দিনের অনেকটা সময় আমরা সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যয় করে থাকি। আর এ সময় ব্যয় থেকেই সম্ভব আয় করা। সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারকারীদের বেশিরভাগ অংশ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সময় কাটান। গবেষণায় দেখা গেছে, ব্যবহারকারীরা সাধারণত এক থেকে দেড় ঘণ্টা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যয় করেন। আর যারা আসক্ত তাদের ক্ষেত্রে সময়টা আরও অনেক বেশি।
তবে এখনকার দিনে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পড়ে থাকাটাও খারাপ নয়, যদি আপনি সেখান থেকে আয়ের রাস্তা খুঁজে বের করতে পারেন। বর্তমানে প্রায় সব সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকেই আয়ের সুযোগ রয়েছে। দিন দিন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে আয়ের ক্ষেত্র আরও বাড়বে বলেও মনে করা হচ্ছে। আপনিও যদি আয় করতে চান তাহলে আপনাকে হতে হবে পরিশ্রমী এবং উদ্ভাবনী মনের অধিকারী।
অনলাইনে সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলো ব্যবহার করে আয় করা সম্ভব। সবচেয়ে মজার বিষয় হলো, বিশেষ কোনো ডিগ্রি না থাকলেও কেবল হাতে একটি স্মার্টফোন এবং অ্যাক্টিভ ইন্টারনেট কানেকশন থাকলেই অনলাইনে অর্থ উপার্জন করা সম্ভব। আর এ কাজে সহায়তা করছে বেশ কয়েকটি সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম।
টিকটক: টিকটকে ভিডিও পোস্ট করার মাধ্যমেও টাকা ইনকাম করা যায়। আমরা অনেকেই টিকটকে ভিডিও আপলোড করে থাকি। এ ভিডিও আপলোড করার মাধ্যমেও টাকা আয় করা যায়। তবে টিকটকে শিক্ষনীয় ভিভিও আপলোড করলে বেশি সাড়া পেতে পারেন। মানে যে ভিডিওগুলো থেকে মানুষ কিছু শিখতে পারে এমন ভিডিও আপলোড করুন।
মূলত টিকটকের ক্রিয়েটররা বিনোদন দেয়, উৎসাহ যোগায় এবং নিজেদের বিভিন্নভাবে তুলে ধরে। ক্রিয়েটরদের এমন কাজের জন্য তাদের সমর্থন ও পুরস্কার দেয় টিকটক কর্তৃপক্ষ। টিকটকের দেয়া পুরস্কার পেতে চাইলে নির্ধারিত কিছু শর্ত পূরণ করতে হবে।
এসব শর্তের মধ্যে আছে- সর্বনিম্ন ১০ হাজার প্রকৃত অনুসারী থাকতে হবে। পাশাপাশি সর্বশেষ ৩০ দিনে থাকতে হবে এক লাখ প্রকৃত ভিডিও ভিউ।শর্তগুলো পূরণ হলে নির্দিষ্ট কিছু দেশের টিকটক ব্যবহারকারীরা সহজেই অর্থ উপার্জন করতে পারবেন।
ইউটিউব: গতবছর ইউটিউব-এ শর্টস নামক শর্ট ভিডিও প্ল্যাটফর্ম চালু করা হয়েছে। কনটেন্ট ক্রিয়েটররা এখন ইউটিউব শর্টস-এ তাদের তৈরি করা শর্ট ভিডিও শেয়ার করতে পারেন। যেসব ব্যবহারকারীর ভিডিওগুলো সবচেয়ে বেশি ভিউ এবং লাইক পাবে, তাদের গুগল ভালোরকমের অর্থ প্রদান করবে। এর পাশাপাশি যেসব ইউটিউব চ্যানেলের কমপক্ষে ১২ মাসে চার হাজার ঘণ্টা ওয়াচ টাইম এবং এক হাজার সাবস্ক্রাইবার থাকবে, তারাও বেশ মোটা টাকা কামাতে সক্ষম হবেন।
স্নাপচ্যাট: স্নাপচ্যাট-এ কনটেন্ট বানিয়ে ও শেয়ার করে বিশ্বব্যাপী ব্যবহারকারীরা প্রতিদিন এক মিলিয়ন ডলার (প্রায় ৭.৫৭ কোটি টাকা) আয় করতে সক্ষম হচ্ছেন। এই অ্যাপের মাধ্যমে টাকা রোজগার করার জন্য ব্যবহারকারীদের শুধু তাদের স্মার্টফোন ক্যামেরা ব্যবহার করে কনটেন্ট শেয়ার করতে হবে। ব্যবহারকারীরা অ্যাপের মাধ্যমে তৈরি করা কনটেন্ট বা স্ন্যাপ, স্পটলাইট-এ সাবমিট করে উপার্জন করতে পারেন। সবার চেয়ে সেরা স্নাপ শেয়ার করতে পারলে ব্যবহারকারীরা এই অ্যাপের মাধ্যমে অর্থ উপার্জন করতে পারবেন।
ফেসুবক: কনটেন্ট ক্রিয়েট করে ফেসুবকের মাধ্যমেও আয় করা সম্ভব। এ প্ল্যাটফর্মটিকে কাজে লাগিয়ে বিভিন্নভাবে অর্থ উপার্জন করা যেতে পারে। ব্যবহারকারীরা তাদের ফেসবুক পেজ তৈরি করে উপার্জন করতে পারেন। তারা ফেসবুক পেজ করার পরে প্ল্যাটফর্মে তাদের কনটেন্ট শেয়ার করতে পারেন। শেয়ার করা কনটেন্ট ভালো ভিউ, লাইক পেলে এবং পেজ মনিটাইজ হলে এ সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম থেকেও ভালোরকম অর্থ উপার্জন করা যায়।
ইনস্টাগ্রাম: বর্তমান ডিজিটাল যুগে ঘরে বসেই ইনস্টাগ্রাম ব্যবহারের মাধ্যমে টাকা আয় করা সম্ভব। কনটেন্ট তৈরি করে এই প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে রোজগার করা যেতে পারে। কনটেন্ট ক্রিয়েটরদের দ্বারা শেয়ার করা ভিডিওর ভিউ যত বাড়বে, তার সঙ্গে তাদের ফলোয়ারের সংখ্যাও তত বাড়বে। এবং যাদের ফলোয়ারের সংখ্যা যত বেশি হবে, তত বেশি টাকা দিয়ে বিভিন্ন ব্র্যান্ড তাদের প্রোডাক্টের বিজ্ঞাপন দেয়াবে।
টুইটার: ব্যবহারকারীরা টুইটার অ্যাপের মাধ্যমে টিপস জার ব্যবহার করে অর্থ উপার্জন করতে পারেন। টিপস পাঠানো বা রিসিভ করার জন্য অ্যান্ড্রোয়েড বা আইফোন ব্যবহারকারীরা এ ফিচারটি ব্যবহার করতে পারেন। টুইটারের এ ফিচারটি বর্তমানে বহু সংখ্যক ব্যবহারকারীদের জন্য উন্মুক্ত।
রাজশাহীর সময়/এ