ডিজিটাল যুগে জীবন ব্যস্ত হলেও, দিনের বেশিরভাগ সময় কাটে অফিসে চেয়ার-টেবিলে বসে। আবার কাজ শেষে ঘরে ফিরলেও বসেই সময় কাটছে কম্পিউটার বা টেলিভিশন আড্ডায়। আর হাতে স্মার্ট ফোন থাকলে গেইমস নিয়ে কিংবা ফেসবুক নিয়ে বসে চলে যায় ঘন্টার পর ঘন্টা।
এর ফলে মস্তিষ্ক ব্যস্ত থাকলেও শরীর থাকছে কচ্ছপের মতো মন্থর। আর আধুনিক চিকিৎসাবিজ্ঞানে বলা হচ্ছে বেশিক্ষণ বসে থাকা ধূমপানের মতোই ক্ষতিকর। এর ফলে অকাল মৃত্যুও হতে পারে।
এই পরিস্থিতির ওপর করা অসংখ্য গবেষণায় দেখা গেছে, দীর্ঘসময় বসে থাকার কারণে অকাল মৃত্যুর ঝুঁকি বাড়ছে। যুক্তরাষ্ট্রের মেয়ো ক্লিনিক-অ্যারিজোনা স্টেট ইউনিভার্সিটি ওবেসিটি সলিউশনস ইনিশিয়েটিভ’য়ের পরিচালক ডা. জেমস লিভিন অলস জীবনযাত্রার ক্ষতিকর দিক নিয়ে গবেষণা করছেন। তিনি বলেন, বসে থাকা ধূমপানের চেয়েও ক্ষতিকর। এটি এইচআইভি ভাইরাসে চেয়েও বেশি মৃত্যুর জন্য দায়ি, যা প্যারাশুটের চাইতেও বড় বিশ্বাসঘাতক। গবেষণায় দেখা গেছে দীর্ঘক্ষণ বসে থাকার কারণে শরীরে বিভিন্ন ধরনের ক্যান্সার, হৃদরোগ এবং ডায়বেটিস হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়।
কলম্বিয়া ইউনিভার্সিটি মেডিকেল সেন্টারের এক গবেষণার ফলাফলে দেখা গেছে, যারা দিনে ১৩ ঘণ্টা বা এর বেশি কিংবা কিছুক্ষণের বিরতির পর এক থেকে দেড় ঘণ্টা একটানা বসে থাকেন তাদের অকাল মৃত্যুর ঝুঁকি বেড়ে যায় দ্বিগুণ। অপরদিকে যারা একটানা সর্বোচ্চ আধা ঘণ্টা বসে কাটান তাদের অকাল মৃত্যুর ঝুঁকি কম।
আমেরিকান জার্নাল অফ এপিডেমিওলজি’তে প্রকাশিত একটি গবেষণায় জানানো হয়, যারা দিনে ছয় ঘণ্টার বেশি সময় বসে থাকেন তাদের অকাল মৃত্যুর সম্ভাবনা দিনে যারা তিন ঘণ্টা বা তার কম সময় বসে থাকেন তাদের চাইতে বেশি। এই গবেষণার জন্য ৫৩ হাজার ৪৪০ জন পুরুষ এবং ৬৯ হাজার ৭৭৬ জন নারীকে ১৪ বছর ধরে পর্যবেক্ষণ করা হয়।
তাই সুস্থ থাকতে বসে খাবার খান, আর দীর্ঘক্ষণ না বসে কাজের ফাঁকে চেয়ার থেকে দেহটা তুলে নড়াচড়া করুন।
রাজশাহীর সময়/এ