২৩ নভেম্বর ২০২৪, শনিবার, ০৪:৫৯:৪৫ পূর্বাহ্ন


আপনার শরীরে ভিটামিনের যে অভাব হতে পারে!
ফারহানা জেরিন:
  • আপডেট করা হয়েছে : ১৭-০৬-২০২২
আপনার শরীরে ভিটামিনের যে অভাব হতে পারে! আপনার শরীরে ভিটামিনের যে অভাব হতে পারে!


সুস্বাস্থ্যের জন্যে আমাদের শরীরের নানা ভিটামিন ও মিনারেলের প্রয়োজন পড়ে, যা সাধারণত আমাদের শরীরের ভিতরেই তৈরি হয় এবং নিত্যদিনের খাবার থেকেও পাই। তারই মধ্যে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভিটামিন হল বি ১২। এই ভিটামিন মানুষের শরীরে তৈরি হয় না। খাবারের মাধ্যমে শরীরে প্রবেশ করে। লাল রক্ত কোষ এবং ডিএনএ তৈরির ক্ষেত্রে এই ভিটামিন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।

শরীরে ভিটামিন বি ১২-এর ভূমিকা: ভিটামিন বি ১২-এর অভাবে ভুলে যাওয়ার প্রবণতা, দুর্বলতা, মাথা ঘোরা, দুশ্চিন্তা, বিষণ্ণতা ইত্যাদি সমস্যা হতে পারে। রক্তশূন্যতাও দেখা দিতে পারে। রক্তশূন্যতায় রোগী দুর্বল হয়ে পড়ে, অল্প শ্রমেই ক্লান্ত ও হাঁপিয়ে ওঠে, বুক ধড়ফড় করে। পাকস্থলীর সমস্যার ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়। হতে পারে কোষ্ঠকাঠিন্য। দীর্ঘদিন ভিটামিন বি ১২-এর ঘাটতির কারণে স্নায়বিক সমস্যা হতে পারে। ফলে হাঁটতে-চলতে এবং ভারসাম্য রাখতে অসুবিধা হয়। রক্তশূন্যতা বা স্নায়বিক সমস্যায় চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

প্রতিদিন শরীরে কতটা ভিটামিন বি ১২ প্রয়োজন: ভিটামিন বি ১২ জলে দ্রবণীয় উপাদান। অর্থাৎ দেহের চাহিদা পূরণ হয়ে গেলে অতিরিক্ত ভিটামিন মূত্রের মধ্যে দিয়ে দেহের বাইরে বেরিয়ে যায়। বয়সের উপর ভিত্তি করে এই চাহিদার কম-বেশি হয়। ১। ০ থেকে ৬ মাস: দৈনিক ০.৪ মিলিগ্রাম। ২। ৭ থেকে ১২ মাস: ০.৫ মিলিগ্রাম। ৩। ১ থেকে ৩ বছর: ০.৯ মিলিগ্রাম। ৪। ৪ থেকে ৮ বছর: ১.২ মিলিগ্রাম। ৫। ৯ থেকে ১৩ বছর: ১.৮ মিলিগ্রাম। ৬। ১৪ থেকে ৫০ বছর: ২.৪ মিলিগ্রাম। ৭। অন্তঃসত্ত্বা নারী: ২.৬ মিলিগ্রাম। ৮। স্তন্যদায়িনী মা: ২.৮ মিলিগ্রাম।

ভিটামিন বি ১২ কম হলে কী হয়: সারা দিন ক্লান্ত লাগা এবং দুর্বলভাব এই ভিটামিন ঘাটতির অন্যতম লক্ষণ। শরীরে ভিটামিন বি ১২ পর্যাপ্ত পরিমাণে না থাকলে লাল রক্ত কোষ তৈরি হয় না। ফলে শরীরে অক্সিজেন চলাচল স্বাভাবিক নিয়মে হয় না। এর কারণে প্রায়ই নিঃশ্বাসের সমস্যা দেখা দিতে পারে। ঝাপসা দৃষ্টিশক্তিও বি ১২ ভিটামিনের অভাবের আরও একটি লক্ষণ। এই ভিটামিনের ঘাটতি প্রভাব ফেলে বিভিন্ন স্নায়ুতে। তার মধ্যে রয়েছে অপটিক নার্ভও। এছাড়া ফ্যাকাসে ত্বকও ভিটামিন বি ১২ ঘাটতির লক্ষণ। ত্বকের রঙ হলদেটে ফ্যাকাশে, জন্ডিস হলে যেমন হয়, তেমন দেখতে লাগলে অবিলম্বে ডাক্তার দেখাতে হবে।

ভিটামিন বি ১২-এর উৎস: নিরামিষ খাবারে এই ভিটামিনের পরিমাণ কিছুটা কম থাকে। প্রাণিজ খাবারে অপেক্ষাকৃত বেশি পরিমাণে মেলে ভিটামিন বি ১২।

দুধ, দই ও দুগ্ধজাত পদার্থ, ডিম, মাশরুম, বিভিন্ন ধরনের মাংস ও মেটে, টুনা, স্যামন ও বিভিন্ন সামুদ্রিক মাছ, ঢেকি ছাটা চাল ও বিভিন্ন ধরনের গোটা শস্য এবং ডালে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন বি ১২ থাকে।

সমস্যা খুব বেশি হতে শুরু করলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।