ঘটনায় কাউকে দোষী সাব্যস্ত করা যায়নি। ধারণা করা হয়, পুরো অঞ্চলে মৃতের সংখ্যা ৩০০ ছাড়িয়েছে।
আজ নাগিরেভের ভয়ংকর ইতিহাস অনেকটাই বিস্মৃত। তবে মারিয়া গুনিয়া বিদ্রূপ করে বলেন, এই ঘটনার পর থেকে পুরুষদের স্ত্রীদের প্রতি আচরণে উল্লেখযোগ্য উন্নতি হয়েছিল।