দেশে দুধ ও দুগ্ধজাত পণ্যের উৎপাদন এবং সরবরাহ চাহিদার তুলনায় ঘাটতি রয়েছে। আর প্রয়োজনের তুলনায় মানুষের ভোগের প্রবণতাও অনেক কম। ফলে দাঁত এবং হাড় ক্ষয়সহ মানুষের নানা স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ছে। এ পরিস্থিতিতে দুধ ও মাংসের উৎপাদন বাড়াতে ৬৯ কোটি টাকার একটি নতুন প্রকল্প গ্রহণ করেছে সরকার।
প্রফেসর ইমদাদুল হক ভেটেরিনারি সেবা কেন্দ্রের মতে, ২০২৪–২৫ অর্থবছরে দেশে দুধ উৎপাদনের পরিমাণ ছিল প্রায় ১৩.০৭৪ মিলিয়ন মেট্রিক টন। দেশের বার্ষিক দুধের চাহিদা প্রায় ১৫.৬৬৮ মিলিয়ন মেট্রিক টন। অর্থাৎ দেশে ৮৩–৮৪% চাহিদা স্থানীয়ভাবে পূরণ করা সম্ভব হলেও প্রায় ২.৬ মিলিয়ন টনের ঘাটতি রয়েছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএউচও) প্রতি ব্যক্তির জন্য দৈনিক ২৫০ মিলি লিটার দুধ গ্রহণের সুপারিশ করে, সেখানে বাংলাদেশে মাথাপিছু দৈনিক ভোগ মাত্র ৩৪ দশমিক ১ গ্রাম।
সম্প্রতি দুধ ও মাংস উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য নতুন যে প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে, তা দারিদ্র্য দূরীকরণেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে মনে করছেন প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা।
প্রকল্প সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানিয়েছে, ২০২৫-২৬ অর্থবছর থেকে ‘দুধ ও মাংস উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য প্রুভেন বুল উৎপাদন’ নামের পাঁচ বছর মেয়াদি প্রকল্পটি সরকার বাস্তবায়ন করবে। প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর (ডিএলএস) এবং বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিএলআরআই) যৌথভাবে চারটি বিভাগের ১৮টি জেলার ৯৩টি উপজেলায় এ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে।
প্রকল্পের আওতায় দেশি-ফ্রাইজিয়ান, দেশি-সাহিওয়াল ক্রস, লাল চট্টগ্রাম, পাবনা, মুন্সীগঞ্জ ও উত্তরবঙ্গের ধূসর জাতের ৪০০টি ষাঁড় বাছুর তাদের মাতৃ গাভীর গড় দুধের উপর ভিত্তি করে সংগ্রহ করা হবে। সংগৃহীত সব বাছুরের কর্মক্ষমতা পরীক্ষার পর ২০০টি ষাঁড়কে বাছাইকৃত ষাঁড় হিসেবে নির্বাচিত করা হবে। এদের প্রত্যেকটি থেকে বীর্য সংগ্রহ করা হবে এবং প্রজনন মান মূল্যায়নের পর সেরাটিকে আনুষ্ঠানিকভাবে ‘প্রুভেন বুল’ হিসেবে মনোনীত করা হবে।
প্রকল্পের নথির তথ্য অনুযায়ী গ্রামীণ এলাকায় অনেক হাইব্রিড গাভী ইতোমধ্যেই প্রতিদিন ২৫ থেকে ৩০ লিটার দুধ উৎপাদন করে। তবে, এই উৎপাদন বজায় রাখার জন্য উচ্চমানের বীর্য ব্যবহার প্রয়োজন। এ প্রকল্পের মাধ্যমে তা করা হবে।
প্রকল্পের আওতায় ৩৪ হাজার ৩৭৫ জন কৃষককে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে, যাদের মধ্যে সাড়ে সাত হাজার জন উচ্চ ফলনশীল গাভীর মালিক ‘এলিট কাউ’ কর্মসূচির আওতায় প্রণোদনা পাবেন। কৃষকদের মধ্যে প্রমাণিত ষাঁড়ের বীর্য প্রচার করা হবে এবং সহায়তা প্যাকেজের অংশ হিসেবে টিকা, ওষুধ এবং খাদ্য সরবরাহ করা হবে।
এ প্রসঙ্গে প্রকল্প পরিচালক ড. এম মোস্তাফিজুর রহমান আমার দেশকে বলেন, এ প্রকল্পের মাধ্যমে প্রজনন উচ্চ-ফলনশীল গবাদিপশুর জাত তৈরিতে সহায়তা করবে যা দুধ এবং মাংস উৎপাদন বাড়াবে।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় চিকিৎসা কেন্দ্রের ডেপুটি চিফ মেডিকেল অফিসার ডা. আব্দুল ওয়াদুদ বলেন, পরিমিত দুধ না খেলে ক্যালসিয়ামের অভাব হতে পারে, যা হাড় ও দাঁতের স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। এছাড়াও, ভিটামিন ডি এবং অন্যান্য পুষ্টি উপাদানের অভাবও দেখা দিতে পারে। বিশেষ করে শিশুদের জন্য দুধ খুব গুরুত্বপূর্ণ।
চিকিৎসকরা বলেন, দুধ একটি আদর্শ খাবার, আয়রন ও ভিটামিন সি ছাড়া এতে প্রায় সব খাদ্য উপাদানই রয়েছে। শরীরে ক্যালসিয়ামের চাহিদা পূরণে চিকিৎসক ও পুষ্টিবিদরা দুধ খেতে বলেন। কারণ, দৈনন্দিন খাবারে ক্যালসিয়ামের প্রধান উৎস দুধ ও দুগ্ধজাত খাবার। ১০০ গ্রাম দুধে ক্যালসিয়াম থাকে ৯৫০ মিলিগ্রাম। দুধের ল্যাকটোজ থেকে উৎপন্ন ল্যাকটিক অ্যাসিড ক্যালসিয়াম পরিশোষণ বৃদ্ধি করে। তাই দুধের ক্যালসিয়াম সবচেয়ে বেশি শোষিত হয়।
তবে দেশে মোট উৎপাদিত দুধের মাত্র ৭ শতাংশ ব্র্যাক, মিল্কভিটা, প্রাণের মতো বড় প্রতিষ্ঠানগুলো প্রক্রিয়াজাত করে। চাহিদার বড় অংশই পূরণ হয় আমদানি করা গুঁড়া দুধ দিয়ে। দেশে আমাদের চেয়ে বিদেশি গুঁড়া দুধের বাজার তিন গুণ বড়।
সংশ্লিষ্টদের মতে, দেশের খামারিদের তরল দুধ দিয়ে এক কেজি গুঁড়া দুধ তৈরিতে খরচ পড়ে ৪২০ টাকার মতো। আর যদি কেউ নিউজিল্যান্ড থেকে ভালো মানের গুঁড়া দুধ আমদানি করে তার খরচ পড়ে ৩৩০ টাকার মতো। ফলে বাজারে স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত গুঁড়া দুধ প্রতিযোগিতায় টিকতে পারছে না। এ কারণে দুগ্ধ প্রক্রিয়াকরণ শিল্পে নতুন বিনিয়োগ আসছে না।
এছাড়া অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, কানাডা, আয়ারল্যান্ড ও ডেনমার্কের মতো দেশগুলোতে গাভীপ্রতি উৎপাদনশীলতা অনেক বেশি। দুগ্ধ খাতে ওইসব দেশে প্রচুর ভর্তুকি দেয় সরকার। সুতরাং এ খাতকে সুরক্ষা দিতে সরকারের উদ্যোগ প্রয়োজন বলে মনে করে বিশ্লেষকরা।
প্রফেসর ইমদাদুল হক ভেটেরিনারি সেবা কেন্দ্রের মতে, ২০২৪–২৫ অর্থবছরে দেশে দুধ উৎপাদনের পরিমাণ ছিল প্রায় ১৩.০৭৪ মিলিয়ন মেট্রিক টন। দেশের বার্ষিক দুধের চাহিদা প্রায় ১৫.৬৬৮ মিলিয়ন মেট্রিক টন। অর্থাৎ দেশে ৮৩–৮৪% চাহিদা স্থানীয়ভাবে পূরণ করা সম্ভব হলেও প্রায় ২.৬ মিলিয়ন টনের ঘাটতি রয়েছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএউচও) প্রতি ব্যক্তির জন্য দৈনিক ২৫০ মিলি লিটার দুধ গ্রহণের সুপারিশ করে, সেখানে বাংলাদেশে মাথাপিছু দৈনিক ভোগ মাত্র ৩৪ দশমিক ১ গ্রাম।
সম্প্রতি দুধ ও মাংস উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য নতুন যে প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে, তা দারিদ্র্য দূরীকরণেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে মনে করছেন প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা।
প্রকল্প সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানিয়েছে, ২০২৫-২৬ অর্থবছর থেকে ‘দুধ ও মাংস উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য প্রুভেন বুল উৎপাদন’ নামের পাঁচ বছর মেয়াদি প্রকল্পটি সরকার বাস্তবায়ন করবে। প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর (ডিএলএস) এবং বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিএলআরআই) যৌথভাবে চারটি বিভাগের ১৮টি জেলার ৯৩টি উপজেলায় এ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে।
প্রকল্পের আওতায় দেশি-ফ্রাইজিয়ান, দেশি-সাহিওয়াল ক্রস, লাল চট্টগ্রাম, পাবনা, মুন্সীগঞ্জ ও উত্তরবঙ্গের ধূসর জাতের ৪০০টি ষাঁড় বাছুর তাদের মাতৃ গাভীর গড় দুধের উপর ভিত্তি করে সংগ্রহ করা হবে। সংগৃহীত সব বাছুরের কর্মক্ষমতা পরীক্ষার পর ২০০টি ষাঁড়কে বাছাইকৃত ষাঁড় হিসেবে নির্বাচিত করা হবে। এদের প্রত্যেকটি থেকে বীর্য সংগ্রহ করা হবে এবং প্রজনন মান মূল্যায়নের পর সেরাটিকে আনুষ্ঠানিকভাবে ‘প্রুভেন বুল’ হিসেবে মনোনীত করা হবে।
প্রকল্পের নথির তথ্য অনুযায়ী গ্রামীণ এলাকায় অনেক হাইব্রিড গাভী ইতোমধ্যেই প্রতিদিন ২৫ থেকে ৩০ লিটার দুধ উৎপাদন করে। তবে, এই উৎপাদন বজায় রাখার জন্য উচ্চমানের বীর্য ব্যবহার প্রয়োজন। এ প্রকল্পের মাধ্যমে তা করা হবে।
প্রকল্পের আওতায় ৩৪ হাজার ৩৭৫ জন কৃষককে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে, যাদের মধ্যে সাড়ে সাত হাজার জন উচ্চ ফলনশীল গাভীর মালিক ‘এলিট কাউ’ কর্মসূচির আওতায় প্রণোদনা পাবেন। কৃষকদের মধ্যে প্রমাণিত ষাঁড়ের বীর্য প্রচার করা হবে এবং সহায়তা প্যাকেজের অংশ হিসেবে টিকা, ওষুধ এবং খাদ্য সরবরাহ করা হবে।
এ প্রসঙ্গে প্রকল্প পরিচালক ড. এম মোস্তাফিজুর রহমান আমার দেশকে বলেন, এ প্রকল্পের মাধ্যমে প্রজনন উচ্চ-ফলনশীল গবাদিপশুর জাত তৈরিতে সহায়তা করবে যা দুধ এবং মাংস উৎপাদন বাড়াবে।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় চিকিৎসা কেন্দ্রের ডেপুটি চিফ মেডিকেল অফিসার ডা. আব্দুল ওয়াদুদ বলেন, পরিমিত দুধ না খেলে ক্যালসিয়ামের অভাব হতে পারে, যা হাড় ও দাঁতের স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। এছাড়াও, ভিটামিন ডি এবং অন্যান্য পুষ্টি উপাদানের অভাবও দেখা দিতে পারে। বিশেষ করে শিশুদের জন্য দুধ খুব গুরুত্বপূর্ণ।
চিকিৎসকরা বলেন, দুধ একটি আদর্শ খাবার, আয়রন ও ভিটামিন সি ছাড়া এতে প্রায় সব খাদ্য উপাদানই রয়েছে। শরীরে ক্যালসিয়ামের চাহিদা পূরণে চিকিৎসক ও পুষ্টিবিদরা দুধ খেতে বলেন। কারণ, দৈনন্দিন খাবারে ক্যালসিয়ামের প্রধান উৎস দুধ ও দুগ্ধজাত খাবার। ১০০ গ্রাম দুধে ক্যালসিয়াম থাকে ৯৫০ মিলিগ্রাম। দুধের ল্যাকটোজ থেকে উৎপন্ন ল্যাকটিক অ্যাসিড ক্যালসিয়াম পরিশোষণ বৃদ্ধি করে। তাই দুধের ক্যালসিয়াম সবচেয়ে বেশি শোষিত হয়।
তবে দেশে মোট উৎপাদিত দুধের মাত্র ৭ শতাংশ ব্র্যাক, মিল্কভিটা, প্রাণের মতো বড় প্রতিষ্ঠানগুলো প্রক্রিয়াজাত করে। চাহিদার বড় অংশই পূরণ হয় আমদানি করা গুঁড়া দুধ দিয়ে। দেশে আমাদের চেয়ে বিদেশি গুঁড়া দুধের বাজার তিন গুণ বড়।
সংশ্লিষ্টদের মতে, দেশের খামারিদের তরল দুধ দিয়ে এক কেজি গুঁড়া দুধ তৈরিতে খরচ পড়ে ৪২০ টাকার মতো। আর যদি কেউ নিউজিল্যান্ড থেকে ভালো মানের গুঁড়া দুধ আমদানি করে তার খরচ পড়ে ৩৩০ টাকার মতো। ফলে বাজারে স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত গুঁড়া দুধ প্রতিযোগিতায় টিকতে পারছে না। এ কারণে দুগ্ধ প্রক্রিয়াকরণ শিল্পে নতুন বিনিয়োগ আসছে না।
এছাড়া অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, কানাডা, আয়ারল্যান্ড ও ডেনমার্কের মতো দেশগুলোতে গাভীপ্রতি উৎপাদনশীলতা অনেক বেশি। দুগ্ধ খাতে ওইসব দেশে প্রচুর ভর্তুকি দেয় সরকার। সুতরাং এ খাতকে সুরক্ষা দিতে সরকারের উদ্যোগ প্রয়োজন বলে মনে করে বিশ্লেষকরা।