ঢাকা , সোমবার, ০৬ অক্টোবর ২০২৫ , ২০ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
কারাগারে অন্তরঙ্গ মুহূর্ত কাটানোর সুযোগ, ইতালিতে চালু হলো ‘সেক্স রুম’ নওগাঁয় ঝড়ে ঘরবাড়ি, গাছপালা ক্ষতিগ্রস্ত; জেলের মৃত্যু ভোলাহাটে সাপের কামড়ে একই দিনে ২ জনের মৃত্যু পুরুষগণ আল্লাহ প্রদত্ত এক অশেষ নেয়ামত রাজশাহীর শতবর্ষী বৃক্ষ রক্ষায় স্মারকলিপি প্রদান: প্রকৃতিবান্ধব উন্নয়নের দাবি রাজশাহীতে বিশ্ব শিক্ষক দিবস উদযাপিত রাজশাহীতে ভুল চিকিৎসায় গর্ভবতী গাভীর মৃত্যু, পশু চিকিৎসকের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের নীলফামারীতে এক মিনিট স্থায়ী ঘূর্ণিঝড়ে লণ্ডভণ্ড ২০টি গ্রাম নিয়ামতপুরে বিশ্ব শিক্ষক দিবস উদযাপন জঙ্গল সলিমপুরে দুই সাংবাদিকের ওপর সন্ত্রাসী হামলা দার্জিলিংয়ে রাতভর বৃষ্টি ও ভূমিধসে নিহত ১৪ পিঠ-কোমরের ব্যথা নির্মূল হয় একটি বিশেষ আসনে, পদ্ধতি শেখালেন নিকিতা শরীরের খিদে মেটাতে কর্ণকে ‘ব্যবহার’ করেছিলেন অনুষা প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৌদ্ধ ধর্মীয় নেতাদের শুভেচ্ছা বিনিময় রাণীনগরে বজ্রপাতে একজনের মৃত্যু অনূর্ধ্ব–২০ বিশ্বকাপ: জয়শূন্য ব্রাজিলের বিদায়, গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনা এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের সুখবর দিলেন শিক্ষা উপদেষ্টা ট্রাম্পের আহ্বানের পরও ইসরায়েলি হামলায় গাজায় নিহত ৭০ ধানমন্ডি লেক থেকে যুবকের মরদেহ উদ্ধার এবার দল হিসেবে আ.লীগের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হচ্ছে: চিফ প্রসিকিউটর

মিয়ানমারে যাচ্ছে খাদ্য, ওষধ, নির্মানসামগ্রী,সার, বিনিময়ে আসছে ইয়াবাসহ নানা মাদক! নেশাদ্রব্যে দিশেহারা যুবসমাজ

  • আপলোড সময় : ০৪-০৯-২০২৫ ০৫:০১:৫৪ অপরাহ্ন
  • আপডেট সময় : ০৪-০৯-২০২৫ ০৫:০১:৫৪ অপরাহ্ন
মিয়ানমারে যাচ্ছে খাদ্য, ওষধ, নির্মানসামগ্রী,সার, বিনিময়ে আসছে ইয়াবাসহ নানা মাদক! নেশাদ্রব্যে দিশেহারা যুবসমাজ মিয়ানমারে যাচ্ছে খাদ্য, ওষধ, নির্মানসামগ্রী,সার, বিনিময়ে আসছে ইয়াবাসহ নানা মাদক! নেশাদ্রব্যে দিশেহারা যুবসমাজ
মিয়ানমার সীমান্ত দিয়ে অভিনব কৌশলে ইয়াবা ও আইসের মতো মাদকদ্রব্য বাংলাদেশে প্রবেশ করছে, যার বিনিময়ে দেশ থেকে পাচার হচ্ছে খাদ্য, নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য সামগ্রী, জীবন রক্ষাকারী ঔষধ, নির্মানসামগ্রী এবং বাংলাদেশের কৃষকের জন্য ভর্তুকি দেওয়া সার ও কীটনাশক সামগ্রী। আরাকান রাজ্যে আরাকান আর্মি (এ এ)’র নিয়ন্ত্রন প্রতিষ্টার পর ক্ষণে ক্ষণে যুদ্ধাবস্থা বিরাজমান থাকায় আরাকান আর্মির কাছে খাদ্য সংকট, অর্থসংকট তীব্র থেকে তীব্রতর হচ্ছে। অন্যদিকে আরাকান রাজ্যে গড়ে উঠা শতাধিক ইয়াবা কারখানাসমুহ তাদের কুক্ষিগত হবার কারনে এখন তারা ইয়াবা ও অন্যান্য মাদকের বিনিময়ে বাংলাদেশ থেকে চিনি, সার, সিমেন্ট,টাইলস, জ্বালানি তেল, শুঁটকি, চিংড়ি পোনা, শাড়ি, কসমেটিকস, মোবাইল ফোন, সার ও কীটনাশকসহ বিভিন্ন পণ্য মিয়ানমারের আরাকান আর্মির কাছে পাচার হচ্ছে। এসব পণের বিনিময়ে ইয়াবা, আইস এবং অন্যান্য মাদকদ্রব্য বাংলাদেশে আনা হচ্ছে। ফলে মরণ নেশা ইয়াবার প্রবেশ রোধ করা কোনভাবেই সম্ভব হচ্ছেনা। অনেক সময় শষ্যের ভিতরে ভুত ভর করে বলে, ভুত তাড়ানো সম্ভব হয় না বলে এলাকায় চাওর আছে।

এসব বিষয়ে কোস্ট গার্ড ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের বক্তব্য ও তথ্য স্পষ্ট। তাদের তথ্যানু্যায়ী, এই পাচারকাজে মাছ ধরার নৌযান ব্যবহার করা হচ্ছে, যা সাগরপথে ও নাফ নদ হয়ে টেকনাফ, নাইক্ষ্যংছড়ি এবং থানচির দুর্গম এলাকা দিয়ে দেশে প্রবেশ করছে। এই মাদক তারপর ১৭টি পথে দেশের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে, যাতে শত শত বাহক জড়িত। এই মাদক পাচারের পেছনে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠাকারী সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান আর্মি এবং ট্রান্স ন্যাশনাল সিন্ডিকেটের সক্রিয় ভূমিকা রয়েছে। সুত্রে জানা যায়, জীবন রক্ষাকারী ওষধ, খাদ্য, নির্মাণসামগ্রী, কৃষি উপকরণসহ বিভিন্ন পণ্যের বিনিময়ে মিয়ানমার থেকে ইয়াবা, আইস, স্বর্ণসহ অন্যান্য মাদক দ্রব্য নিয়ে আসতে সংশ্লিষ্ট চক্রগুলো ততপর রয়েছে।

 

কোস্ট গার্ড, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরসহ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য সূত্রে জানা গেছে, এসব পণ্যের বিনিময় হয় সাগরের মিয়ানমার অংশে। বিশেষ করে মাছ ধরার নৌযানে পণ্য নেওয়া হয় মায়ানমারের আরাকান আর্মির সদস্যদের কাছে। এ কাজে সক্রিয় রয়েছে অনেকগুলো সিন্ডিকেট চক্র। রাখাইন রাজ্যে আরাকান আর্মির নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার পর থেকেই এই অঞ্চল নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের জন্য বাংলাদেশের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে।

 

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম দপ্তরের উপপরিচালক হুমায়ুন কবির খন্দকার জানান, ট্রান্স ন্যাশনাল সিন্ডিকেটের মাধ্যমে এই পাচারকাজ পরিচালিত হচ্ছে। এই সিন্ডিকেটের সদস্যরা মিয়ানমার ও টেকনাফ সীমান্তে সক্রিয়। আগে ইয়াবার বিনিময়ে ডলার, টাকা বা স্বর্ণ ব্যবহৃত হলেও, বর্তমানে যুদ্ধ পরিস্থিতির কারণে আরাকান আর্মি পণ্যের বিনিময়ে ইয়াবা ও আইস সরবরাহ করছে।

 

এসব পণ্যের বিনিময়ে সেখান থেকে ইয়াবাসহ বিভিন্ন মাদকদ্রব্য নৌযানে আনা হচ্ছে সাগর ও নদী ব্যবহার করে।

 

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের স্থানীয় একাধিক সূত্র জানায়, মায়ানমার থেকে সাগরপথে নৌযানে ইয়াবার চালান এনে নাফ নদ পার করে তা টেকনাফ, নাইক্ষ্যংছড়ি ও থানচি উপজেলার বিভিন্ন দুর্গম এলাকায় নেওয়া হচ্ছে। 

সূত্রে জানা যায়, আগে ইয়াবা ও আইসের বিনিময় হতো ডলার, টাকা বা স্বর্ণের বিনিময়ে। কিন্তু মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে আরাকান আর্মির কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠার পর পরিবর্তন এসেছে আগের বিনিময় পদ্ধতিতে। কোস্ট গার্ডের মিডিয়া কর্মকর্তা লে. কমান্ডার মো. সিয়াম-উল-হক সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, পাচারকারীদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে, বাংলাদেশ থেকে নিত্যপ্রয়োজনীয় বহু দ্রব্য আরাকান আর্মির কাছে বিক্রি করা হচ্ছে। তার বিনিময়ে মূলত ইয়াবা সংগ্রহ করে বাংলাদেশে আনা হচ্ছে। 

মুলতঃ দেশের দক্ষিণ সীমান্তের কক্সবাজার জেলার টেকনাফের জালিয়াপাড়া, সেন্ট মার্টিন দ্বীপ, শাহপরীর দ্বীপ, টেকনাফ সদর, সাবরাং, সাউথপাড়া, ধুমধুমিয়া, জদিপাড়া, সাউথ হ্নীলা, লেদাপাড়া, চৌধুরীপাড়া, নোয়াপাড়া, হোয়াইক্যং, নাইক্ষ্যংছড়ির তুমরু, ঘুংধুম, ফাত্রাজিরি, আলিকদম, উখিয়ার কাটাখালী, বালুখালী, থাইংখালী, আঞ্জুমান পাড়া, রহমতেরবিল, কাটাপাহাড়, ইনানী, মনখালী, শামলাপুর প্রভৃতি এলাকা দিয়ে এসব অবৈধ পণ্যসামগ্রী আদান প্রদান ও বিনিময় হয়ে থাকে। বিনিময়ের মাধ্যম হিসেবে ইয়াবা হওয়ায়, ইয়াবার প্রবেশ ঠেকানো ও বন্ধ করা কোনভাবেই সম্ভব হচ্ছে না। ইয়াবা নির্মুলের জন্য কক্সবাজারে বিভিন্ন বাহিনীর দ্বারা টাস্কফোর্স গঠন করার পরেও তা নিয়ন্ত্রন করা কঠিন হচ্ছে। ফলে অবারিত মাদক ও ইয়াবার অভয়ারণ্য হয়ে উঠেছে পুরো দেশ। পাশ্ববর্তী দেশ ভারত ও মিয়ানমার থেকে মাদকের অনুপ্রবেশ ঘটছে বাংলাদেশে। জল ও স্থলপথে দেদারসে মাদক আসছে। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর (ডিএনসি) বলছে, আন্তর্জাতিক মাদক চোরাচালানের রুট ‘গোল্ডেন ট্রায়াঙ্গেল’ এবং ‘গোল্ডেন ক্রিসেন্ট’-এর একেবারে কেন্দ্রে বাংলাদেশ। প্রবেশপথ হিসেবে দেশের সীমান্তসংলগ্ন ১৮ জেলার ১০৫টি পয়েন্ট মাদকের প্রধান রুট হিসেবে চিহ্নিত করেছে প্রতিষ্ঠানটি। ফলে ইয়াবা, মাদক নিয়ন্ত্রন করা খুবই চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ছে।

 অন্যদিকে, জাতিসংঘের মাদক নিয়ন্ত্রণ সংস্থার (ইউএনওডিসি) তথ্য বলছে, বাংলাদেশে যত মাদক ঢুকছে, এর মাত্র ১০ শতাংশ ধরা পড়ছে। 

ডিএনসির তথ্যমতে দেশে এখন পর্যন্ত যেসব মাদক উদ্ধার হয়েছে তা দুই প্রতিবেশী দেশের সীমান্ত এলাকা থেকে আসছে। ভারত ও মিয়ানমার সীমান্ত দিয়ে দেশে প্রবেশকৃত মাদকের মধ্যে ইয়াবা, হেরোইন, কোকেন, আফিম, গাঁজা, ক্রিস্টাল মেথ বা আইস, ফেনসিডিল, ট্যাপেনটাডোল, এসকাফ সিরাপ ও ইনজেকটিং ড্রাগ অন্যতম। এগুলো শহর থেকে গ্রামগঞ্জেও ছড়িয়ে পড়ছে। 

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বেসরকারিভাবে দেশে ১ কোটিরও বেশি মাদকাসক্ত রয়েছে। বছরে মাদকের পেছনে খরচ হয় আনুমানিক ৬০ হাজার কোটি টাকা। এ ব্যবসায় পৃষ্ঠপোষক, ব্যবসায়ী, বাহক ও বিক্রির নেটওয়ার্কে কাজ করে প্রায় ২ লাখ মানুষ। প্রতি বছরই বাড়ছে এ সংখ্যা। বাংলাদেশ থেকে মাদকের কারণে প্রতি বছর পাচার হয়ে যায় ৪৮১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বা প্রায় ৫ হাজার ১৪৭ কোটি টাকা। নেশাজাতীয় দ্রব্যের বিস্তারের এ সর্বনাশা চিত্র যেভাবে আর্থিক ও শারীরিক ক্ষতি করছে, সেভাবে একটি প্রজন্মের চিন্তার জগতে বন্ধ্যত্ব সৃষ্টি করছে। উঠতি বয়সি যুবকসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ মাদকের মরণনেশায় জড়িয়ে পড়ছে। এ বিষয়ে ডিএনসির সহকারী পরিচালক (জনসংযোগ) মোস্তাক আহমেদ জানান, সীমান্তের জেলাগুলোর বিভিন্ন পয়েন্টের মাদক কারবারি, গডফাদার ও পৃষ্ঠপোষকদের তালিকা তৈরি করা হয়েছে। তালিকা ধরে অভিযান চালিয়ে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। মাদকের প্রবাহ ঠেকাতে সীমান্ত এলাকায় অন্য বাহিনীর সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করা হচ্ছে।

অন্যদিকে কৃষিপ্রধান দেশের মুল উপজীব্য কৃষিকে ও কৃষককে রক্ষা করার জন্য সরকার থেকে ভর্তুকিপ্রাপ্ত শত শত টন ইউরিয়া সার অনেকটা বাধাহীনভাবে প্রতিদিন মিয়ানমারে পাচার হয়ে যাচ্ছে। এক্ষেত্রে সীমান্ত এলাকার পাশাপাশি চট্টগ্রাম-কক্সবাজার সড়কপথ ও কর্ণফুলীর নদীর মোহনা ও বিভিন্ন উপকূলীয় এলাকা দিয়ে সাগরপথে চোরাকারবারিরা কৃষির অন্যতম উপকরণ মূল্যবান এই সার পাচার করে দিচ্ছে। দেশে উৎপাদিত এবং সরকারিভাবে বিদেশ থেকে আমদানি করা ভর্তুকি মূল্যের এই সার পাচার হওয়ায় কৃষক ও কৃষি অর্থনীতি বড় ধরনের ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। সরকারের আর্থিক গচ্চাও কম নয়। বিপরীতে চোরাকারবারিরা লুফে নিচ্ছে বাড়তি মুনাফা। তবে এর চেয়েও ভয়ংকর বিষয় হচ্ছে-এসব সারের বিপরীতে মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে ঢুকছে ইয়াবা, আইসসহ বিভিন্ন ধরনের মরণঘাতী মাদকের চালান। বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের একাধিক চোরাকারবারি সিন্ডিকেট প্রশাসনকে ‘ম্যানেজ’ করেই পাচার কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। 

সূত্র জানায়, বাংলাদেশে যে সার প্রতি বস্তা ১ হাজার ২৫০ টাকা বিক্রি হয় তা মিয়ানমারে বিক্রি হয় ৬ হাজার টাকা। ফলে মিয়ানমারে পাচার করলে প্রতি বস্তায় ৪ হাজার ৭৫০ টাকা লাভ হয়। এর মধ্যে প্রশাসন ম্যানেজসহ বিভিন্ন খাতে বস্তাপ্রতি ১ হাজার টাকা ব্যয় হলেও ৩ হাজার ৭৫০ টাকা মুনাফা থাকে। বিপুল পরিমাণ এই মুনাফার লোভেই চোরাকারবারিরা ভর্তুকি মূল্যের কৃষকের এই সার মিয়ানমার পাচার করে দিচ্ছে। 

সংশ্লিষ্টরা জানান, বাংলাদেশের মুদ্রার চেয়ে মিয়ানমারের মুদ্রার মান অনেক কম হওয়ায় পাচারকারীরা পণ্যের বদলে পণ্য বিনিময় করছে। এতে এ দেশীয় পণ্য পাচারের বিপরীতে মিয়ানমার থেকে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই আসছে মাদক দ্রব্য। এতে দুদিকেই লাভবান হচ্ছে পাচারকারীরা। 

অনুসন্ধানে জানা গেছে, চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক দিয়ে ট্রাকে এবং কর্ণফুলী নদীর মোহনা, আনোয়ারাসহ বিভিন্ন উপকূল দিয়ে নৌযান ও মাছধরা ট্রালের সাগরপথে সার পাচার হচ্ছে। সড়কপথে খরচ ও ঝুঁকি খানিকটা বেশি থাকায় চোরাকারবারিরা নদীপথকেই রুট হিসাবে বেছে নেয়। চাক্তাই চামড়ার গুদাম ও ভেড়া মার্কেটের একাধিক চক্র সেখান থেকে কর্ণফুলী হয়ে নদীপথে সার পাচার করছে। 

যুবসমাজ দেশের ভবিষ্যত। তারাই দেশকে নেতৃত্ব দেবে, এগিয়ে নেবে। কথাগুলো এখন অনেকটা পুস্তকীয় এবং কথার কথায় পরিণত হয়েছে। দেশের নীতিনির্ধারকরাও বক্তব্য-বিবৃতিতে এসব কথা অহরহ বলেন। তারা অন্তরের বিশ্বাস থেকে কথাগুলো বলেন কিনা, যুবসমাজ তাদের কথার দ্বারা প্রভাবিত হন কিনা, তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহের অবকাশ রয়েছে। বাস্তবে আমরা দেখছি, তাদের এ কথার প্রতিফলন যুবসমাজের উপর খুব কমই দেখা যায়। যুবসমাজ এখন কি অবস্থায় আছে, কি সমস্যা মোকাবিলা করছে, কিভাবে ক্ষয়ে যাচ্ছে, এ নিয়ে যদি দেশের নীতিনির্ধারকদের চিন্তা ও বিচলিত থাকতেন, তবে মাদকের যে ভয়াবহ আগ্রাসন চলছে, নিশ্চয়ই এটা নিয়ে তারা সোচ্চার হতেন। যুবশক্তিকে দেশের অমূল্য সম্পদ বিবেচনা করে তার সংরক্ষণ ও পরিচর্যার পদক্ষেপ নিতেন। জাতির দুর্ভাগ্য যে, কত সরকার আসল গেলো কিন্তু কোন সরকার বা বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোকে এ নিয়ে খুব একটা কথা বলতে দেখা যায় না, সোচ্চার থাকেন না। বিভিন্ন সময়ে সরকারের তরফ থেকে মাদক নির্মূলের উদ্যোগ থাকলেও তেমন আশাজাগানীয়া সাফল্য নেই বললেই চলে। সীমান্তরক্ষাকারী ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, রাষ্ট্রীয় গোয়েন্দা বাহিনী তাদের সঠিক কাজ ঠিকভাবে সমপন্ন করছেন না বা করতে পারছেন না বলে অনেক সচেতন মহলের অভিমত। তারা শুধু তাদের নিয়মিত রুটিন কাজের মতো কাজ করে যাচ্ছেন বলে অনেকেই মনে করছেন। তাদের এই রুটিন ওয়ার্কের মাধ্যমে মাদকের ভয়াবহ আগ্রাসন রোধ করা সম্ভব হচ্ছে না। অথচ মাদক নির্মূলে প্রয়োজন কঠোর ও কার্যকর পদক্ষেপ। বিভিন্ন সময় মাদকের ভয়াবহতা নিয়ে প্রিন্ট, ইলেকট্রনিক্স ও অনলাইন মিডিয়ায় অনেক প্রতিবেদন, কভারেজ তুলে ধরা হয়। অনেকক্ষেত্রে সীমান্তরক্ষী ও আইনশৃংখলা বাহিনীর হাতে অনেকেই মাদকসহ আটক ও গ্রেফতার হন। কিন্তু মুল কুশিলব ও পালের গোদা থাকেন ধরাছোয়ার বাইরে। যারাই আটক বা ধরা পড়েন-তারা হচ্ছে চুনিপুটি। রাঘব বোয়ালরা থাকেন একেবারে নিয়ন্ত্রনের বাইরে। 

কিভাবে চোরাচালান হচ্ছে, সীমান্ত পেরিয়ে দেশে প্রবেশ করছে, দেশ থেকে কীভাবে খাদ্য, ওষধ, নির্মাণসামগ্রী সীমান্তবর্তী দেশে পাচার হচ্ছে-কীভাবে দেশের সম্পদ পাচার হচ্ছে এবং যুব সমাজ কিভাবে ধ্বংসের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে তা সবার চোখে ধরা পড়লেও তার প্রতিকার নেই। এ অবস্থা থেকে বের হয়ে আসতে হবে। দেশ প্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে এসব চোরাচালান রোধকল্পে দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, রাষ্ট্রীয় অখন্ডতা ও যুব সমাজকে রক্ষায় সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।

নিউজটি আপডেট করেছেন : Rajshahir Somoy

কমেন্ট বক্স
সর্বশেষ সংবাদ
রাজশাহীতে বিশ্ব শিক্ষক দিবস উদযাপিত

রাজশাহীতে বিশ্ব শিক্ষক দিবস উদযাপিত