ঢাকা , সোমবার, ০৬ অক্টোবর ২০২৫ , ২০ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
কারাগারে অন্তরঙ্গ মুহূর্ত কাটানোর সুযোগ, ইতালিতে চালু হলো ‘সেক্স রুম’ নওগাঁয় ঝড়ে ঘরবাড়ি, গাছপালা ক্ষতিগ্রস্ত; জেলের মৃত্যু ভোলাহাটে সাপের কামড়ে একই দিনে ২ জনের মৃত্যু পুরুষগণ আল্লাহ প্রদত্ত এক অশেষ নেয়ামত রাজশাহীর শতবর্ষী বৃক্ষ রক্ষায় স্মারকলিপি প্রদান: প্রকৃতিবান্ধব উন্নয়নের দাবি রাজশাহীতে বিশ্ব শিক্ষক দিবস উদযাপিত রাজশাহীতে ভুল চিকিৎসায় গর্ভবতী গাভীর মৃত্যু, পশু চিকিৎসকের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের নীলফামারীতে এক মিনিট স্থায়ী ঘূর্ণিঝড়ে লণ্ডভণ্ড ২০টি গ্রাম নিয়ামতপুরে বিশ্ব শিক্ষক দিবস উদযাপন জঙ্গল সলিমপুরে দুই সাংবাদিকের ওপর সন্ত্রাসী হামলা দার্জিলিংয়ে রাতভর বৃষ্টি ও ভূমিধসে নিহত ১৪ পিঠ-কোমরের ব্যথা নির্মূল হয় একটি বিশেষ আসনে, পদ্ধতি শেখালেন নিকিতা শরীরের খিদে মেটাতে কর্ণকে ‘ব্যবহার’ করেছিলেন অনুষা প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৌদ্ধ ধর্মীয় নেতাদের শুভেচ্ছা বিনিময় রাণীনগরে বজ্রপাতে একজনের মৃত্যু অনূর্ধ্ব–২০ বিশ্বকাপ: জয়শূন্য ব্রাজিলের বিদায়, গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনা এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের সুখবর দিলেন শিক্ষা উপদেষ্টা ট্রাম্পের আহ্বানের পরও ইসরায়েলি হামলায় গাজায় নিহত ৭০ ধানমন্ডি লেক থেকে যুবকের মরদেহ উদ্ধার এবার দল হিসেবে আ.লীগের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হচ্ছে: চিফ প্রসিকিউটর

২০ পরিবারের নিজস্ব ১১টি সেতু!

  • আপলোড সময় : ০১-০৯-২০২৫ ০২:২৩:৩৯ অপরাহ্ন
  • আপডেট সময় : ০১-০৯-২০২৫ ০২:২৩:৩৯ অপরাহ্ন
২০ পরিবারের নিজস্ব ১১টি সেতু! ২০ পরিবারের নিজস্ব ১১টি সেতু!
খালের পাশে বস্তি। জায়গা প্রসস্ত কম হওয়ার কারণে পাশাপাশি ২০ ঘরে প্রায় ৭০ জন মানুষের বসবাস। বিভিন্ন পেশার এসব পরিবারের সদস্যদের দিন এনে দিন খাওয়া। পানি উন্নয়ন বোর্ডের জায়গায় গড়ে উঠা বস্তিতে কেউ দুই বছর; আবার কেউ কেউ ২২ বছরের বেশি সময় ধরে বসবাস করছেন। তবে খাল পারাপারের নেই কোন ব্রীজ। তাই পরিবারগুলো বাড়িতে যাতায়াতের জন্য কাঠ ও বাঁশ দিয়ে নিজস্ব সেতু করেছেন। তাতে দেখা গেছে- একটি টিনের ঘর তৈরির খরচের চেয়ে যাতায়াতের সেতুর মূল্যই বেশি।

জানা গেছে- পুরো বস্তি এলাকা ৩০০ গজ জায়গাজুড়ে। এই বস্তিতে যাতায়াতের জন্য খালের উপরে ১১টি বাঁশ ও কাঠের সেতু তৈরি করা হয়েছে নিজস্বভাবে। এরমধ্যে ৭টি বাঁশের ও ৪টি কাঠের। তুলনামূলক বাঁশের সেতুগুলোর চেয়ে কাঠের সেতু তৈরিতে খরচ কয়েকগুন বেশি। তবে কাঠের সেতু তুলনামূলক টেকসয়ী। তাই অনেকেই তৈরি করেছেন এই সেতু। কাঠের এসব সেতু তৈরিতে খবর পড়ে কমপক্ষে ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা ও বাঁশের সেতুগুলোতে খরচ পড়ে ৭ থেকে ১০ হাজার টাকা।

রাজশাহী সিটি করপোরেশনের (রাসিক) ৩০ নম্বর ওয়ার্ডের চৌদ্দপাই থেকে বুধপাড়া গণির মোড় সড়কের পাশে পানি উন্নয় বোর্ডের জায়গায় এই বস্তি। এসব বস্তির ঘর-বাড়িগুলো টিনের তৈরি। বাড়ি করার পরে পায়ে হাটা ছাড়া জায়গা অবসিষ্ট নেই। তাই সরাসরি বাড়িতে যাতায়াতের জন্য অনেকেই তৈরি করেছেন সেতু।

তবে খালটির চৌদ্দপাই থেকে বুধপাড়া গণির মোড় পর্যন্ত তিনটি ব্রীজ রয়েছে। এরমধ্যে গণির মোড় এলাকায় একটি, মোহনপুরে যাতায়াতের জন্য একটি ও গ্রিজ ফেক্টারিতে যাতায়াতের জন্য ব্রীজগুলো তৈরি করা হয়েছে। খুব কাছাকাছি হওয়ার কারণে গ্রিজ ফেক্টারির কাছের ব্রীজ ব্যবহার করতে করে বস্তির কয়েকটি পরিবার। তবে বাকিরা দীর্ঘ পথ ঘোরার ঝামেলা এড়াতে যাতাযাতের জন্য নিজস্বভাবে তৈরি করেছে সেতু। ফলে তাদের যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ হয়েছে। তবে নিজস্ব এই সেতুগুলো অন্যের ব্যবহারের সুযোগ কম হওয়ার কারণে ঘনঘন সেতু তৈরি হয়েছে বলছেন- বস্তিবাসি।

বস্তিার বাসিন্দা নাজমুল ইসলাম বলেন- ‘তারা দুটি পরিবার মিলে কাঠের একটি সেতু করেছে। এই সেতুতে তারা যাতায়াত করেন।’ তার দাবি- অন্যরাও যাতায়ত করে। তবে তুলনায় কম। তিনি বলেন- ‘আশেপাশের সেতুগুলো দিয়ে মালিকরা যাতায়াত করতে দেয় না মানুষ। এনিয়ে মাঝে মধ্যেই বিরোধ বাঁধে। সবমিলে এই সেতুগুলোর কারণে তাদের বাড়িতে যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ হয়েছে।’

জানা গেছে- খালটি পদ্মা নদীর শ্যামপুর এলাকায় শুরু হয়েছে। শেষ হয়েছে ফলিয়ার বিলে গিয়ে। দক্ষিণদিক থেকে শুরু হওয়া খালটি উত্তরদিকে বয়ে গেছে। চৌদ্দপাই এলাকায় এই খালের পাশে সর্বপ্রথম বাড়ি করে বজলু মিয়া। কিছুদিন পরে তার পাশে বাড়ি করেন নবাব আলী। তারা দীর্ঘদিন থেকে এখানে বসবাস করছেন। তাদের বাড়ি ছাড়া, একসময় পুরোনো গ্রিজ ফ্যাক্টারি পর্যন্ত পরিত্যাক্ত জয়গাগুলোতে হলুদের চাষ হতো। রাজশাহী ফল গবেষণার পূর্বের প্রাচীর লাগোয়া জায়গাটি গেল পাঁচ বছরে বস্তিতে রূপ নিয়েছে।

খাল পাড়ের চৌদ্দপাই এলাকায় প্রায় ২৫ বছর ধরে বসবাস করছেন বজলু ও নবাব আলীর পরিবার। তবে বজলুর পরিবারের রাজশাহী-নাটোর মহাসড়ক থেমে নেমে বাড়িতে যাওয়া-আশার পথছিল। এই পথে দুই পরিবার যাতায়ত করতেন। পরবর্তিতে দুই পরিবার বাঁশ ও কাঠের সেতু তৈরি করেছেন।  

তার স্বজনরা জানায়- মূলত বাড়িতে যাতায়াতের জন্য এই বাঁশের সেতুটি তৈরি করা হয়। প্রতিবছর সেতুটি মেরামত করালাগে। অনেক সময় মেরামত না করা হলে বাঁশ ভেঙে যায়। তখন চলাচলে ঝুঁকি সৃষ্টি হয়। তাই প্রতিবছর সেতুটি মেরামত করা হয়। এই সেতুটি দিয়ে পাশের কয়েকবাড়ির লোকজন চলাচল করে।    

আরেক নারী বলেন, যার সেতু তার দখলে। কউ তেমন কারও সেতুতে হাঁটে না। অনেকেই আবার হাঁটতে দেয় না। তাই বেশিরভাগ এসব সেতুর মাঝে বাঁশের বাতার চেগারে তালা দেওয়া থাকে। সেটা কাউকে হাঁটতে না দেওয়া ছাড়াও নিরাপত্তার বিষয় থাকে। কিন্তু কেউ কারও ব্রীজ দিয়ে হাঁটে না। যার সঙ্গে যার সম্পর্ক ভালো সে হাঁটতে পায়।

বিরিন খাতুন বলেন, তার স্বামী ব্যাটারি চালিত ভ্যান গাড়ি চালায়। সেই ভ্যান গাড়ি সড়ক থেকে বাড়িতে ঢুকানো হয় সেতুর উপর দিয়ে। তাই তারা কাঠের সেতু তৈরি করেছেন। এই সেতু তৈরি করেতে দুইটা কাঠ মিস্ত্রীর দুইদিন সময় লেগেছে। তাদের সিমিন্টের খুঁটি, মেহেগুনি কাঠের বাটাম ও বাঁশ ব্যবহার করা হয়েছে। ভালো করে তৈরি করা হয়েছে। তাহলে তিন থেকে চার বছর যাবে এই সেতুটি।

কাঠ মিস্ত্রী রজব কালু বলেন, বিরিনের বাড়িতে যাওয়ার জন্য করা সেতুটি তৈরি করতে সাত হাজার টাকার কাঠ লেগেছে। এছাড়া বাঁশ ও সিমেন্টের খুঁটি রয়েছে। এছাড়া দুইজন মিস্ত্রী দুইদিন কাজ করতে হয়েছে। তাদের কাঠের সেতুটি প্রসস্ততে বড়। কারণ সেখান দিয়ে ভ্যান গাড়ি চলাচল করবে। এছাড়া যারা বাঁশের সেতু বানিয়েছেন। তাদের গুলো প্রসস্ত কম। কারণ তারা পায়ে হাটা-যাওয়া করবে।

নিউজটি আপডেট করেছেন : Rajshahir Somoy

কমেন্ট বক্স
সর্বশেষ সংবাদ
রাজশাহীতে বিশ্ব শিক্ষক দিবস উদযাপিত

রাজশাহীতে বিশ্ব শিক্ষক দিবস উদযাপিত