ঢাকা , সোমবার, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫ , ৩১ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
দেশব্যাপী আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর মৌলিক প্রশিক্ষণ, দ্বিতীয় ধাপের কার্যক্রম শুরু পুঠিয়ায় ঠিকাদার ও প্রকৌশলীর অবহেলায় স্থবির ১৩টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ওয়াসরুম নির্মান কাজ, চরম ভোগান্তিতে শিক্ষার্থীরা দিশা পাটানির বাড়িতে গুলিবর্ষণ সোহাকে দেখেই যৌনাঙ্গ নাচিয়ে কুরুচিকর অঙ্গভঙ্গি! ডিজিটাল অ্যাপে পরকীয়া রমরমা চাঁপাইনবাবগঞ্জে ইয়াবা ও গাঁজাসহ মাদক কারবারী গ্রেপ্তার বাবা হত্যায় ছেলের মৃত্যুদণ্ড, স্ত্রী ও সৎমায়ের কারাদণ্ড শ্বশুরবাড়িতে জামাইয়ের ছুরিকাঘাতে শ্যালক নিহত, আহত ৫ ভিমরুলের কামড়ে শিশুর মৃত্যু দুর্গাপুর উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ‘পার্সেন্টেজ’ আদায়ের অভিযোগ এসআইয়ের বিরুদ্ধে চড় মেরে শিশুর কান ফাটিয়ে দেওয়ার অভিযোগ ডিগ্রী পরীক্ষা উপলক্ষ্যে আরএমপির গণবিজ্ঞপ্তি রাজশাহী অঞ্চলে নকল ও ভেজাল কীটনাশকে হাট-বাজার সয়লাব ইংরেজদের অভিবাসন বিরোধী আন্দোলনকে সমর্থন জানিয়ে বার্তা ইলন মাস্কের বিশ্বের সবচেয়ে সুন্দর জনপ্রিয় ১০ পর্ণ তারকা এন সি এল-এ রাজশাহী ভেন্যতে ঢাকা মেট্রোর জয় হরিপুরে প্রীতি ফুটবল টুর্নামেন্ট বেকার ছেলেকে বিয়ে করবেন কোটিপতি তানিয়া বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ৭ম শ্রেণীর ছাত্রীকে ধর্ষণ, ৮'ম শ্রেণীর ছাত্রীকে বিয়ে রাজশাহী অঞ্চলে নকল ও ভেজাল কীটনাশকে হাট-বাজার সয়লাব

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসক কে ‘আওয়ামী লীগ’ ট্যাগ দিয়ে জনি গ্রুপের হামলা

  • আপলোড সময় : ০৫-০৮-২০২৫ ০২:৫৩:৪৩ অপরাহ্ন
  • আপডেট সময় : ০৫-০৮-২০২৫ ০২:৫৬:৫৩ অপরাহ্ন
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসক কে ‘আওয়ামী লীগ’ ট্যাগ দিয়ে জনি গ্রুপের হামলা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসক কে ‘আওয়ামী লীগ’ ট্যাগ দিয়ে জনি গ্রুপের হামলা

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) চিকিৎসা কেন্দ্রে এক মেডিকেল টেকনোলজিস্টের উপর বর্বরোচিত হামলার ঘটনায় ক্যাম্পাসে তীব্র ক্ষোভ ও আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। গত বুধবার (৩০ জুলাই) দুপুরে এই ঘটনায় ভুক্তভোগী ফিজিওথেরাপিস্ট মো. গোলাম আজম ফয়সালকে ‘আওয়ামী লীগের আমলে চাকরি পেয়েছে’ অভিযোগ তুলে বিবস্ত্র করে মারধর করা হয়। হামলাকারীদের মধ্যে মো. জনি নামে একজনের নেতৃত্বে ৭-৮ জন বহিরাগত জড়িত ছিল বলে অভিযোগ উঠেছে।


ঘটনাটি ঘটে বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা কেন্দ্রের ২৩ নম্বর কক্ষে, যেখানে ফয়সাল ডিউটিরত ছিলেন। প্রত্যক্ষদর্শী ও ভুক্তভোগীর বর্ণনা অনুযায়ী, প্রথমে একজন বহিরাগত এসে ফয়সালের পরিচয় নিশ্চিত করেন। এর কিছুক্ষণ পর ৭-৮ জনের একটি দল কক্ষে প্রবেশ করে তাকে ‘আওয়ামী লীগের আমলে চাকরি পাওয়া’ অভিযোগে কোনো কথা বলার সুযোগ না দিয়ে মারধর শুরু করে। হামলাকারীরা ফয়সালকে টেনে-হিঁচড়ে চিকিৎসা কেন্দ্রের বাইরে নিয়ে এসে এলোপাতাড়ি মারধর করে এবং তার পোশাক ছিনিয়ে বিবস্ত্র করে। এ সময় ঘটনার ভিডিও ধারণের চেষ্টাকারী তিনজনের মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নিয়ে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়।

 

ভুক্তভোগী ফয়সাল বলেন, “হামলাকারীদের মধ্যে একজন আরেকজনকে ‘জনি, আর মারিস না’ বলে থামায়। তারা আমাকে চাকরিচ্যুত করার হুমকি দিয়ে চলে যায়।” তিনি আরও জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশে ভাড়া বাসায় থাকা সত্ত্বেও তিনি এখন নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন এবং হামলাকারীদের কাউকে চেনেন না, তাই মামলার বিষয়ে এখনো সিদ্ধান্ত নেননি।
 

হামলার নেতৃত্বে ছিলেন মো. জনি (৩০), রাজশাহীর মতিহার থানাধীন বিনোদপুর এলাকার দুলালের ছেলে। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, জনি বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন বলে অনেকে মনে করেন। তবে রাসিক ৩০ নম্বর ওয়ার্ডের জামায়াতে ইসলামীর সভাপতি সাইফুল ইসলাম দাবি করেন, “জনি আমাদের দলের কেউ নন। তারা সুবিধাবাদী। আমি তাকে ভালোভাবে চিনি না।” মতিহার থানার জামায়াতে ইসলামীর সভাপতি মোজ্জামেলের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
 


হামলার পর চিকিৎসা কেন্দ্রের কর্মীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। কেন্দ্রের প্রধান চিকিৎসক মাফরুহা সিদ্দিকা লিপি বলেন, “ফয়সাল আগে আওয়ামী লীগের মিছিল-মিটিংয়ে যেতেন বলে শুনেছি। এই ঘটনায় আমরা সবাই আতঙ্কিত। পর্যাপ্ত নিরাপত্তা নিশ্চিত না হলে আমাদের দায়িত্ব পালন করা কঠিন হয়ে পড়বে।” ফয়সাল প্রাথমিক চিকিৎসার পর নগরীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হন।

 

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক মাহবুবর রহমান বলেন, “একজন কর্মকর্তাকে বহিরাগতরা নির্মম ও অমানবিকভাবে মারধর করেছে। জনি নামে একজনের নেতৃত্বে এই হামলা হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে, যিনি সম্ভবত বিশ্ববিদ্যালয়-সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দা। আমরা পুলিশের সহায়তায় জড়িতদের শনাক্ত করে সর্বোচ্চ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেব।”

 

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. সালেহ হাসান নকীব বলেন, “আমি মাত্র বিষয়টি জানতে পেরেছি। প্রক্টরের সঙ্গে কথা বলব। গতকাল পুলিশের সঙ্গে ক্যাম্পাসের নিরাপত্তা নিয়ে মিটিং হয়েছে, তারা নিরাপত্তা জোরদারে কাজ করছে।”
 

এই ঘটনা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে নিরাপত্তার ঘাটতি নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন তুলেছে। সাম্প্রতিক সময়ে ক্যাম্পাসে বহিরাগতদের প্রবেশ এবং সহিংসতার ঘটনা বৃদ্ধি পেয়েছে, যা শিক্ষার্থী ও কর্মীদের মধ্যে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। ২০২৪ সালে জুলাই আন্দোলনের পর আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের প্রেক্ষাপটে রাজনৈতিকভাবে সংঘটিত হামলার ঘটনা বেড়েছে, এবং এই ঘটনাও তারই একটি অংশ বলে ধারণা করা হচ্ছে।
 

এই হামলার ঘটনা স্থানীয় সম্প্রদায় ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেকে এই ঘটনার নিন্দা জানিয়েছেন এবং ক্যাম্পাসে নিরাপত্তা বৃদ্ধির দাবি তুলেছেন। একজন শিক্ষার্থী বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ে যদি আমাদের চিকিৎসকরাও নিরাপদ না থাকেন, তাহলে আমরা কীভাবে নিশ্চিন্তে পড়াশোনা করব?”


বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এই ঘটনার তদন্তে পুলিশের সহায়তা নিচ্ছে এবং ক্যাম্পাসে নিরাপত্তা জোরদারে কাজ করছে। তবে ফয়সালের মতো ভুক্তভোগীরা এখনো আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন। এই ঘটনা কেবল বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা ব্যবস্থার দুর্বলতাই নয়, বরং বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে সহিংসতার প্রবণতাকেও তুলে ধরেছে।
 

এই ধরনের ঘটনা রোধে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন, পুলিশ এবং স্থানীয় সম্প্রদায়ের সমন্বিত পদক্ষেপ এবং দ্রুত বিচার নিশ্চিত করা এখন সময়ের দাবি। এই ঘটনা শুধু একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়, বরং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নিরাপত্তা ও সহিংসতামুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত করার জন্য জরুরি পদক্ষেপের প্রয়োজনীয়তার একটি স্পষ্ট ইঙ্গিত।


নিউজটি আপডেট করেছেন : Rajshahir Somoy

কমেন্ট বক্স
সর্বশেষ সংবাদ
বিশ্ব বসতি দিবস উদ্যাপনের প্রস্তুতি সভা অনুষ্ঠিত

বিশ্ব বসতি দিবস উদ্যাপনের প্রস্তুতি সভা অনুষ্ঠিত