০৪ ডিসেম্বর ২০২৪, বুধবার, ০২:৩১:০৯ অপরাহ্ন


লিকুইড বায়োপসি খুঁজে বের করবে ক্যানসার কোষ, রোগ ধরা পড়বে খুব তাড়াতাড়ি
স্টাফ রিপোর্টার:
  • আপডেট করা হয়েছে : ১৯-০৭-২০২২
লিকুইড বায়োপসি খুঁজে বের করবে ক্যানসার কোষ, রোগ ধরা পড়বে খুব তাড়াতাড়ি লিকুইড বায়োপসি খুঁজে বের করবে ক্যানসার কোষ, রোগ ধরা পড়বে খুব তাড়াতাড়ি


টিস্যু বায়োপসি, এক্স-রে অথবা এমআরআই স্ক্যানের থেকেও অনেক বেশি আধুনিক ও নিখুঁতভাবে ক্য়ানসার চিহ্নিত করতে লিকুইড বায়োপসি (liquid biopsy) পদ্ধতিকে কাজে লাগাচ্ছেন গবেষকরা। সেন্ট্রাল ফ্লোরিডা ইউনিভার্সিটির গবেষকরা লিকুইড বায়োপসির এমন এক পদ্ধতি আবিষ্কার করেছেন যাতে নিখুঁতভাবে ও খুব তাড়াতাড়ি ক্যানসার পরীক্ষা করা যায়। বিজ্ঞানীদের দাবি, এতে ভুলত্রুটি হওয়ার সম্ভাবনা কম এবং ক্যানসার শরীরে কতটা ছড়িয়ে পড়েছে তাও সঠিকভাবে ধরা যাবে।

শরীরে ক্যানসার বাসা বেঁধেছে কিনা অথবা গজিয়ে ওঠা টিউমার ম্যালিগন্যান্ট হয়ে গেছে কিনা তা পরীক্ষা করার জন্য বায়োপসি করেন ডাক্তারবাবুরা। টিস্যু বায়োপসি মানে হল আক্রান্ত জায়গা থেকে কোষের কিছুটা নমুনা নিয়ে সেটা পরীক্ষা করা। কিন্তু লিকুইড বায়োপসি পদ্ধতি সম্পূর্ণ আলাদা। এখানে রক্ত বা প্রস্রাবের নমুনা (liquid biopsy) নিয়ে তা পরীক্ষা করা হয়। ক্যানসার ধরতে রক্তের নমুনা নিয়েই বায়োপসি করছেন গবেষকরা। রক্তের মধ্যে ক্যানসার কোষ রয়েছে কিনা বা থাকলেও সেগুলির গতিবিধি কেমন তা জানতে বিশেষ এক ধরনের মার্কারও ব্যবহার করা হচ্ছে। এই মার্কার একেবারে চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছে ক্যানসার কোষ ঠিক কোন জায়গায় জমাট বাঁধছে, রক্তের মাধ্যমে সেগুলো কতদূরে ছড়িয়ে পড়েছে।

প্লস ওয়ান (PLOS ONE) সায়েন্স জার্নালে এই গবেষণার খবর ছাপা হয়েছে। গবেষক ড. অ্যান্নেটে খালেদ এই রিসার্চ পেপার লিখেছেন। তিনি বলছেন, বায়োপসির সময় ক্যানসার কোষ চিহ্নিত করার জন্য মার্কার লাগে। মার্কারকে বিজ্ঞানের ভাষায় বলে ‘ল্যান্ডমার্ক’ (Landmark)। এমন এক উপাদান যা দিয়ে কোনও কিছুকে শণাক্ত করা যায়। জেনেটিক মার্কার তৈরি হয় ডিএনএ সিকুয়েন্স দিয়ে। এই ডিএনএ-র বিন্যাস শরীরে ঢুকিয়ে আক্রান্ত বা সংক্রামিত কোষগুলিকে শণাক্ত করা হয়। এর জন্য নানারকম জৈব-রাসায়নিক পদ্ধতি আছে। লিকুইড বায়োপসিতে ক্যানসার কোষ ধরতে চ্যাপেরোনিন (chaperonin complex) নামে একধরনের প্রোটিন কমপ্লেক্স ব্যবহার করেছেন বিজ্ঞানীরা। ক্যানসার কোষগুলোর পুষ্টির জন্য প্রোটিন দরকার হয়। ক্যানসার কোষ তাই প্রোটিন দেখলেই সেগুলোকে নিজের দিকে টেনে নেয়। চ্য়াপেরোনিন প্রোটিন দিয়েই তাই ক্য়ানসার কোষগুলিকে ফাঁদে ফেলছেন বিজ্ঞানীরা। ক্যানসার আক্রান্ত কোষগুলোর সংস্পর্শে এলেই এই মার্কার প্রোটিন (liquid biopsy) বিশেষভাবে বদলে যাবে বা নতুন রকম চেহারা নেবে, তখনই বোঝা যাবে ক্যানসার ঠিক কোথায় ঘাপটি মেরে রয়েছে।

রোগীদের টিউমার কোষ থেকে রক্তের নমুনা নিয়ে তাতে এই প্রোটিন মার্কার দিয়ে পরীক্ষা করে সুফল পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা। তাঁরা জানাচ্ছেন, আরও বেশি পরীক্ষা করলেই বোঝা যাবে এই মার্কার কতদূর কার্যকরী হচ্ছে। তাহলেই লিকুই বায়োপসি পদ্ধতিকে ক্যানসার শণাক্তকরণের জন্য অন্যতম সেরা পদ্ধতি (liquid biopsy) হিসেবে কাজে লাগানো যাবে।