২৫ নভেম্বর ২০২৪, সোমবার, ১১:৫০:৩০ পূর্বাহ্ন


ইউক্রেনকে সমর্থন জানাতে কিভে তিন রাষ্ট্রপ্রধান
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
  • আপডেট করা হয়েছে : ১৭-০৬-২০২২
ইউক্রেনকে সমর্থন জানাতে কিভে তিন রাষ্ট্রপ্রধান ফাইল ফটো


রুশ হামলায় প্রায় ধ্বংসস্তূপ পূর্ব ইউক্রেন। তবু গোলাবর্ষণ অব্যাহত। সেভেরোডনেত্‍স্কে প্রায় ১০ হাজার মানুষ রুশদের হাতে 'বন্দি'। সাহায্য হিসেবে গত কালই ১০০ কোটি ডলার অর্থমূল্যের নতুন যুদ্ধাস্ত্র ইউক্রেনে পাঠানোর কথা ঘোষণা করেছে আমেরিকা। আর আজ ইউক্রেনকে সমর্থন জানাতে সশরীরে কিভে পৌঁছলেন ফ্রান্স, জার্মানি ও ইটালি— এই তিন দেশের রাষ্ট্রপ্রধানেরা।

এ-ও জানালেন, তাঁরা চান, ইউক্রেন অবিলম্বে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)-এর সদস্যপদ পাক।

সকালে পোলান্ড থেকে কিভ-গামী বিশেষ ট্রেন ছাড়ে। সওয়ারি ছিলেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাকরঁ, জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শোলত্‍জ় এবং ইটালির প্রধানমন্ত্রী মারিয়ো দ্রাঘি। পড়শি দেশ রোমানিয়া সফরে মাকরঁ বলেছিলেন, ''আমাদের, অর্থাত্‍ ইউরোপীয় ইউনিয়নের, ইউক্রেন ও তার বাসিন্দাদের প্রতি স্পষ্ট রাজনৈতিক বার্তা পৌঁছে দেওয়া প্রয়োজন।'' তার পরই আজ মাকরঁদের এই সফর। কিভে প্রেসিডেন্টের প্রাসাদের ফটকে ইউরোপীয় রাষ্ট্রপ্রধানদের স্বাগত জানান ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জ়েলেনস্কি। রাষ্ট্রপ্রধানদের সফরের কারণে পুরো এলাকা নজরবন্দি করা হয়েছিল। নিরাপত্তা এতটাই আটসাট ছিল যে একটি মাছি গলারও উপায় ছিল না। এর আগে রাষ্ট্রপুঞ্জের মহাসচিব আন্তোনিয়ো গুতেরেসের ইউক্রেন সফরের সময়কালে কিভে বোমা ফেলেছিল রাশিয়ার সেনাবাহিনী। আন্তর্জাতিক প্রতিনিধিকেও রেয়াত করেনি মস্কো।

তবে এ বারের সফর নিয়ে বাড়তি উত্তেজনা রয়েছে। ইইউ-এ ইউক্রেনের জায়গা হবে কি না, তা হয়তো শীঘ্রই ঘোষণা করা হবে। তার মুখে তিন গুরুত্বপূর্ণ ইইউ সদস্যের কিভ-সফরে কোথাও চাপা উত্তেজনা তৈরি হয়েছে। সাংবাদিক বৈঠকে জ়েলেনস্কির উদ্দেশে সরাসরি প্রশ্ন ছুড়ে দেওয়া হয়, ''আপনি যা চাইছেন, ইইউ কি আদৌ তা দেবে?'' প্রেসিডেন্ট সপ্রতিভ ভাবে বলেন, ''দেখা যাক।'' তার পরেও প্রশ্ন আসে, ''আপনি কি আশাবাদী?'' এর আর কোনও উত্তর দেননি জ়েলেনস্কি। অতিথিদের নিয়ে প্রাসাদের ভিতরে চলে যান।

তবে শোনা যাচ্ছে ইউক্রেন আশাবাদী হলেও বহু প্রতিবন্ধকতা রয়েছে। বিশেষ করে, মাকরঁ ও শোলত্‍জ়ের কথায় ভরসা পাচ্ছেন না অনেকে। মাকরঁ আগে বলেছিলেন, ''ইইউ-এর সদস্য পদ পেতে ইউক্রেনের বহু বছর লেগে যাবে। এক দশক পেরিয়ে গেলেও অবাক হওয়ার নয়।'' কিন্তু আজ তিনি বলেন, অবিলম্বে ইউক্রেনকে ইইউ-এ জায়গা দেওয়া উচিত। আজ শোলত্‍জ়ের উপস্থিতি নিয়েও অনেকের মনে অনেক প্রশ্ন জেগেছে। একটি ভারী ব্রিফকেস নিয়ে গাড়ি থেকে নামেন জার্মান রাষ্ট্রনেতা। লাল কার্পেটে গিয়ে দাঁড়ানোর সময়ে নিজের পাশে সেটা নামিয়ে রাখেন। তবে কিছু ক্ষণ পরেই সেটি সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। মাকরঁ, শোলত্‍জ়ের মতোদ্রাঘিও ইউক্রেনের ইইউ যোগ দেওয়ায় সমর্থন জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ''ইটালি চায়, ইউক্রেন ইইউ-এ যোগ দিক। ইউক্রেনের মানুষ প্রতিদিন গণতন্ত্র রক্ষা ও স্বাধীনতার জন্য লড়ছেন। আমরা আর এই যোগদান পদ্ধতি ফেলে রাখতে পারি না।''

মাকরঁদের সঙ্গে আজকের বৈঠকে যোগ দিয়েছিলেন রোমানিয়ার প্রেসিডেন্ট ক্লস ইয়োহানিস। মারিনস্কি প্রাসাদে পাঁচ রাষ্ট্রনেতা একত্রে গোলটেবিল বৈঠকে বসেন। কী আলোচনা হয়েছে, তা রাত পর্যন্ত আনুষ্ঠানিক ভাবে ঘোষণা করা হয়নি। তবে মাকরঁ পরে বলেছেন, ''ইউক্রেনকে প্রতিরোধ করে যেতে হবে, ওরাই জিতবে।'' রাশিয়া যে 'নৃশংস' হামলা চালিয়ে যাচ্ছে, তার তীব্র নিন্দা করেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট। যুদ্ধবিধ্বস্ত ইরপিন শহরের পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে সেখানে যান মাকরঁ, শোলত্‍জ় এবং দ্রাঘি।

মস্কো এ দিনের ঘটনার প্রতিক্রিয়া দিতে ছাড়েনি। ক্রেমলিন-কর্তা দিমিত্রি মেদভেদেভ বিদ্রূপ করে বলেন, ''যারা ব্যাঙ, লিভার দিয়ে তৈরি সসেজ, স্প্যাগেটির ভক্ত, তারা কিভে যেতে খুব ভালবাসে। কিন্তু কাজের কাজ শূন্য।''

রাজশাহীর সময়/এম