ঢাকা , সোমবার, ০৬ অক্টোবর ২০২৫ , ২০ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
কারাগারে অন্তরঙ্গ মুহূর্ত কাটানোর সুযোগ, ইতালিতে চালু হলো ‘সেক্স রুম’ নওগাঁয় ঝড়ে ঘরবাড়ি, গাছপালা ক্ষতিগ্রস্ত; জেলের মৃত্যু ভোলাহাটে সাপের কামড়ে একই দিনে ২ জনের মৃত্যু পুরুষগণ আল্লাহ প্রদত্ত এক অশেষ নেয়ামত রাজশাহীর শতবর্ষী বৃক্ষ রক্ষায় স্মারকলিপি প্রদান: প্রকৃতিবান্ধব উন্নয়নের দাবি রাজশাহীতে বিশ্ব শিক্ষক দিবস উদযাপিত রাজশাহীতে ভুল চিকিৎসায় গর্ভবতী গাভীর মৃত্যু, পশু চিকিৎসকের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের নীলফামারীতে এক মিনিট স্থায়ী ঘূর্ণিঝড়ে লণ্ডভণ্ড ২০টি গ্রাম নিয়ামতপুরে বিশ্ব শিক্ষক দিবস উদযাপন জঙ্গল সলিমপুরে দুই সাংবাদিকের ওপর সন্ত্রাসী হামলা দার্জিলিংয়ে রাতভর বৃষ্টি ও ভূমিধসে নিহত ১৪ পিঠ-কোমরের ব্যথা নির্মূল হয় একটি বিশেষ আসনে, পদ্ধতি শেখালেন নিকিতা শরীরের খিদে মেটাতে কর্ণকে ‘ব্যবহার’ করেছিলেন অনুষা প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৌদ্ধ ধর্মীয় নেতাদের শুভেচ্ছা বিনিময় রাণীনগরে বজ্রপাতে একজনের মৃত্যু অনূর্ধ্ব–২০ বিশ্বকাপ: জয়শূন্য ব্রাজিলের বিদায়, গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনা এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের সুখবর দিলেন শিক্ষা উপদেষ্টা ট্রাম্পের আহ্বানের পরও ইসরায়েলি হামলায় গাজায় নিহত ৭০ ধানমন্ডি লেক থেকে যুবকের মরদেহ উদ্ধার এবার দল হিসেবে আ.লীগের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হচ্ছে: চিফ প্রসিকিউটর

ভ্রমণ শুধু স্থান বদল নয়, বরং আত্মার মুক্তি: নিহা

  • আপলোড সময় : ০৭-০৮-২০২৫ ০৩:৫৪:৫২ অপরাহ্ন
  • আপডেট সময় : ০৭-০৮-২০২৫ ০৩:৫৪:৫২ অপরাহ্ন
ভ্রমণ শুধু স্থান বদল নয়, বরং আত্মার মুক্তি: নিহা ছবি: সংগৃহীত
যখনই একটু অবসর পাই, তখন আমার মন ছুটে যেতে চায় দূরে কোথাও। প্রকৃতির কোলে, সমুদ্রের ঢেউয়ের পাশে, পাহাড়ের নির্জনতায় অথবা অচেনা কোনো শহরের আলো-আঁধারিতে হারিয়ে যেতে ইচ্ছা করে। ভ্রমণ আমার কাছে শুধু স্থান বদল নয়, বরং আত্মার মুক্তি। আমি সবসময়ই বিশ্বাস করি, মানুষ যত ভ্রমণ করে, তত জানে, তত বড় হয়। জীবনের গণ্ডি কেবল চার দেয়ালের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখলে চলবে না। শহরের ক্লান্তিকর জীবন, একনাগাড়ে কাজ, সামাজিক মাধ্যমে কৃত্রিমতা থেকে মুক্ত হয়ে প্রকৃতির মাঝে নিজের আসল ‘আমি’কে খুঁজে পাওয়ার চেষ্টা করি। সম্প্রতি আমি পরিবারের সঙ্গে ঘুরে এসেছি থাইল্যান্ড। মালয়েশিয়ারও অনেক জায়গায় ঘেরা হয়েছে। দুই সপ্তাহের ট্যুর ছিল এটি। 

কাছের মানুষেরা সঙ্গে থাকলে ভ্রমণের আনন্দ বহুগুণ বেড়ে যায়। মালয়েশিয়ার অনেক লাংক উইএর সৌন্দর্য আমার মন ভালো করে দিয়েছিল। তবে যে জায়গা আমার মনে সবচেয়ে গভীরভাবে দাগ কেটেছে, সেটি হচ্ছে চিংমাই। ব্যাংকক বা ফুকেটের মতো শহুরে নয়, বরং অনেকটাই ধীরস্থির। চার পাশে পাহাড়, গাছগাছালি, আর ঐতিহ্যবাহী থাই সংস্কৃতির ছোঁয়া। চিংমাইতে বৌদ্ধমন্দিরে যাওয়া হয়েছে। মন্দিরে পা দিয়েই একটা অদ্ভুত প্রশান্তি অনুভব করি। ধূপের গন্ধ, সাদা পোশাকে ভিক্ষুদের মৃদু পদচারণা, আর ঘণ্টার মৃদু আওয়াজ... মনে হচ্ছিল সময় এখানে আটকে গেছে।

একদিন ভোরে উঠে পাহাড়ি পথে হাইকিংয়ে গিয়েছিলাম। পাখির ডাক, আর মাঝে মাঝে স্থানীয়দের গাওয়া গান ভেসে আসছিল দূর থেকে। পথের মাঝে এক জায়গা থেকে পুরো চিংমাই শহর দেখা যায়। আমি দাঁড়িয়ে শুধু চেয়ে থেকেছি। এত শান্তি, এত ভারমুক্তি এই অনুভূতির সঙ্গে কোনো দামি হোটেল, রেস্টুরেন্ট বা বিলাসিতা তুলনা হতে পারে না। চিংমাইয়ের লোকাল মার্কেটেও সময় কেটেছে খুব আনন্দে। হাতে তৈরি জিনিস, সুতি কাপড়, কাঠের হস্তশিল্প, আর ভিন্নধর্মী খাবার... প্রতিটি মুহূর্ত ছিল নতুন শেখার। 

থাইল্যান্ডের আরেকটি স্থান আমাকে অন্যরকম অভিজ্ঞতা দিয়েছে। কোসেমো ঘুরতে ভালো লেগেছে। এটি স্বর্গের মতো এক দ্বীপ। ছোট ছোট পাহাড় আর নীল সমুদ্রের মাঝে একটি দ্বীপ, যেখানে সময় যেন থেমে থাকে। চারপাশে কাচের মতো স্বচ্ছ পানি, সাদা বালুর সৈকত, আর দিগন্ত বিস্তৃত নীলাকাশ। আমি সেখানে প্রথম যেদিন পৌঁছাই, মনে হয়েছিল স্বপ্নে এসেছি। সেই ছোট দ্বীপের মধ্যে যে কত বৈচিত্র্য, কত বিস্ময়, তা ভাষায় বোঝানো কঠিন। স্বচ্ছ পানির নিচে রঙিন প্রবাল আর মাছের খেলা, আর দূরে সবুজ পাহাড়... যেন কোনো পেইন্টিংয়ের ভেতরে ঢুকে গেছি। আমি জীবনে অনেক সৈকতে গেছি, কিন্তু কোসেমোতে সূর্যাস্ত দেখার অভিজ্ঞতা আলাদা। সেখানে সূর্যটা ধীরে ধীরে ডুবে যায় সাগরের কোলঘেঁষে, আর চারদিক লালচে সোনালি আলোয় ভরে যায়। আমি অনেকক্ষণ চুপচাপ বসে সেই দৃশ্য দেখেছি। কোনো শব্দ করিনি। শুধু চেয়েছি এবং অনুভব করেছি এই মুহূর্তটিকে আমি এক জীবনে বারবার বাঁচতে চাই। কোনো জায়গায় ঘুরতে গেলে সেখানকার ছবি তুলি। এবারও তুলেছি। আবার সেসব ছবি বন্ধুদের সঙ্গে শেয়ার করতে ভুল করিনি। 

খাবারের দিক থেকেও কোসেমো ছিল দারুণ এক অভিজ্ঞতা। আমি সাধারণত লোকাল খাবার ট্রাই করি সবসময়। কোসেমোর স্থানীয় সি-ফুড আর ফলমূলের স্বাদ এখনও জিভে লেগে আছে। আর মানুষগুলো? ওরা এত হাসিখুশি, অতিথিপরায়ণ, যেন আপনজন। একদিন আমি এক ছোট রেস্তোরাঁয় থাই নারিকেল দুধে রান্না করা সি-ফুড খেয়েছিলাম। এমন স্বাদ আগে কখনও পাইনি। শপিং করতে করতে স্থানীয় লোকদের সঙ্গে গল্প করলাম ওরা কত সহজ, কত খোলামেলা! মনে হচ্ছিল, আমি কোনো বিদেশি নই, এই জায়গারই কেউ। তবে আমার ভ্রমণের প্রেম শুধু বিদেশের প্রতি নয়। দেশের ভেতরেও অনেক জায়গা আছে, যেগুলো আমাকে বারবার ডাকে। বান্দরবান তার মধ্যে অন্যতম। পাহাড়, মেঘ, ঝরনা এই তিনের একত্র সৌন্দর্য আমাকে মুগ্ধ করে। বছরে একাধিকবার বান্দরবানে যাওয়ার সুযোগ হয়েছে। কখনও পরিবার নিয়ে, কখনও একা। 

প্রকৃতির সঙ্গে কাটানো এই সময়গুলো আমাকে চাঙ্গা করে। আমি যখন পাহাড়ে থাকি, তখন জীবনকে অন্যভাবে দেখি। সেখানকার মানুষ, তাদের সরলতা, তাদের সঙ্গে কথা বললে মনে হয়, জীবন আসলে কত সহজ হওয়া উচিত। ভ্রমণ আমার কাছে শুধু বিনোদন নয়। এটি আমাকে ভালো মানুষ হতে শেখায়, পৃথিবীকে বড় করে দেখতে শেখায়। আমি বিশ্বাস করি, প্রকৃতি থেকে শিখে, মানুষ থেকে শিখে জীবনকে পূর্ণতা দেওয়া যায়। থাইল্যান্ডে আবারও যেতে মন চায়। সময় সুযোগ পেলে আবারও যাব। বিশেষ করে সেখানকার চিংমাই যেন আমার মনকে আটকে রেখেছে। সেখানে গিয়ে প্রকৃতির মায়ায় হারিয়ে যাব... সেই অপেক্ষায় আছি।

নিউজটি আপডেট করেছেন : Rajshahir Somoy

কমেন্ট বক্স
সর্বশেষ সংবাদ
রাজশাহীতে বিশ্ব শিক্ষক দিবস উদযাপিত

রাজশাহীতে বিশ্ব শিক্ষক দিবস উদযাপিত