নামাজ ইসলামের প্রধান ইবাদত। ঈমান গ্রহণের পর এ নামাজেই অন্তরে প্রশান্তি পায় মুমিন। যে কারণে মুমিন নামাজে নিয়োজিত থাকে। নামাজ ছেড়ে কোনো মুমিনই থাকতে পারেন না। নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম জীবনের অন্তিমমুহূর্তেও নামাজের প্রতি বিশেষ তাগিদ দিয়েছেন; বলেছেন- নামাজ, নামাজ। এ নামাজই মুমিনের অন্তরের প্রশান্তির অন্যতম মাধ্যম। আল্লাহ তাআলা কোরআনে নির্দেশ দিয়েছেন-
‘তোমরা নামাজ প্রতিষ্ঠা কর।’ (সুরা বাকারা : আয়াত ৪৩)
শর্ত মেনে যথাযথ নিয়মে সমাজের সর্বস্তরে নামাজ পড়ার প্রচলনই নামাজ প্রতিষ্ঠা। আল্লাহ তাআলা মুমিন মুসলমানকে নিজে নামাজ পড়ার এবং সমাজে নামাজ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে মূলত প্রশান্তি প্রতিষ্ঠার নির্দেশই দিয়েছেন।
নামাজ একটি ইবাদত। ইবাদতের মাধ্যমে মানুষ আল্লাহর সঙ্গে আন্তরিক সম্পর্ক গড়ে তোলে। এ ইবাদতে দেহ-মন-আত্মার অংশগ্রহণ ঘটে। সমভাবে দেহ-মন-আত্মার সম অংশগ্রহণও ঘটে এ নামাজে। এ কারণেই মহান আল্লাহ বান্দাকে কোরআনের বিভিন্ন স্থানে নামাজ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে শান্তি প্রতিষ্ঠার আহ্বান জানিয়েছেন।
অন্যদিকে মানুষ সৃষ্টির উদ্দেশ্য হলো- আল্লাহর ইবাদত করা। মানব সৃষ্টির উদ্দেশ্য তুলে ধরে মহান আল্লাহ বলেন-
‘আমার বান্দাদের বল, ‘যারা ঈমান এনেছে তারা যেন নামাজ প্রতিষ্ঠা করে এবং আমি তাদের যে রিজিক দিয়েছি তা থেকে গোপন ও প্রকাশ্য ব্যয় করে, ঐ দিন আসার আগে; যে দিন কোনো বেচা-কেনা থাকবে না এবং থাকবে না বন্ধুত্বও।’ (সুরা ইবরাহিম : আয়াত ৩১)
এ আয়াত থেকে বিষয়টি সুস্পষ্ট। শান্তি ও মুক্তির ইবাদত নামাজ। নামাজে যেমন বান্দা প্রশান্তি পায়। তেমনি মহান আল্লাহ কেয়ামতের দিন সর্বপ্রথম নামাজের হিসাব নেবেন। যে ব্যক্তি নামাজের হিসাব যথাযথভাবে দিতে পারবেন; তার পরবর্তী সব মনজিল হবে সহজ ও মুক্তির উপায়।
সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠায় ঐক্যবদ্ধভাবে নামাজ প্রতিষ্ঠার বিকল্প নেই। একা একা নামাজ পড়ায় নামাজ প্রতিষ্ঠা হয় না। বরং সম্মিলিতভাবে যথাসময়ে ইমামের সঙ্গে মসজিদে জামাতে অংশগ্রহণ দ্বারাই পরিপূর্ণ নামাজ প্রতিষ্ঠা পায়। তখনই সমাজ থেকে অন্যায়-অনাচার দূর হয়ে। প্রতিষ্ঠিত হয় শান্তি। মুক্তি পায় মানবতা।
মনে রাখতে হবে: প্রতিদিন নির্ধারিত সময়ে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা ফরজ। শান্তি ও মুক্তির জন্য নিয়ম মেনে যথাসময়ে নামাজ পড়ার তাগিদ দিয়ে মহান আল্লাহ ঘোষণা করেন-
‘নিশ্চয়ই নির্ধারিত সময়ে নামাজ (আদায় করা) মুমিনদের জন্য অবশ্যক কর্তব্য।’ (সুরা নিসা : আয়াত ১০৩)
একান্তই যথাসময়ে জামাতের সঙ্গে নামাজ প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে অংশগ্রহণ করতে না পারলে পর অবশ্যই ওই নামাজ আদায় করেনিতে হবে। তারপরও নামাজ থেকে বিরত থাকার কোনো উপায় নেই।
সুতরাং মুমিন মুসলমানের উচিত, দুনিয়ার শান্তি ও পরকালের মুক্তিতে নামাজ প্রতিষ্ঠায় নিজেকে নিয়োজিত করার বিকল্প নেই। নিজে যথা সময়ে মসজিদে উপস্থিত হওয়ার সঙ্গে নিজ নিজ অধীনস্তদের নামাজে অংশগ্রহণ বাধ্যতামূলক করার সর্বাত্মক চেষ্টা করা। সবার মাঝে নামাজ প্রতিষ্ঠার সচেতনা গড়ে তোলার সর্বাত্মক চেষ্টা করা।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে নির্ধারিত সময়ে নামাজ প্রতিষ্ঠায় শরিক হওয়ার মাধ্যমে দুনিয়ার শান্তি ও পরকালের মুক্তিতে এগিয়ে আসার তাওফিক দান করুন। আমিন।
রাজশাহীর সময়/এইচ