২৫ নভেম্বর ২০২৪, সোমবার, ০১:৫৩:১১ অপরাহ্ন


বাংলাদেশি নারীরা যেমন আছেন সাইপ্রাসে
আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
  • আপডেট করা হয়েছে : ২১-০৬-২০২২
বাংলাদেশি নারীরা যেমন আছেন সাইপ্রাসে বাংলাদেশি নারীরা যেমন আছেন সাইপ্রাসে


চাকরি কিংবা পড়াশোনার উদ্দেশ্যে অনেক বাংলাদেশি নারী পাড়ি জমিয়েছেন সাইপ্রাসে৷ তাদের কেউ বলছেন, অভিবাসী হিসেবে তারা দেশটিতে ভাল আছেন৷ কেউ আবার শোনালেন হতাশার কথাও৷ডয়চে ভেলের কাছে তেমন অভিজ্ঞতাই তুলে ধরেছেন বেশ কয়েকজন প্রবাসী নারী৷সাইপ্রাসের বাফোস শহরে থাকেন সোহানা ৷

ছয় বছর আগে স্বামীর সাথে পড়াশোনার জন্য পাড়ি দিয়েছিলেন এই দেশটিতে৷ পড়াশোনা শেষে তিনি বর্তমানে একটি রিয়েল এস্টেট কোম্পানিতে খণ্ডকালীন চাকরি করছেন৷ শিক্ষার্থী হিসেবে এখানে কেমন জীবন যাপন করছেন জানতে চাইলে সোহানা জানান, এখানে ছাত্রছাত্রীদের কাজের সুযোগ তেমন নেই ৷ যারা এখানে পর্যটন খাত নিয়ে পড়াশোনা করছেন তারা গ্রীষ্মকালে ছুটির সময়ে কাজের অনুমতি পান৷তাছাড়া ছাত্রছাত্রীরা আর কোনো ধরনের কাজের অনুমতি পান না বলে জানান তিনি ৷

আর এ কারণে ইউরোপের অন্যান্য দেশের মতো সাইপ্রাসে নিজে টাকা রোজগার করে জীবন যাপন অনেক কঠিন বলে মনে করেন সোহানা৷সোহানার সাথে কথা বলে জানা গেছে, এখানকার জীবনযাত্রার খরচ তুলনামূলক অনেক কম৷সোহানা জানান, তিনি তার স্বামীকে নিয়ে এক রুমের একটি বাসা ভাড়া নিয়ে থাকেন৷ আর এর জন্য সাড়ে পাঁচশ থেকে ছয়শ ইউরো পর্যন্ত খরচ হয় তাদের ৷

শুধু সোহানা নয়, দেশটিতে থাকা এমন আরো অনেক বাংলাদেশি নারী অভিবাসীর সাখে দেখা হয় ডয়চে ভেলের সাংবাদিক আরাফাতুল ইসলাম ও অনুপম দেব কানুনজ্ঞের৷এক সপ্তাহ আগে সাইপ্রাসে এসেছেন বাংলাদেশি অভিবাসী জান্নাত৷ পড়াশোনার জন্য নয়, জান্নাত বাংলাদেশ থেকে সরাসরি চাকরি নিয়ে সাইপ্রাসে এসেছেন৷ ডয়চে ভেলেকে তিনি চানান, সাইপ্রাসের একটি শিপিং কোম্পানিতে চাকরির নিয়ে এনেছেন তিনি৷

সাইপ্রাসে বৈধভাবে থেকে চাকরি চালিয়ে যাওয়ার ইচ্ছা তার৷জান্নাতের মতোই চাকরি নিয়ে এসেছেন আরেক বাংলাদেশি নারী নাহিদা৷ বর্তমানে স্বামীর সঙ্গে বাফোসে বাস করছেন এক সন্তানের মা নাহিদা৷চাকরি নিয়ে এদেশে আসলেও আপাতত আর চাকরিটি করছেন না তিনি৷ নাহিদা জানান, সন্তানকে দেখাশোনার জন্য সময় দিতে হচ্ছে তাকে৷ তাই আপতত তিনি চাকরি করছেন না৷

সন্তান বড় হলে আবার চাকরিতে যোগদানের ইচ্ছা রয়েছে তার৷এখানকার জীবনযাপন বিষয়ে নহিদা জানান, পরিবার নিয়ে থাকার জন্য এটি বেশ ভাল একটি দেশ৷ তবে সন্তানের জন্য সরকারের কাছ থেকে বাড়তি কোনো সুযোগ সুবিধা পাওয়া যায় না বলে জানান তিনি৷সেই সাথে আরো একটি আক্ষেপের কথা জানালেন নাহিদা৷ তিনি তার সন্তানকে বাংলা ভাষা শেখাতে চান কিন্তু এখানকার কিন্ডারগার্টেনে বাংলা শেখানোর বা অন্য কোনো স্কুল থেকেও বাংলা শেখানোর কোনো সুযোগ নেই বলে জানালেন তিনি৷

এদিকে নারীদের নিরাপত্তা ও ধর্মীয় স্বাধীনতার কথাও জানালেন বাংলাদেশি এই অভিবাসীরা৷বাংলাদেশি অভিবাসী জারা জানান তিনি সাত বছর আগে পড়াশোনার জন্য এখানে এসেছিলেন৷ এখানকার মানুষেরা সব ধর্মকেই সমানভাবে দেখে অর্থাৎ এখানে সবাই নিজের মতো করে ধর্ম পালন করার পূর্ণ স্বাধীনতা রযেছে৷ স্থানীয় বাংলাদেশিদের সহায়তায় কোরআন শিক্ষার ব্যবস্থাও আছে বলে জানান তিনি৷আর সোহানা জানান, এই দেশটিতে নারীরা পুরোপুরি নিরাপদ, এখানে অনেক রাত পর্যন্ত একজন নারী নিরাপদে চলাফেরা করতে পারেন৷প্রতিবেদন: আরাফাতুল ইসলাম, অনুপম দেব কানুনজ্ঞ।