দ্য চায়েওয়ালা রেস্তরাঁয় ওয়ার্ল্ড নিউট্রিশন ডে -২০২২ উপলক্ষে হয়ে গেল এক মনোজ্ঞ আলোচনা সভা। সেখানে উপস্থিত ছিলেন নিউট্রিশনিস্ট মায়াংকা সিংহাল এবং অভিনেত্রী অনুরাধা মুখোপাধ্যায়।
মায়াংকা সিংহাল সামার ডায়েটের ওপর জোর দিয়ে বলেন (World Nutrition Day 2022) , আমাদের গ্রীষ্মপ্রধান দেশে ছেলে এবং মেয়ে নির্বিশেষে সুস্বাস্থ্যের জন্য পুষ্টির জরুরি। আর সুষম খাদ্য শুধু যে আমাদের শরীরকে সুস্থ রাখে তা নয়, মানসিক ভাবেও সহায়ক হয়। যাঁরা নিরামিষ খান তাঁদের খাদ্যতালিকায় ভাত, ডাল, খিচুড়ি, রাজমা, রুটি, ফ্রুট জুস, টক দই ইত্যাদি রাখা উচিত। আর যাঁরা আমিষে অভ্যস্ত তাঁদের সহজপাচ্য তরকারি থেকে শুরু করে ডাল, ভাত ,রুটি, মাছের পদ ইত্যাদি রাখা জরুরি। তবে রেডমিট এড়িয়ে চলাই শ্রেয়। হালকা তেল মশলা দিয়ে চিকেন খাওয়া যেতে পারে। জলের পরিমাণটা গরমে একটু বেশি পরিমাণে খাওয়া উচিত। প্যাকেটের খাবার এড়িয়ে চলাই উচিত। এই সময়ে মরসুমি নানা রকমের ফল বাজারে পাওয়া যায়। যদি শারীরিক কোনও সমস্যা না থাকে তবে এই ফলের জুস খাওয়া যেতে পারে। তবে এক্ষেত্রে একটা কথা বলব প্রত্যেকেরই শারীরিক পরিস্থিতি একেকজনের ক্ষেত্রে একেক রকম। সেটা বুঝে নিয়ে খাওয়া উচিত। বাইরের খাবার যতটা পরিমাণ এড়িয়ে চলা বাঞ্ছনীয়। অনেক সময় খাবার আমাদের মুড তৈরি করে।
পুষ্টিবিদের মতে, একটা ভাল খাবার খেলে আমাদের মুড ভাল হয়ে যায় । উল্টোদিকে আবার কখনও যদি খাবার ভাল না লাগে বা পছন্দ না হয়, লক্ষ্য করলে দেখা যায় যে আমাদের মুড ঠিক থাকে না। তাই খাবারের সঙ্গে আমাদের মনের একটা যোগসুত্র রয়েছে। খাদ্যতালিকায় যাই খাবার থাকুক না কেন তা যেন ব্যালেন্স ডায়েট হয়। আজকাল এই প্রজন্মের অনেক ছেলেমেয়েদের মধ্যেই না খেয়ে রোগা হওয়ার প্রবণতা থাকে। যা শরীরের জন্য হানিকর। যদি নিজেকে তন্বী এবং সুস্থ রাখতে চান সেক্ষেত্রে নিজে ডায়েট চার্ট তৈরি না করে ডায়েটিশিয়ানের পরামর্শ নিন। যিনি আপনার শারীরিক অবস্থানের কথা মাথায় রেখে সঠিক খাবারের পরামর্শ দেবেন।
অভিনেত্রী অনুরাধা মুখোপাধ্যায় বলেছেন , আমি এই প্রজন্মের একজন অভিনেত্রী হয়ে দেখি যে আমাদের প্রজন্মের ছেলেমেয়েরা না খেয়ে রোগা থাকতে চায়। কিন্তু আমি নিজে তা করি না। ছেলেবেলার থেকে যে নির্দিষ্ট ডায়েটে বড় হয়েছি আজও আমি সেটাই অনুসরণ করি। আমার মনে হয় অভুক্ত ও অসুস্থ অবস্থায় কোনও ভাল কাজ হয় না। এই গরমে আমি একটু ভেজ খেতে পছন্দ করি। শুক্তো, থোড়, মোচা যাই হোক না কেন ।এছাড়া আমি মাছ খাই ।প্রচুর পরিমাণে জল খাই। কিন্তু রেডমিট একেবারেই খাই না। শ্যুটিং চলাকালীন বাড়ির খাবার খেতে পছন্দ করি। কিন্তু আউটডোরে গেলে অনেক সময় তা সম্ভব হয়ে ওঠেনা। আমি নিজে জিমে যাই না ।কারণ আউটডোরে যখন যেতে হয় তখন অনেক সময় সেখানে জিম মেলে না। ফলে যোগাতেই আমি অভ্যস্ত। আমার মনে হয় মেয়েদের পুষ্টির দিকে বেশি খেয়াল রাখা প্রয়োজন। কারণ মেয়েরা সন্তান ধারণ করেন। ফলে মেয়েদের অনেক সময় দেখেছি সাংসারিক নানা কারণে তাঁরা খাবারের প্রতি অনীহা প্রকাশ করেন কিংবা এড়িয়ে যান যা একেবারেই ঠিক নয়। সুষম খাদ্য অত্যন্ত প্রয়োজন। যা ভেতর থেকে ইমিউনিটি সিস্টেম কে শক্তিশালী করে। যে কোনও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় বলে আমি মনে করি । যে নির্দিষ্ট ডায়েটে আমি বড় হয়েছি হঠাৎ করে সব খাবার ছেড়ে দিলে স্বাস্থ্যের উন্নতি থেকে অবনতি হয় বলে আমার ধারণা।অর্থাৎ সুষম খাদ্য এবং ব্যালেন্স ডায়েট প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় রাখা উচিত, যা শরীরে পুষ্টি জোগায়। পুষ্টিগত খাদ্য প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় রাখা বাঞ্ছনীয় এমন কথা এই আলোচনায় উঠে আসে।