বাংলাদেশে গত বছর ক্ষমতার পটপরিবর্তনকে ঘিরে কিছু অডিও এবং ভিডিও হাতে এসেছে বলে দাবি করেছে যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম বিবিসি বাংলা। সে সব তথ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে বলা হয়েছে, সে সময় ঢাকার যাত্রাবাড়ীতে পুলিশের গুলিতে কমপক্ষে ৫২ জন মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সর্বোচ্চ শক্তি প্রয়োগে অনুমতি দিয়েছিলেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
আন্দোলনকারীদের ওপর নির্বিচার গুলি চালানোর বিষয়ে বক্তব্য জানতে বাংলাদেশ পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে বাহিনীর একজন মুখপাত্র বিবিসিকে বলেন, সে সময় বাহিনীর কিছু সদস্য অতিরিক্ত বলপ্রয়োগে লিপ্ত হয়েছিলেন এবং আন্দোলনকারীদের নিয়ন্ত্রণে অপেশাদার আচরণ করেছিলেন।
বিবিসির প্রতিবেদনের মূল ভিত্তি মিরাজ হোসেন নামে এক ব্যক্তির মোবাইলে ধারণকৃত ভিডিও। সেদিন পুলিশের গুলিতে তিনি নিজেও প্রাণ হারান। পরে তার পরিবারের কাছ থেকে মোবাইলের ভিডিও ফুটেজটি সংগ্রহ করে যাচাই করে বিবিসি।
ভিডিও'র মেটাডেটা বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, সেদিন নির্বিচারে গুলিবর্ষণের ঘটনাটি শুরু হয়েছিল দুপুর দুইটা ৪৩ মিনিটে।
ভিডিওটিতে যাত্রাবাড়ী থানার মূল ফটকে বিক্ষোভকারীদের সামনে সেনাবাহিনীর একটি দলকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। এরপর হঠাৎ করেই তারা ওই এলাকা থেকে সরে যান।
এ ঘটনার কিছুক্ষণের মধ্যেই যাত্রাবাড়ী থানার ভেতরের পুলিশ সদস্যরা ফটকের সামনে অবস্থানরত বিক্ষোভকারী জনতার ওপর আকস্মিকভাবে গুলিবর্ষণ শুরু করেন।
থানার উল্টো দিকে অবস্থিত একটি ভবনের সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যাচ্ছে, পুলিশ গুলি চালানো শুরু করার পর প্রাণ বাঁচাতে গলির ভেতর দিয়ে ছুটে পালাচ্ছেন বিক্ষোভকারীরা।
ওই সময়ের আরেকটি ভিডিওতে আহতদের শরীরে লাথি মারতেও দেখা যায় পুলিশকে। এছাড়া, আগের দিন অর্থাৎ ৪ আগস্টেরও কিছু ভিডিও বিবিসি সংগ্রহ করেছে, যেখানে পুলিশকে থানা থেকে বেরিয়ে মহাসড়কের দিকে গুলি চালাতে যেতে দেখা যাচ্ছে।
দু'টি ভিডিওতেই মেশিনগান থেকে ছোড়া তিনটি গুলির শব্দ শোনা যাচ্ছে এবং থানার বাইরে একটি ট্রাক থেকে ধোঁয়া বের হতে দেখা যাচ্ছে।
অনুসন্ধানে বিবিসি দেখেছে যে, ৫ আগস্ট বিকেলে যাত্রাবাড়ী থানার সামনে ৩০ মিনিটেরও বেশি সময় ধরে গুলি চালানো হয়েছিল।
ঘটনার সময়ের কিছু ড্রোন ভিডিও বিবিসি'র হাতে এসেছে। ড্রোন ভিডিওতে মহাসড়কের ওপর হতাহতদের একাধিক মৃতদেহ পড়ে থাকতেও দেখা গেছে। ভ্যান-রিকশা এবং বাইকে করে আহতদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন আন্দোলনকারীরা।
পরবর্তী কয়েক ঘণ্টার মধ্যে আন্দোলনকারীদের একটি অংশ শাহবাগের দিকে চলে যান। আর যারা তখনও যাত্রাবাড়ীতে ছিলেন, তাদের মধ্যে একটি অংশ থানায় আগুন দেন। এ ঘটনায় পুলিশের কমপক্ষে ছয়জন সদস্য নিহত হন।
সেদিন যাত্রাবাড়ীতে অন্তত ৩০ জন বিক্ষোভকারী নিহত হন বলে প্রাথমিকভাবে জানা যাচ্ছিলো।
সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবর, নিহতদের পরিবারের সাক্ষাৎকার, হাসপাতালের নথি এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের বিভিন্ন পোস্টের সত্যতা যাচাই করার পর বিবিসির দাবি, ৫ আগস্ট যাত্রাবাড়ীতে সাধারণ মানুষ ও পুলিশ সদস্যসহ কমপক্ষে ৫৮ জন নিহত হন।
৫ আগস্টের ঘটনায় যাত্রাবাড়ী থানার তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল হাসানসহ একাধিক পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বেশ কিছু মামলা হয়েছে।
ওই ঘটনার সময় সেনা সদস্যদের ভূমিকার বিষয়ে মন্তব্য জানতে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর যোগাযোগ করা হলেও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।
এছাড়া, একটি অডিও রেকর্ডিং, যেটিকে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কথোপকথনের একটি ফাঁস হওয়া অডিও রেকর্ডিং বলা হচ্ছে, সেটি যাচাই করে বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রাণঘাতী শক্তি প্রয়োগের অনুমতি তিনি নিজেই দিয়েছিলেন।
অজ্ঞাত একজন ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তার সঙ্গে শেখ হাসিনার কথিত অডিওটিকে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণ হিসেবে গ্রহণ করা হচ্ছে।
ওই অডিওটি সম্পর্কে অবগত এক ব্যক্তির দাবি, গত ১৮ই জুলাই নিজের সরকারি বাসভবন থেকে শেখ হাসিনা ওই ফোনকলটি করেন।
চলতি বছর মার্চের শুরু থেকে ফোনালাপের অডিওটি অনলাইনে পাওয়া যাচ্ছে। বিক্ষোভের পর থেকে শেখ হাসিনার ফোনালাপ হিসেবে অসংখ্য ক্লিপ অনলাইনে প্রকাশিত হয়েছে, যার অনেকগুলোই যাচাই করা হয়নি।
অবশ্য, ১৮ জুলাইয়ের কথোপকথন হিসেবে পাওয়া রেকর্ডিংয়ের কণ্ঠের সঙ্গে শেখ হাসিনার কণ্ঠস্বরের মিল রয়েছে বলে দাবি করেছে বাংলাদেশ পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ।
বিবিসি আলাদাভাবে অলাভজনক প্রতিষ্ঠান ইয়ারশটের অডিও ফরেনসিক এক্সপার্টদের দিয়ে এই রেকর্ডিংয়ের সত্যতা যাচাই করেছে। ওই ক্লিপে কোনো রকম পরিবর্তন করার প্রমাণ পাওয়া যায়নি বলে দাবি করছে ইয়ারশট। অডিওটি কৃত্রিমভাবে তৈরি করা হয়েছে এমন সম্ভাবনাও খুবই কম বলে তারা জানিয়েছে।
                           আন্দোলনকারীদের ওপর নির্বিচার গুলি চালানোর বিষয়ে বক্তব্য জানতে বাংলাদেশ পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে বাহিনীর একজন মুখপাত্র বিবিসিকে বলেন, সে সময় বাহিনীর কিছু সদস্য অতিরিক্ত বলপ্রয়োগে লিপ্ত হয়েছিলেন এবং আন্দোলনকারীদের নিয়ন্ত্রণে অপেশাদার আচরণ করেছিলেন।
বিবিসির প্রতিবেদনের মূল ভিত্তি মিরাজ হোসেন নামে এক ব্যক্তির মোবাইলে ধারণকৃত ভিডিও। সেদিন পুলিশের গুলিতে তিনি নিজেও প্রাণ হারান। পরে তার পরিবারের কাছ থেকে মোবাইলের ভিডিও ফুটেজটি সংগ্রহ করে যাচাই করে বিবিসি।
ভিডিও'র মেটাডেটা বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, সেদিন নির্বিচারে গুলিবর্ষণের ঘটনাটি শুরু হয়েছিল দুপুর দুইটা ৪৩ মিনিটে।
ভিডিওটিতে যাত্রাবাড়ী থানার মূল ফটকে বিক্ষোভকারীদের সামনে সেনাবাহিনীর একটি দলকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। এরপর হঠাৎ করেই তারা ওই এলাকা থেকে সরে যান।
এ ঘটনার কিছুক্ষণের মধ্যেই যাত্রাবাড়ী থানার ভেতরের পুলিশ সদস্যরা ফটকের সামনে অবস্থানরত বিক্ষোভকারী জনতার ওপর আকস্মিকভাবে গুলিবর্ষণ শুরু করেন।
থানার উল্টো দিকে অবস্থিত একটি ভবনের সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যাচ্ছে, পুলিশ গুলি চালানো শুরু করার পর প্রাণ বাঁচাতে গলির ভেতর দিয়ে ছুটে পালাচ্ছেন বিক্ষোভকারীরা।
ওই সময়ের আরেকটি ভিডিওতে আহতদের শরীরে লাথি মারতেও দেখা যায় পুলিশকে। এছাড়া, আগের দিন অর্থাৎ ৪ আগস্টেরও কিছু ভিডিও বিবিসি সংগ্রহ করেছে, যেখানে পুলিশকে থানা থেকে বেরিয়ে মহাসড়কের দিকে গুলি চালাতে যেতে দেখা যাচ্ছে।
দু'টি ভিডিওতেই মেশিনগান থেকে ছোড়া তিনটি গুলির শব্দ শোনা যাচ্ছে এবং থানার বাইরে একটি ট্রাক থেকে ধোঁয়া বের হতে দেখা যাচ্ছে।
অনুসন্ধানে বিবিসি দেখেছে যে, ৫ আগস্ট বিকেলে যাত্রাবাড়ী থানার সামনে ৩০ মিনিটেরও বেশি সময় ধরে গুলি চালানো হয়েছিল।
ঘটনার সময়ের কিছু ড্রোন ভিডিও বিবিসি'র হাতে এসেছে। ড্রোন ভিডিওতে মহাসড়কের ওপর হতাহতদের একাধিক মৃতদেহ পড়ে থাকতেও দেখা গেছে। ভ্যান-রিকশা এবং বাইকে করে আহতদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন আন্দোলনকারীরা।
পরবর্তী কয়েক ঘণ্টার মধ্যে আন্দোলনকারীদের একটি অংশ শাহবাগের দিকে চলে যান। আর যারা তখনও যাত্রাবাড়ীতে ছিলেন, তাদের মধ্যে একটি অংশ থানায় আগুন দেন। এ ঘটনায় পুলিশের কমপক্ষে ছয়জন সদস্য নিহত হন।
সেদিন যাত্রাবাড়ীতে অন্তত ৩০ জন বিক্ষোভকারী নিহত হন বলে প্রাথমিকভাবে জানা যাচ্ছিলো।
সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবর, নিহতদের পরিবারের সাক্ষাৎকার, হাসপাতালের নথি এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের বিভিন্ন পোস্টের সত্যতা যাচাই করার পর বিবিসির দাবি, ৫ আগস্ট যাত্রাবাড়ীতে সাধারণ মানুষ ও পুলিশ সদস্যসহ কমপক্ষে ৫৮ জন নিহত হন।
৫ আগস্টের ঘটনায় যাত্রাবাড়ী থানার তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল হাসানসহ একাধিক পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বেশ কিছু মামলা হয়েছে।
ওই ঘটনার সময় সেনা সদস্যদের ভূমিকার বিষয়ে মন্তব্য জানতে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর যোগাযোগ করা হলেও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।
এছাড়া, একটি অডিও রেকর্ডিং, যেটিকে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কথোপকথনের একটি ফাঁস হওয়া অডিও রেকর্ডিং বলা হচ্ছে, সেটি যাচাই করে বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রাণঘাতী শক্তি প্রয়োগের অনুমতি তিনি নিজেই দিয়েছিলেন।
অজ্ঞাত একজন ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তার সঙ্গে শেখ হাসিনার কথিত অডিওটিকে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণ হিসেবে গ্রহণ করা হচ্ছে।
ওই অডিওটি সম্পর্কে অবগত এক ব্যক্তির দাবি, গত ১৮ই জুলাই নিজের সরকারি বাসভবন থেকে শেখ হাসিনা ওই ফোনকলটি করেন।
চলতি বছর মার্চের শুরু থেকে ফোনালাপের অডিওটি অনলাইনে পাওয়া যাচ্ছে। বিক্ষোভের পর থেকে শেখ হাসিনার ফোনালাপ হিসেবে অসংখ্য ক্লিপ অনলাইনে প্রকাশিত হয়েছে, যার অনেকগুলোই যাচাই করা হয়নি।
অবশ্য, ১৮ জুলাইয়ের কথোপকথন হিসেবে পাওয়া রেকর্ডিংয়ের কণ্ঠের সঙ্গে শেখ হাসিনার কণ্ঠস্বরের মিল রয়েছে বলে দাবি করেছে বাংলাদেশ পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ।
বিবিসি আলাদাভাবে অলাভজনক প্রতিষ্ঠান ইয়ারশটের অডিও ফরেনসিক এক্সপার্টদের দিয়ে এই রেকর্ডিংয়ের সত্যতা যাচাই করেছে। ওই ক্লিপে কোনো রকম পরিবর্তন করার প্রমাণ পাওয়া যায়নি বলে দাবি করছে ইয়ারশট। অডিওটি কৃত্রিমভাবে তৈরি করা হয়েছে এমন সম্ভাবনাও খুবই কম বলে তারা জানিয়েছে।
 
  অনলাইন ডেস্ক
 অনলাইন ডেস্ক  
                                 
                                                     
                                                 
                                                     
                                                 
                                                     
                                                 
                                                     
                                                 
                                                     
                                                 
                                                     
                                                 
                                                     
                                                 
                                                     
                                                 
                                                     
                                                 
                                                     
                                                 
                                                     
                                                 
                                                     
                                                 
                                                     
                                                 
                                                     
                                                 
                                                     
                                                 
                                                     
                                                 
                                     
                                 
                                                     
                                                 
                                                     
                                                 
                                                     
                                                 
                                                     
                                                 
                                                     
                                                 
                                                     
                                                 
                                                     
                                                 
                                                     
                                                 
                                                     
                                                