ঢাকা , সোমবার, ০৬ অক্টোবর ২০২৫ , ২০ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
কারাগারে অন্তরঙ্গ মুহূর্ত কাটানোর সুযোগ, ইতালিতে চালু হলো ‘সেক্স রুম’ নওগাঁয় ঝড়ে ঘরবাড়ি, গাছপালা ক্ষতিগ্রস্ত; জেলের মৃত্যু ভোলাহাটে সাপের কামড়ে একই দিনে ২ জনের মৃত্যু পুরুষগণ আল্লাহ প্রদত্ত এক অশেষ নেয়ামত রাজশাহীর শতবর্ষী বৃক্ষ রক্ষায় স্মারকলিপি প্রদান: প্রকৃতিবান্ধব উন্নয়নের দাবি রাজশাহীতে বিশ্ব শিক্ষক দিবস উদযাপিত রাজশাহীতে ভুল চিকিৎসায় গর্ভবতী গাভীর মৃত্যু, পশু চিকিৎসকের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের নীলফামারীতে এক মিনিট স্থায়ী ঘূর্ণিঝড়ে লণ্ডভণ্ড ২০টি গ্রাম নিয়ামতপুরে বিশ্ব শিক্ষক দিবস উদযাপন জঙ্গল সলিমপুরে দুই সাংবাদিকের ওপর সন্ত্রাসী হামলা দার্জিলিংয়ে রাতভর বৃষ্টি ও ভূমিধসে নিহত ১৪ পিঠ-কোমরের ব্যথা নির্মূল হয় একটি বিশেষ আসনে, পদ্ধতি শেখালেন নিকিতা শরীরের খিদে মেটাতে কর্ণকে ‘ব্যবহার’ করেছিলেন অনুষা প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৌদ্ধ ধর্মীয় নেতাদের শুভেচ্ছা বিনিময় রাণীনগরে বজ্রপাতে একজনের মৃত্যু অনূর্ধ্ব–২০ বিশ্বকাপ: জয়শূন্য ব্রাজিলের বিদায়, গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনা এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের সুখবর দিলেন শিক্ষা উপদেষ্টা ট্রাম্পের আহ্বানের পরও ইসরায়েলি হামলায় গাজায় নিহত ৭০ ধানমন্ডি লেক থেকে যুবকের মরদেহ উদ্ধার এবার দল হিসেবে আ.লীগের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হচ্ছে: চিফ প্রসিকিউটর

অটোমেশনের নামে বেসরকারি মেডিকেল ধ্বংসের ষড়যন্ত্র; ১২০০ আসন খালি

  • আপলোড সময় : ২৫-০৫-২০২৫ ০১:০৫:৪৮ অপরাহ্ন
  • আপডেট সময় : ২৫-০৫-২০২৫ ০১:০৫:৪৮ অপরাহ্ন
অটোমেশনের নামে বেসরকারি মেডিকেল ধ্বংসের ষড়যন্ত্র; ১২০০ আসন খালি ফাইল ফটো
দেশের বেসরকারি মেডিকেল কলেজে অটোমেশন বা স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে ভর্তি প্রক্রিয়া চালু হওয়ায় বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়েছে। ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীরা পছন্দমত মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। ফলে শিক্ষার্থীরা এই পেশায় আসতে নিরুৎসাহিত হচ্ছেন। এতে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা হতাশ ও সংক্ষুব্ধ। বেসরকারি মেডিকেল কলেজগুলোর অনেক আসনই ফাঁকা থেকে যাচ্ছে অটোমেশন ভর্তি প্রক্রিয়ায়। অটোমেশনের নামে বেসরকারি মেডিকেল খাতকে ধ্বংস করার ষড়যন্ত্র চলছে বলে দাবি করেছেন সচেতন অভিভাবক ও বাংলাদেশ প্রাইভেট মেডিকেল কলেজ অ্যাসোসিয়েশন। ফলে অটোমেশন পদ্ধতিতে ভর্তি পক্রিয়া বাতিল করার দাবি জানিয়েছেন তারা। 

স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, ২০২২-২০২৩ শিক্ষাবর্ষ থেকে মেডিকেল কলেজে এমবিবিএস ভর্তিতে অটোমেশন বা স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতি চালু হয়। এই পদ্ধতিতে সরকারি ও বেসরকারি মেডিকেল কলেজে মেধাতালিকার ভিত্তিতে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হয়। শিক্ষার্থীরা তাঁদের পছন্দের কলেজগুলো বেছে নিতে পারেন না। এতে প্রথমে শিক্ষার্থীদের ৫টি মেডিকেল কলেজে ভর্তির চয়েস রাখা হয়েছিল। পরবর্তীতে এই নীতি পরিবর্তন করে ছেলেদের জন্য ৬০টি মেডিকেল কলেজ ও মেয়েদের জন্য ৬৬টি চয়েস রাখা হয়েছে। 

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সর্বশেষ তথ্যমতে, ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে বেসরকারি মেডিকেল কলেজগুলোতে প্রায় ১২০০ আসন এখনো শূন্য পড়ে রয়েছে। অথচ অটোমেশন চালুর আগে বেসরকারি মেডিকেল কলেজগুলোতে একটিও আসন ফাঁকা থাকেনি। তখন প্রতি বছর গড়ে ৫৭ হাজার শিক্ষার্থী পাস করলেও সব সিট পূর্ণ হতো। বর্তমানে যদিও প্রতি বছর প্রায় ৫৫ শতাংশ শিক্ষার্থী পাস করছে, তবুও উল্লেখযোগ্য সংখ্যক সিট খালি রয়ে যাচ্ছে। বিশ্লেষকদের মতে, অটোমেশন পদ্ধতিতে শিক্ষার্থীদের কলেজ নির্বাচন করার সুযোগ সীমিত হয়ে গেছে। বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে নির্দিষ্ট এলগরিদম ও সিরিয়ালের ভিত্তিতে। এতে রাজধানীতে বসবাসকারী শিক্ষার্থীদের পাঠানো হচ্ছে গ্রামীণ এলাকার কলেজে, এবং অনেক মফস্বলের শিক্ষার্থীকে দেওয়া হচ্ছে ঢাকার অভিজাত মেডিকেল কলেজে ভর্তি সুযোগ-যা বাস্তবতা ও সক্ষমতার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। ফলে অনেকেই বরাদ্দ পাওয়া কলেজে ভর্তি না হয়ে অপেক্ষা বা উচ্চশিক্ষা থেকে সরে দাঁড়াচ্ছেন। এতে প্রতিষ্ঠানগুলো সংকটে পড়ছে এবং এর প্রভাব পড়ছে চিকিৎসা শিক্ষা কার্যক্রমেও। 

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তৈরি ভর্তি-ইচ্ছুক তালিকায় দেখা গেছে, রাজধানী ঢাকায় বেড়ে ওঠা শিক্ষার্থীরা ঢাকার বাইরে গ্রামে-গঞ্জের কোনো মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন। এক্ষেত্রে অনেক শিক্ষার্থীর ফ্যামিলি সেখানে ভর্তি করতে চাচ্ছে না, যেখানে মানিয়ে নেয়া তাদের সন্তানের পক্ষে কষ্টসাধ্য। আবার মফস্বলের অনেকে রাজধানীতে পড়ার সুযোগ পেয়েছেন। কিন্তু এখানকার ব্যয় বহন তাদের পক্ষে কঠিন। এভাবে অটোমেশন পদ্ধতি একাধিক শিক্ষার্থীর ডাক্তার হওয়ার ইচ্ছা নিমিশেই শেষ করে দিচ্ছে। 

অটোমেশন পদ্ধতিতে অনলাইনে বেসরকারী মেডিকেল ভর্তির জন্য ফরম পূরণের সময় কলেজের তালিকা যুক্ত করতে হয়। এই প্রক্রিয়ায় শিক্ষার্থী আবেদনের পর একটি নির্দিষ্ট মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পাওয়ার বিষয়টি খুদে বার্তার (এসএমএস) মাধ্যমে জানানো হয়। যার ফলে তাদের পছন্দের বিষয়টিই থাকছে না। পছন্দের মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ না পাওয়ার শিক্ষার্থীরা ডাক্তারি পড়ালেখা থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন।  

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেওয়া ১ লাখ ৩১ হাজার ৭২৯ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ৬০ হাজার ৯৫ জন ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। পরীক্ষায় পাসের হার ৪৫ দশমিক ৬২ শতাংশ। এদের মধ্যে ৩৭টি সরকারি মেডিকেলে ৫ হাজার ৩৮০ সিট পূর্ণ হলেও ৬৭টি অনুমোদিত বেসরকারি মেডিকেল কলেজের ৬ হাজার ২৯৫টি আসন পূরণ হয়নি। চলতি বছর বেসরকারি মেডিকেল কলেজগুলোতে ১২০০ সিট খালি রয়েছে। এছাড়া ভর্তি প্রক্রিয়া এখনো চলমান, যা শিক্ষার্থীদের জীবন অনিশ্চয়তার দিকে ঠেলে দিচ্ছে। আসন শূন্য থাকায় ২০২২-২৩ এবং ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষে অটোমেশনে ৩ বার মেধা তালিকা প্রেরণ করা হলেও অনেকেই তাদের পছন্দের কলেজ না পেয়ে ভর্তি হয়নি। এমন কী বিনা খরচে দরিদ্রও মেধাবী কোটাতেও পছন্দমত কলেজ না পাওয়ায় আসন পূরণ হচ্ছে না কোথাও কোথাও। 

অটোমেশন পদ্ধতির কারণে বিদেশি শিক্ষার্থীরাও বাংলাদেশে চিকিৎসা শিক্ষা গ্রহণে আগ্রহ হারাছেন। অটোমেশন চালু করার আগে ভারত, নেপাল, শ্রীলঙ্কাসহ বিভিন্ন দেশ থেকে পর্যাপ্ত শিক্ষার্থীরা ডাক্তারি পড়তে আসতেন। অটোমেশন কাউকেই তার ইচ্ছামতো খুশি করতে পারছে না। ফলে বিদেশী শিক্ষার্থীরাও বাংলাদেশে মেডিকেলে ভর্তি থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন। সরকারি নীতিমালা অনুযায়ি, বিগত ২০২১-২০২২ এবং ২০২২-২০২৩ শিক্ষাবর্ষে বিদেশী শিক্ষার্থী ৪৫ শতাংশ সম্পূর্ণ হয়েছে। কিন্তু ২০২৩-২০২৪ এবং ২০২৪-২০২৫ শিক্ষাবর্ষ থেকে কাঙ্খিত শিক্ষার্থী পাওয়া যাচ্ছে না। ফলে রাষ্ট্রীয় ভাবে মেডিকেল শিক্ষা খাত থেকে কাঙ্খিত বৈদেশিক মুদ্রা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে না। 

এক অভিভাবক ক্ষুদ্ধ হয়ে জানান, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সরকারি মেডিকেল কলেজের ক্ষেত্রে ভর্তিতে অটোমেশন পদ্ধতি চালু করতে পারে কিন্তু বেসরকারিতে অটোমেশন মানেই মানুষের অধিকার হরণ করা। যারা বেসরকারিতে পড়বে তারা টাকা দিয়েই পড়বে, যেখাতে খুশি সেখানেই পড়বে। এটা নিয়ে সরকারের হস্তক্ষেপ করা উচিত নয়। 

এ বিষয়ে জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. মুহাম্মদ আব্দুস সবুর বলেন, অটোমেশনের নামে বেসরকারি মেডিকেল কলেজে শিক্ষার্থী ভর্তিতে বড় বোঝা চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এটা নিয়ে শিক্ষার্থী, অভিভাবক, মালিকপক্ষ এমনকি চিকিৎসকদের মধ্যেও অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। এই পদ্ধতি যেন বেসরকারি মেডিকেল সেক্টর ধ্বংসের হাতিয়ার না হয় সেটি লক্ষ্য রাখতে হবে।

তিনি আরো বলেন, অটোমেশন পদ্ধতিতে মেডিকেলে ভর্তি দীর্ঘ প্রক্রিয়া। অনেক মেধাবী পছন্দের কলেজ না পেয়ে দেশের বাইরে চলে যাচ্ছে। সুতরাং সকল পক্ষের সুবিধার জন্য পুরাতন পদ্ধতিতে ফিরে যাওয়া যেতে পারে বলে আমি মনে করি।

নিউজটি আপডেট করেছেন : Rajshahir Somoy

কমেন্ট বক্স
সর্বশেষ সংবাদ
রাজশাহীতে বিশ্ব শিক্ষক দিবস উদযাপিত

রাজশাহীতে বিশ্ব শিক্ষক দিবস উদযাপিত