গত দুই অর্থবছরে দেশেই বৈধ হয়েছে ২২ হাজার ৩১৩ কোটি অপ্রদর্শিত অর্থ বা কালো টাকা। কর বাবদ সরকার পেয়েছে ২২৯ কোটি ২৭ লাখ টাকা। এমন চিত্র দেখেই জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) আশা, ৭ শতাংশ কর দিয়ে পাচার করা অর্থ দেশে ফেরত আনার সুযোগে, অন্তত ১ বিলিয়ন ডলার দেশে ফেরত আসবে।
এনবিআরের তথ্যমতে, নির্দিষ্ট হারে কর দিয়ে ২০২০-২১ অর্থবছরে ২ হাজার ২৫১ জন নিজেদের ২০ হাজার ৬৫০ কোটি টাকা অপ্রদর্শিত আয় বা কালো টাকা বৈধ করেছেন। এর মাধ্যমে ১১৩ কোটি টাকা পেয়েছে এনবিআর। ২০২১-২২ অর্থবছরে বৈধ হয়েছে ২ হাজার ৩২১ জনের ১ হাজার ৬৬৩ কোটি টাকা। এতেও আদায় হয় ১১৬ কোটি ২৭ লাখ টাকার কর। এক বছরের ব্যবধানে কালো টাকা সাদা করেছেন এমন ব্যক্তির সংখ্যা বেড়েছে ৬০ জন। গত ১৪ বছরে ৩৪ হাজার ১৭৫ কোটি টাকা অপ্রদর্শিত আয় বৈধ হওয়ার বিপরীতে সরকারের আয় ৩ হাজার ৪৬৬ কোটি ৭৫ লাখ টাকা।
গত ৫০ বছরের পরিসংখ্যানের এমন প্রেক্ষাপটে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) প্রত্যাশা, পাচার হওয়া অর্থ দেশে ফেরত আনার ক্ষেত্রে ৭ শতাংশ করের যে সুযোগটি দেয়া হয়েছে, তা অনেকেই গ্রহণ করবেন। এতে দেশে ফেরত আসবে অন্তত ১ বিলিয়ন ডলার।
অর্থনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, এ বিষয়ে যথাযথ পদক্ষেপ নেয়া হলে চাঙা হবে দেশের অর্থনীতি। এ ব্যাপারে অর্থনীতিবিদ জামাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, 'দেরিতে হলেও এটি একটি ভালো পদক্ষেপ। এতে করে আদায়কৃত অর্থ অন্যান্য খাতে ব্যয় করা যাবে- যা দেশের জন্য সুবিধা সৃষ্টি করবে।'
নির্দিষ্ট হারের কর দিয়ে পাচার হওয়া টাকা ফেরত আনা এবং অপ্রদর্শিত আয় বৈধ করার সুযোগ আছে যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানিসহ বিশ্বের ১৭টি দেশে। সবচেয়ে সফল ইন্দোনেশিয়া। দেশটিতে ২০১৬ সালে ৯ মাস মেয়াদে সুযোগ দেয়ার পর ফেরত আসে বিদেশে পাচার হয়ে যাওয়া ১১ বিলিয়ন ডলার। উন্নত দেশগুলোর সেই পথেই এবার হাঁটছে বাংলাদেশ।