সাত বছর আগের কথা। সবে শুরু হয়েছিল ডিসেম্বর মাস। হাড় কাঁপানো শীতে, রাত জেগে ইন্টারনেটে উষ্ণতার খোঁজ করে চলেছিলেন নিউইয়র্কের এক বিখ্যাত দাঁতের ডাক্তার রায়ান (নাম পরিবর্তিত)। গত কয়েকদিন ধরেই তিনি পড়ে চলেছিলেন ব্রিটেনের ‘পোস্ট’, মিরর, দ্য সানের মত বিখ্যাত ব্রিটিশ ট্যাবলয়েডগুলির কিছু রিপোর্ট। রক্ত চলকে দেওয়া লেখাগুলি বার বার পড়ছিলেন রায়ান। পড়ছিলেন এক রহস্যময় দ্বীপের কথা। আটলান্টিকে ভাসতে থাকা দ্বীপটির নাম ‘সেক্স আইল্যান্ড।
দ্বীপটি অবস্থান জানেন না ট্যাবলয়েডগুলির সাংবাদিকেরাও। তবে সেক্স আইল্যান্ডের অস্তিত্ব সম্পর্কে তাঁরা নিশ্চিত। রহস্যময় সেই দ্বীপে পৌঁছাতে পারলে নাকি পাওয়া যাবে জীবনের সেরা যৌন অভিজ্ঞতা। রায়ান একটি ট্যাবলয়েড থেকে পেয়েছিলেন একটি ওয়েবসাইটের সন্ধান। ওয়েবসাইটটি খুলেই চমকে উঠেছিলেন। ওয়েবসাইটের ওপরে বড় বড় হরফে লেখা ছিল,”আমাদের সুন্দরীরা, সবদিক থেকে আপনাকে খুশি করার জন্য প্রস্তুত। আপনার যদি বিশেষ কোনও ফ্যান্টাসি থাকে, তা সুন্দরীদের জানাতে ভুলবেন না। সেই ইচ্ছে তারা হাসি মুখে পূরণ করবে।”
উদ্দাম নাইটলাইফে অভ্যস্ত, বেপরোয়া রায়ান ওয়েবসাইট থেকে জেনেছিলেন, ‘গোল্ডেন গার্ল’ নামে একটি কোম্পানি আটলান্টিকের কোনও এক অজানা দ্বীপে, রক্তগরম করে দেওয়া এক ইভেন্টের আয়োজন করে। চারদিনের সেই ইভেন্টে যোগ দিতে গেলে কাটতে হবে ১০০০০ পাউন্ডের (৯,৫২,৩৩৮ টাকা) ‘গোল্ডেন’ টিকিট। দ্বীপে পৌঁছনোর আগেই ‘গোল্ডেন’ টিকিট কেনা প্রত্যেক পুরুষকে দেওয়া হবে দু’জন করে লাস্যময়ী যুবতী। চারদিন ধরে যথেচ্ছভাবে উপভোগ করার জন্য। ওয়েবসাইট জানিয়েছিল, আগামী ইভেন্ট চলবে ১৪ থেকে ১৭ ডিসেম্বর।
অগাধ সম্পত্তির অধিকারী, মধ্য তিরিশের রায়ান সেই মুহূর্তেই অনলাইনে পাঠিয়ে দিয়েছিলেন টাকা। কয়েকদিনের মধ্যেই তাঁর চেম্বারের ঠিকানায় পৌঁছে গিয়েছিল ‘গোল্ডেন’ টিকিট। ই-মেলের মাধ্যমে জানানো হয়েছিল, ১৪ ডিসেম্বর সকাল আটটার মধ্যে রায়ানকে পৌঁছাতে হবে কলম্বিয়ার মন্টেরিয়া এয়ারপোর্টে। সেখান থেকে তাঁকে সেক্স আইল্যান্ডে নিয়ে যাবে ইভেন্ট ম্যানেজারেরা।
রায়ান বিবাহিত ও দুই সন্তানের বাবা। স্ত্রীও কাজ করেন একটি ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানিতে। স্ত্রীকে একটি সেমিনারে যোগ দেওয়ার কথা বলে, রায়ান পৌঁছে গিয়েছিলেন হিথরো এয়ারপোর্টে। ব্রিটিশ এয়ারওয়েজের বিজনেস ক্লাসের আসনে বসে পৌঁছে গিয়েছিলেন কলম্বিয়ার এল-ডোরাডো ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্টে। সেখান থেকে ভিভা-কলম্বিয়ার বিমান ধরে কলম্বিয়ার উত্তর-পূর্ব উপকূলে থাকা মন্টেরিয়া এয়ারপোর্টে।
এয়ারপোর্টের বাইরে এসে একটি নম্বরে ফোন করেছিলেন রায়ান। মিনিট খানেকের মধ্যে চলে এসেছিলেন নীল জিনস ও নীল টি-শার্ট পরা এক ব্যক্তি। মধ্য বয়স্ক মানুষটির চোখেও নীল গগলস। রায়ানের কাছে টনি নামের মানুষটি দেখতে চেয়েছিলেন বহুমূল্য গোল্ডেন টিকিট। সেটি পরীক্ষা করার পর, টনি কাউকে ফোন করেছিলেন। কয়েক মিনিটের মধ্যেই রায়ানের সামনে এসে দাঁড়িয়েছিল এক ঝকঝকে ‘মার্চি পালাজো’। দুধসাদা সুপার লাক্সারি বাসটির ভেতর বসেছিল বেশ কিছু লোক। বেশিরভাগই ইউরোপীয়।
সারি সারি পাম গাছের বুক লেপ্টে শুয়ে থাকা রাস্তা দিয়ে ছুটেছিল রায়ানদের বাস। ঘন্টাখানেক পর, বাসটি এসে দাঁড়িয়েছিল এক নির্জন সৈকতের সামনে। সামনে ঘন নীল আটলান্টিক। সৈকতে আছড়ে পড়া ঢেউয়ের তালে তালে নাচছিল একটি ঝাঁ চকচকে ইয়ট। ইয়টের গায়ে লেখা পানামা।
একে একে ইয়টে উঠেছিলেন তিরিশ জন পুরুষ। পঁচিশ থেকে পঞ্চাশের মধ্যে তাঁদের বয়স। ইয়টের ভেতর থেকে ভেসে আসছিল রক্তে আগুন ধরানো ক্যারিবীয় যন্ত্রসঙ্গীতের মূর্ছনা। ইয়টের হলঘরে অতিথিদের বসিয়ে, প্রথমেই দেওয়া হয়েছিল ওয়েলকাম ড্রিঙ্ক ও স্ন্যাক্স।
টনি প্রত্যেক অতিথিকে আলাদাভাবে অভিবাদন জানিয়ে হাতে তুলে নিয়েছিলেন কর্ডলেস মাইক্রোফোন। হাসি হাসি মুখ নিয়ে বলেছিলেন, “আপনারা এখন চলেছেন সেক্স আইল্যান্ডে। নিজেকে আগামী চারদিনের জন্য সম্রাট ভাবতে শুরু করুন। এই চারদিনের জন্য আপনাদের প্রত্যেকেই পাবেন দু’জন করে ডানাকাটা পরী, অসামান্য এক কটেজ, অঢেল মদ, সুস্বাদু খাবার ও ‘টুথি‘। শেষ নামটির সঙ্গে আপনার অবশ্য পরিচয় হবে সেক্স আইল্যান্ডে পৌঁছনোর পর।”
অতিথিদের জোরালো শিস ও হাততালির শব্দে কানে হাত চাপা দিয়েছিলেন রায়ান। ঠিক তখনই শক্ত হয়ে গিয়েছিল নীল পোশাক পরা টনির চোয়াল। ঠান্ডা গলায় টনি বলেছিলেন, “আর একটা কথা বলে দিই। এই চারদিন আপনারা সুন্দরীদের নিয়ে সেক্স আইল্যান্ডে যা খুশি তাই করতে পারবেন। কারণ চারদিনের জন্য দ্বীপটা আপনাদের। কিন্তু কেউ একটিও ছবি বা ভিডিও তুলবেন না। মারামারি বা ভাঙচুর করবেন না। তার ফলটা কিন্তু বেশিরভাগেরই ভাল লাগবে না।” এই বলে জানলার দিকে আঙুল তুলেছিলেন টনি। জানলা দিয়ে দেখা যাচ্ছিল ইয়টের ডেকে দাঁড়িয়ে থাকা কয়েকজন মুখোশধারীকে। হাতে সর্বাধুনিক আগ্নেয়াস্ত্র।
টনির কথা শেষ হওয়া মাত্রই বেজে উঠেছিল উদ্দাম যন্ত্রসঙ্গীত। অতিথিদের শরীরে খেলা করতে শুরু করেছিল সাইকোডেলিক আলো। হলঘরে হাসতে হাসতে ঢুকে পড়েছিল ষাট জন লাস্যময়ী সুন্দরী। পরনে বিকিনি। টনি আবার হাতে তুলে নিয়েছিলেন মাইক্রোফোন,” আমাদের সুন্দরীরা হাজির, এবার প্রত্যেককে বেছে নিতে হবে তাঁর পছন্দের দুই সুন্দরী। যারা এই চারদিন বিকিনি ছাড়া অন্য কোনও পোশাক পরবে না। এয়ারপোর্টে আগে আসার ভিত্তিতে বাছার সুযোগ দেওয়া হবে। তবে এই চারদিন প্রত্যেক অতিথিকেই যৌনতার ক্ষেত্রে সুরক্ষাবিধি মানতে হবে। আপনাদের কটেজের আলমারিতে রাখা আছে অঢেল কন্ডোম।”
মিনিট পনেরোর মধ্যে অতিথিরা যে যার পছন্দমত সুন্দরী বেছে নিয়েছিলেন। রায়ান বেছে নিয়েছিলেন দুই লাতিন বিকিনি সুন্দরীকে। হাসিখুশি ও আন্তরিক। কাজ চালানোর মত ইংরেজিও জানে। সুন্দরীরা রায়ানের জন্য এনে দিয়েছিল ভডকা। ক্রমশ বাড়তে শুরু করেছিল রায়ানের হৃদস্পন্দন। আটলান্টিকের ওপর দিয়ে কোনও অজানা দ্বীপের উদ্দেশ্যে ছুটে চলেছিল ইয়ট। খালি হয়ে যাচ্ছিল বোতলের পর বোতল। শুরু হয়েছিল অতিথিদের উদ্দাম নাচানাচি। হঠাৎ রায়ানের চোখ পড়েছিল একটি যুবকের ওপর। কেউ চিনতে না পারলেও যুবকটিকে চিনতে পেরেছিলেন রায়ান। যুবকটি কানাডার এক বিখ্যাত পপ স্টার।
সফেন সমুদ্রের ওপর দিয়ে ঘণ্টাখানেক ছোটার পর, ইয়ট নোঙর করেছিল অসামান্য সুন্দর এক দ্বীপের সৈকতে। রায়ানদের নিয়ে যাওয়া হয়েছিল সৈকতের পাশেই থাকা দ্বীপের একমাত্র রিসোর্টটিতে। প্রত্যেক অতিথিকে দেওয়া হয়েছিল চোখ কপালে তুলে দেওয়ার মত বিলাসবহুল কটেজ। যেটির শয়নকক্ষের একদিকের দেওয়াল কাচ দিয়ে তৈরি। বিছানায় শুয়েই দেখা যাবে আটলান্টিকের মনোরম সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত।
কটেজে ঢোকার পর সুন্দরীরা রায়ানের মালপত্র গোছানোর কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়েছিল। রায়ান কটেজের টেবিল থেকে তুলে নিয়েছিলেন দ্বীপের ম্যাপ ও প্রয়োজনীয় তথ্য সম্বলিত কার্ডটি। রায়ান জেনেছিলেন কটেজগুলির মাঝে আছে শীতাতপনিয়ন্ত্রিত ডাইনিং হল, সেখানে মিলবে আন্তর্জাতিক মানের শেফের বানানো সি-ফুড ও অন্যান্য ডিশ। পাশেই বার। সেখানে পাওয়া যাবে প্রায় দেড়শটি ব্র্যান্ডের মদ।
বারের পাশের হলঘরটি তাঁদের জন্য, যাঁদের পছন্দ কোকেন, হাসিস, মারিজুয়ানা। এখানেই মিলবে সেই আশ্চর্য ড্রাগ ‘টুথি’। যেটির কথা ইয়টে বলেছিলেন টনি। সেক্স আইল্যান্ডের নিজস্ব ড্রাগ ‘টুথি’। গোলাপি রঙের পাউডারটি নাকি মুহূর্তের মধ্যে জাগিয়ে তোলে উদগ্র যৌন বাসনা। সবথেকে বিস্ময়ের ব্যাপার, সবকটি কাউন্টারই চব্বিশ ঘণ্টা খোলা থাকবে আগামী চারদিন।
সেক্স আইল্যান্ডে পা দিয়েই অতিথিদের কেউ কেউ ছুটেছিলেন বিচে। তবে বেশিরভাগই ছুটেছিলেন বিছানায়। সে সবে না গিয়ে কৌতুহলী রায়ান গল্প জুড়ে দিয়েছিলেন টনির সঙ্গে। জেনেছিলেন অনেক তথ্য। যা তিনি পরবর্তীকালে নাম গোপন রেখে জানিয়েছিলেন ‘পোস্ট’ ম্যাগাজিনকে।
কলম্বিয়ার পাঁচ নিশাচর বন্ধু, ২০১৪ সালে করেছিলেন এক সাংঘাতিক পরিকল্পনা। সারা বিশ্বের সেক্স পার্টিগুলোতে যোগ দেবেন এবং পার্টিতে আসা মানুষজনের চাহিদা বুঝবেন। প্রায় এক বছর ধরে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সেক্স পার্টিতে রাতের পর রাত কাটিয়ে দেশে ফিরে এসেছিলেন পাঁচ বন্ধু। এক ছাতার তলায় নিয়ে এসেছিলেন নিউইয়র্কের দুই ধনী ব্যবসায়ী ও কলম্বিয়ার এক পতিতালয়ের মালিককে। বিভিন্ন দেশের সেক্স পার্টির খুঁতগুলিকে বাদ দিয়ে পাঁচ বন্ধু শুরু করেছিলেন এক আজব ব্যবসা।
ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জের সাত হাজার দ্বীপের মধ্যে অনেকগুলি দ্বীপ ব্যক্তিগত মালিকানাধীন। রাতারাতি পাঁচ বন্ধু কিনে ফেলেছিলেন সেরকমই একটি দ্বীপ। জন্ম নিয়েছিল ‘সেক্স আইল্যান্ড’ ও ‘গোল্ডেন গার্ল’ কোম্পানি। উষ্ণতার খোঁজে দ্বীপে আসতে শুরু করেছিলেন, ইউরোপ, আমেরিকা ও আরব দেশগুলির বিত্তবানেরা। সেক্স আইল্যান্ডকে সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে রাখার জন্য প্রথম থেকেই গোল্ডেন টিকিটের দাম রাখা হয়েছিল আকাশ ছোঁয়া।
টনির কাছ থেকে রায়ান জেনেছিলেন, সেক্স আইল্যান্ডের বেশিরভাগ সুন্দরী আসে ব্রাজিল, কলম্বিয়া, পুয়ের্তোরিকো ও আর্জেন্টিনা থেকে। কিছু সুন্দরী আসে কানাডা ও আমেরিকা থেকে। গর্ব করে টনি বলেছিলেন, “আমাদের তালিকায় আছে প্রায় এক হাজার রূপসী। তাই আপনি যেমন বলবেন, তেমনই পাবেন। কেউ আগেই আমাদের জানিয়ে দেন তাঁর পছন্দসই নারী, মদ, ড্রাগ ও সুপ্ত বাসনার কথা। সেই মত ব্যবস্থা রাখি আমরা।”
রায়ানের পছন্দ করা দুই বিকিনি সুন্দরী এসে জড়িয়ে ধরেছিল রায়ানকে। তারা চাইছিল রায়ানকে বিছানায় নিয়ে যেতে। কিন্তু রায়ান তাদের ব্যস্ত রেখেছিলেন ‘ওয়াইল্ড টার্কি’ হুইস্কির গেলাস হাতে ধরিয়ে দিয়ে। হাসতে হাসতে টনি বলেছিলেন, “এই সুন্দরীরা তিন মাসের রোজগার করে নেয় মাত্র চারদিনে। যথেষ্ট পারিশ্রমিক দিই আমরা। এর সঙ্গে এরা পায় আমাদের ক্লায়েন্টদের দেওয়া মোটা অঙ্কের বখশিস।”
রায়ানকে টনি বলেছিলেন, পছন্দ করা দুই সুন্দরীতে অরুচি ধরে গেলে যেকোনও মুহূর্তে সুন্দরী বদলে নেওয়া যাবে। অন্য কোনও গেস্টের সঙ্গে। তবে সেই গেস্টেরও তাঁর সুন্দরীতে অরুচি থাকতে হবে। টনির কাছ থেকে একটি মজার কাহিনি শুনেছিলেন রায়ান। দুই বন্ধু এসেছিল কোনও এক ইভেন্টে। এক বন্ধুর সঙ্গে থাকা ক্যারিবীয় সুন্দরীকে পছন্দ হয়েছিল অন্য বন্ধুর। কিন্তু প্রথম বন্ধু তার ভাগের ক্যারিবীয় সুন্দরীকে হাত ছাড়া করতে রাজি নয়। সবশেষে মধ্যস্থতা করতে নেমেছিলেন টনি। দ্বিতীয় বন্ধু সেই সুন্দরীকে দিয়েছিল দশ হাজার পাউন্ড ও প্রথম বন্ধুর দিকে ছুঁড়ে মেরেছিল পাঁচ হাজার পাউন্ড। ছিনিয়ে নিয়েছিল কফি রঙা সুন্দরীর সঙ্গে বিছানায় উদ্দাম তুফান তোলার অধিকার।
অতিথিদের সঙ্গ দিতে থাকা সুন্দরীরা ছাড়াও সেক্স আইল্যান্ডে আছে সুইমিংপুল, গলফ কোর্স, টেনিস কোর্ট। আছে প্যারাগ্লাইডিং, স্কুবা ডাইভিং, বিচ ভলিবল খেলার ব্যবস্থা। অতিথিদের জন্য কতৃপক্ষ বিভিন্ন প্রতিযোগিতারও ব্যবস্থা রেখেছে। তবে সবকটিতেই অশ্লীলতার ছড়াছড়ি। প্রতিযোগীতায় জয়ীদের দেওয়া হয় এক অবিশ্বাস্য পুরষ্কার। পনেরো জন সুন্দরীর সঙ্গে পুরো এক ঘণ্টা বিছানায় কাটানোর সুযোগ। এই চারদিন ধরে দ্বীপের যেখানে খুশি সঙ্গমে লিপ্ত হতে বাধা নেই। কারণ গোটা দ্বীপটাই যে বিছানা।
এদিকে টনির ইশারায় জনসমক্ষেই রায়ানের ঘনিষ্ট হতে শুরু করেছিল দুই সুন্দরী। রায়ান বুঝতে পেরেছিলেন, টনি এর বেশি আর কিছু বলতে চান না। তবে যা জানার তা ইতিমধ্যেই জেনে ফেলেছিলেন রায়ান। ‘সেক্স আইল্যান্ড’ এখন বিলিয়ন ডলারের এক ব্যবসার ব্র্যান্ড। সারা বছর ধরে যেখানে অনুষ্ঠিত হয় বিশ্বের সবথেকে দামি সেক্স পার্টি। ইভেন্টের পাশাপাশি কোম্পানিটি অনলাইনে বিক্রি করে কোটি কোটি ডলারের স্মারক ও সেক্স টয়।
তবে সত্যিই সেক্স আইল্যান্ডের কোনও স্থায়ী ঠিকানা নেই। কলম্বিয়া ও ক্যারিবীয় দেশগুলির পুলিশের তাড়ায় মাঝে মাঝে ঠিকানা পাল্টায় ‘সেক্স আইল্যান্ড’। কবে আগামী ইভেন্ট হবে, তা আপনি জানতে পারবেন। কিন্তু কোন দ্বীপে হবে তা জানাবে না ওয়েবসাইট। সবচেয়ে অবাক করার মত তথ্য, হাজার চেষ্টা করেও আজ অবধি জানা যায়নি, মধ্যবিত্ত থেকে বিলিয়নেয়ার হয়ে যাওয়া সেই পাঁচ বন্ধুর নাম।
এরপর রায়ানকে প্রায় জোর করেই কটেজে নিয়ে গিয়েছিল সুন্দরীরা। দরজা খোলা রেখেই ঝাঁপিয়ে পড়েছিল রায়ানের ওপর। ইভেন্টের চারদিন দুই লাতিন সুন্দরী রায়ানকে উপহার দিয়েছিল জীবনের সেরা অশ্লীল মুহূর্তগুলি। শেষ হয়েছিল ইভেন্ট, কিন্তু বাড়ি ফিরতে চায়নি রায়ান। সেক্স আইল্যান্ডে থেকে গিয়েছিল আরও তিন দিন। আরও ১০০০০ পাউন্ড খরচ করে। রায়ানের কাঁধে হাত রেখেছিল নতুন দুই লাতিন সুন্দরী। আটলান্টিকের নয়নাভিরাম সূর্যাস্ত দেখে, সুন্দরীদের কাঁধে হাত রেখে, টলোমলো পায়ে রায়ান চলেছিলেন নতুন কটেজের দিকে। পাগলের মত হাসছিলেন। রায়ানের মনে পড়ছিল ওয়েবসাইটের ওপর জ্বল জ্বল করতে থাকা বাক্যটি,“সেভাবেই এবার বাঁচো, যেভাবে বাঁচতে চেয়েছিলে এতদিন।