আল্লাহ ও নবিজীর বিধি-বিধান এবং নির্দেশের বিপরীতে যেসব কাজ; ইসলামি শরিয়তে সেগুলোই গুনাহ। কোরআন-সুন্নাহর নির্দেশ অমান্য করা এবং নিষেধাজ্ঞামূলক কাজ থেকে নিজেদের বিরত না থাকাই গুনাহ। এসব গুনাহের মধ্যে নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনটি কাজকে সবচেয়ে বড় গুনাহ বলে আখ্যায়িত করেছেন। সে গুনাহের কাজগুলো কী?
নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হাদিসে পাকে তিনটি গুনাহকে সবচেয়ে বড় বলে ঘোষণা করেছেন। তাহলো- শিরক করা, খাবারের ভয়ে হত্যা করা এবং প্রতিবেশির স্ত্রীর সঙ্গে ব্যভিচার করা। হাদিসে পাকে এসেছে-
হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, এক লোক বললো, হে আল্লাহর রাসুল! সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম; আল্লাহর কাছে সবচেয়ে বড় গুনাহ কোনটি? তিনি বললেন, ‘তুমি আল্লাহর সঙ্গে কাউকে সমকক্ষ গণ্য করো অথচ তিনিই তোমাকে সৃষ্টি করেছেন।
লোকটি বললো, এরপর কোনটি? তিনি বললেন, ‘তারপর হলো, তুমি তোমার সন্তানকে এ ভয়ে হত্যা করো যে, সে তোমার সঙ্গে খাদ্য খাবে।
লোকটি বললো, এরপর কোনটি? তিনি বললেন, ‘তারপর হলো, তুমি তোমার প্রতিবেশির স্ত্রীর সঙ্গে জিনা-ব্যভিচার করো।
এরপর তিনি (হজরত ইবনে মাসউদ রাদিয়াল্লাহু আনহু) বলেছেন, ‘আল্লাহ তাআলা এ কথার সত্যতায় (কোরআনে) অবতীর্ণ করলেন-
وَ الَّذِیۡنَ لَا یَدۡعُوۡنَ مَعَ اللّٰهِ اِلٰـهًا اٰخَرَ وَ لَا یَقۡتُلُوۡنَ النَّفۡسَ الَّتِیۡ حَرَّمَ اللّٰهُ اِلَّا بِالۡحَقِّ وَ لَا یَزۡنُوۡنَ ۚ وَ مَنۡ یَّفۡعَلۡ ذٰلِکَ یَلۡقَ اَثَامًا
‘আর তারা আল্লাহর সঙ্গে কোনো ইলাহকে আহবান করে না, আল্লাহ যার হত্যা নিষেধ করেছেন উপযুক্ত কারণ ছাড়া তাকে হত্যা করে না এবং ব্যভিচার করে না। যে এগুলো করে সে শাস্তি ভোগ করবে (সুরা ফুরকান : আয়াত ৬৮)।’ (বুখারি, মুসলিম, নাসাঈ, আবু দাউদ, তিরমিজি, মিশকাত)
কোরআনুল কারিমের এ গুনাহের কথাই রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হাদিসে পাকে সবচেয়ে বড় গুনাহ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। যে গুনাহের কোনো ক্ষমা নেই। তাই কোনো অবস্থাতেই আল্লাহর সঙ্গে শিরক করা যাবে না।
পাশাপাশি হাদিসে সবচেয়ে বড় আরো যে দুইটি গুনাহের কথা উল্লেখ করা হয়েছে যেমন- অন্যায়ভাবে অভাবের ভয়ে নিজের সন্তানকে হত্যা করা এবং প্রতিবেশীর স্ত্রীদের সঙ্গে ব্যভিচার করা। এ দুইটি গুনাহও বড় গুনাহসমূহের মধ্যে অন্যতম।
সুতরাং মুমিন মুসলমানের উচিত, শিরকের গুনাহ থেকে বেঁচে থাকা। অন্যান্য সব গুনাহ থেকে বেঁচে থাকা। কোরআন-সুন্নাহর দিকনির্দেশনা অনুযায়ী জীবন পরিচালনা করা। গুনাহমুক্ত জীবন পরিচালনাই মুক্তির একমাত্র উপায়।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে হাদিসে উল্লেখিত গুনাহগুলো থেকে হেফাজত থাকার তাওফিক দান করুন। কুরআন-সুন্নাহ মোতাবেক জীবন পরিচালনা করে পরকালের সফলতা পাওয়ার তাওফিক দান করুন। আমিন।
রাজশাহীর সময়/এএইচ