ইসলামের দ্বিতীয় যুদ্ধ ওহুদ। ওহুদ প্রান্তরের এ যুদ্ধে মুসলিম ও কুরাইশ কারও জয়-পরাজয়ই সুরাহা হয়নি। কুরাইশদের হতাশা নিয়ে মক্কায় ফিরতে হয়েছিল। মুসলিমন বাহিনীর মনোবল চাঙ্গা রাখতে এবং সান্ত্বনা দিতে মহান আল্লাহ মুমিনদের বিজয়ের কথা শোনালেন। কোরআনের একাধিক আয়াতে সে বর্ণনাগুলো এভাবে এসেছে-
وَلاَ تَهِنُوا وَلاَ تَحْزَنُوا وَأَنتُمُ الأَعْلَوْنَ إِن كُنتُم مُّؤْمِنِينَ
‘আর তোমরা নিরাশ হয়ো না এবং দুঃখ করো না। যদি তোমরা মুমিন হও; তবেই তোমরা বিজয়ী হবে।’ (সুরা আল-ইমরান : আয়াত ১৩৯)
إِن يَمْسَسْكُمْ قَرْحٌ فَقَدْ مَسَّ الْقَوْمَ قَرْحٌ مِّثْلُهُ وَتِلْكَ الأيَّامُ نُدَاوِلُهَا بَيْنَ النَّاسِ وَلِيَعْلَمَ اللّهُ الَّذِينَ آمَنُواْ وَيَتَّخِذَ مِنكُمْ شُهَدَاء وَاللّهُ لاَ يُحِبُّ الظَّالِمِينَ
‘তোমরা যদি আহত হয়ে থাক, তবে তারাও তো তেমনি আহত হয়েছে। আর এ দিনগুলোকে আমি মানুষের মধ্যে পালাক্রমে আবর্তন ঘটিয়ে থাকি। এভাবে আল্লাহ জানতে চান- কারা ঈমানদার আর তিনি তোমাদের কিছু লোককে শহিদ হিসাবে গ্রহণ করতে চান। আর আল্লাহ অত্যাচারীদেরকে ভালবাসেন না।’ (সুরা আল-ইমরান : আয়াত ১৪০)
وَلِيُمَحِّصَ اللّهُ الَّذِينَ آمَنُواْ وَيَمْحَقَ الْكَافِرِينَ
‘আর এ কারণে আল্লাহ ঈমানদারদের পাক-পবিত্র করতে চান এবং কাফেরদেরকে ধবংস করে দিতে চান।’ (সুরা আল-ইমরান : আয়াত ১৪১)
أَمْ حَسِبْتُمْ أَن تَدْخُلُواْ الْجَنَّةَ وَلَمَّا يَعْلَمِ اللّهُ الَّذِينَ جَاهَدُواْ مِنكُمْ وَيَعْلَمَ الصَّابِرِينَ
‘তোমাদের কি ধারণা- তোমরা জান্নাতে প্রবেশ করবে? অথচ আল্লাহ এখনও দেখেননি তোমাদের মধ্যে কারা জেহাদ করেছে এবং কারা ধৈর্য্যশীল।’ (সুরা আল-ইমরান : আয়াত ১৪২)
কী ঘটেছিল ওহুদে?
ওহুদ যুদ্ধে মুসলিম বাহিনী প্রথম দিকে এগিয়ে থাকলেও শেষ দিকে নবিজীর দিকনির্দেশনা অমান্য করার কারণেই সাময়িকভাবে মুসলিম বাহিনী বিপদের সম্মুখনি হয়। আর এতে ৭০ জন সাহাবি শাহাদাত বরণ করেন এবং আহত হন স্বয়ং বিশ্বনবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম।
অন্যদিকে কুরাইশ বাহিনী শেষ দিকে মুসলিম বাহিনীর ওপর প্রাধন্য বিস্তার করলেও তারা মদিনায় প্রবেশ করতে পারেনি এবং ওহুদ প্রান্তর থেকেই হতাশা নিয়ে মক্কায় ফিরে যেতে বাধ্য হয়। এ যুদ্ধেও কুরাইশদের হতাহতের সংখ্যা মুসলিমদের তুলনায় বেশি। এরপরই মুসলিম বাহিনীর বিজয় ও সান্ত্বনা দিয়ে মহান আল্লাহ তাআলা এ আয়াতগুলো নাজিল করেন।
ওহুদের ঘটনা ও কোরআনের এ আয়াতগুলোতে রয়েছে মুসলিম উম্মাহর জন্য অনেক শিক্ষণীয় বিষয়। হিজরতে তৃতীয় বছর শাওয়াল মাস মোতাবেক ৬২৫ খ্রিষ্টাব্দের ১১ মার্চ অনুষ্ঠিত হয় এ যুদ্ধ। যথারীতি যুদ্ধের প্রস্তুতি নিয়ে পরামর্শ গ্রহণ করা হয়। সে আলোকে মুহাজির, আউস ও খাজরাজ গোত্র থেকে এ যুদ্ধের জন্য ৩জন সেনাপতির নাম ঘোষণা করা হয়। তারা হলেন যথাক্রমে- হজরত মুসআব ইবনে উমায়ের, উসাইদ ইবনে হুজাইর এবং হুবাব ইবনে মুনজির।
পবিত্র নগরী মদিনা থেকে তিন মাইল উত্তরের পাহাড় ও উপত্যকার নাম ওহুদ প্রান্তর। মক্কার কুরাইশরা এ প্রান্তরে ৩ হাজার উট ও ২০০ ঘোড়াসহ ৩ হাজার সৈন্য বাহিনী এসে উপস্থিত হয়। তাদের সঙ্গে মোকাবেলায় মুসলিম বাহিনী ১ হাজার সৈন্য নিয়ে ওহুদের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়। কিছু দূর যাওয়ার পর যুদ্ধে অস্বীকৃতি জানান আব্দুল্লাহ ইবনে উবাই। ৩০০ সৈন্য নিয়ে মুসলিম বাহিনী থেকে দলত্যাগ করে তারা মদিনায় ফিরে আসে।
নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মুসলিম বাহিনীর ৭০০ সাহাবিকে সঙ্গে নিয়ে ওহুদ ময়দানে উপস্থিত হয়। ৭০০ সাহাবির মুসলিম বাহিনীতে মাত্র ২জন অশ্বারোহী, ৭০ জন বর্মধারী ও ৪০ জন তিরন্দাজ সৈন্য ছিল। বাকি সবাই ছিলেন পদাতিক। তাদের কারও হাতে ছিল বর্শা, কারো হাতে ঢাল-তলোয়ার।
নবিজীর ঘোষণা: রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম স্বয়ং এই প্রতিরক্ষা যুদ্ধ পরিচালনার দায়িত্ব পালন করেন। ওহুদ প্রান্তরে এসে মুসলিম শিবিরের বাঁ পাশে পাহাড়ে একটি সুড়ঙ্গপথ ছিল। নবিজী সেখানে ৫০ জনের একটি তিরন্দাজ দলকে এই গিরিপথের পাহারায় নিযুক্ত করেন এবং বলেন-
‘আমাদের জয়-পরাজয় যা-ই হোক, তোমরা এই স্থান পরিত্যাগ করবে না।’
মুসলিম বাহিনী মদিনা থেকে বের হয়ে শাঈখাইন নামক স্থানে রাত যাপন করেন। হজরত বেলাল রাদিয়াল্লাহু আনহু ফজরের আজানে দিলে সবাই একত্রে নামাজ আদায় করেন।
ওহুদ যুদ্ধে মুসলিম বাহিনীর তিনটি পতাকা ছিল। প্রধান পতাকাবাহী ছিলেন মুহাজির হজরত মুসআব ইবনে উমায়ের এবং অপর দুটি আউস ও খাজরাজ বংশের দুই দলপতি যথাক্রমে উসাইদ ইবনে হুজাইর এবং হুবাব ইবনে মুনজিরের হাতে।
মল্লযুদ্ধের মাধ্যমে শুরু হয় ওহুদ যুদ্ধ। এতে কুরাইশদের তরুণ যোদ্ধা তালহা আক্রমণে এলে হজরত আলি রাদিয়াল্লাহু আনহু তাকে বধ করেন। তালহার ভাই ওসমান আক্রমণ করলে হজরত হামজা তাকে সংহার করলেন। কুরাইশরা তাদের বীর সেনাদের পরাজয়ে বিচলিত হয়ে সংঘবদ্ধ আক্রমণ করে।
হজরত হামজা, আলি, আবু দুজানা, জিয়াদ, জুবায়ের প্রমুখ সাহাবিরা বীর বিক্রমে যুদ্ধ চালিয়ে যান। কুরাইশ অশ্বারোহী বাহিনী দুই-দুইবার গিরিপথে প্রবেশের চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে ফিরে যায়। ওহুদের প্রান্তরেও যেন বদরের পুনরাবৃত্তি ঘটতে যাচ্ছে। ফলে কুরাইশরা যুদ্ধ বাদ দিয়ে পালাতে থাকে।
ভুল বুঝাবুঝি: জয় সুনিশ্চিত ভেবে এ সময় মুসলিম বাহিনী গনিমত সংগ্রহে মনোযোগ দেয়। যুদ্ধ শেষ মনে করে নবিজীর নির্দেশিত গিরি পথের ৫০জন রক্ষীর মধ্যে ৩৮ জন গণিমত কুড়াতে চলে আসে। এই সুযোগে কুরাইশদের সিপাহসালার খালিদ বিন ওয়ালিদ ওই গিরিপথ দিয়ে পুনরায় মুসলিম বাহিনীর ওপর আতর্কিত হামলা চালায়। যার ফলে সাময়িকভাবে মুসলিম বাহিনী ছত্রভঙ্গ হয়ে পড়ে।
ফলে অনাকাঙ্ক্ষিত এই পরিস্থিতিতে মুসলমানগণ দিগ্বিদিক ছুটতে থাকে। প্রধান সেনাপতি হজরত মুসআব ইবনে উমায়ের ও নবীজির চাচা হজরত হামজা শহিদ হন। নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মারাত্মকভাবে আহত হন। নবিজীর নির্দেশ অমান্য করার কঠিন মাশুল গুণতে হয় মুসলিম বাহিনীকে।
নির্দয় কুরাইশরা নবিজীর ওপর সর্বাত্মক আক্রমণে ঝাঁপিয়ে পড়ে। নির্মম হামলায় তাঁর জীবন বিপন্নপ্রায়। সাহাবায়ে কিরাম নিজেদের জীবনবাজি রেখে, নিজেদের বুককে ঢাল বানিয়ে নবীজিকে রক্ষা করার সর্বাত্মক চেষ্টা অব্যাহত রাখেন।
হজরত হামজাকে হত্যাকারী ইবনে কামিয়া নবীজিকে তরবারি দ্বারা কঠিন আঘাত করে। হজরত তালহা ইবনে উবায়দুল্লাহ হাত দিয়ে ঠেকালে তাঁর আঙুল বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। নবীজির শিরস্ত্রাণ বিদীর্ণ হয়ে দুটি লৌহ কড়া তাঁর কপালে বিঁধে যায়। এতে নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন।
এ সময় কুরাইশরা ‘মুহাম্মাদ নিহত!’ বলে উল্লাস করতে থাকে। তারা হজরত মুসআব ইবনে উমাইর রাদিয়াল্লাহু আনহুকে দেখে এ কথা প্রচার করতে থাকে। কারণ শহিদ হজরত মুসআব রাদিয়াল্লাহু আনহুর চেহারার সঙ্গে নবীজির চেহারার মিল ছিল।
জাতির জন্য নবিজীর দোয়া: জ্ঞান ফিরে এলে প্রিয় নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এভাবে আল্লাহর কাছে দোয়া করলেন-
‘হে আমার প্রভু! আমার জাতিকে ক্ষমা করো; তারা অজ্ঞ, তারা বোঝে না।’
ওহুদের যুদ্ধের জয়-পরাজয় মিমাংশা না হলেও এতে ৭০ জন মুসলিম সাহাবি শাহাদাত বরণ করেন। আর কুরাইশ নেতা আবু সুফিয়ান, জুবায়ের ইবনে মুতইম ও হাকেম ইবনে হিজাম ছাড়া কুরাইশদের নেতৃস্থানীয় ৩৫০ জন নিহত হয়। জীবিত ৩ কুরাইশ নেতাই পরবর্তীতে ইসলাম গ্রহণ করেন।
ওহুদ যুদ্ধের শিক্ষা: এ যুদ্ধে প্রমাণিত হলো- নবিজীর আনুগত্য না করলে পরাজয় কিংবা বিপদ সুনিশ্চিত। যার ফলে খালিদ বিন ওয়ালিদ ওহুদ প্রান্তরে মুসলিম বাহিনীকে ছত্রভঙ্গ করে দেয়। আর এ যুদ্ধে জীবন দিতে হয় হজরত মুসআব ও হামজা রাদিয়াল্লাহু আনহুকে। আহত হতে হয় স্বয়ং নবিজীকে। পরবর্তীতে কুরাইশদের এ সেনাপতি খালিদ ইবনে ওয়ালিদ ইসলাম গ্রহণ করেন। ওহুদের যুদ্ধ থেকেই পরবর্তীতে বিশ্বনবির আনুগত্য ও নির্দেশ মেনে চলার পাথেয় খুঁজে পায় মুসলিম বাহিনী। ভয় ও শঙ্কা দুর করতেই মহান আল্লাহ ঘোষণা করেন তাঁর অমীয় বাণী-
وَلاَ تَهِنُوا وَلاَ تَحْزَنُوا وَأَنتُمُ الأَعْلَوْنَ إِن كُنتُم مُّؤْمِنِينَ - إِن يَمْسَسْكُمْ قَرْحٌ فَقَدْ مَسَّ الْقَوْمَ قَرْحٌ مِّثْلُهُ وَتِلْكَ الأيَّامُ نُدَاوِلُهَا بَيْنَ النَّاسِ وَلِيَعْلَمَ اللّهُ الَّذِينَ آمَنُواْ وَيَتَّخِذَ مِنكُمْ شُهَدَاء وَاللّهُ لاَ يُحِبُّ الظَّالِمِينَ
‘আর তোমরা নিরাশ হয়ো না এবং দুঃখ করো না। যদি তোমরা মুমিন হও; তবেই তোমরা বিজয়ী হবে। তোমরা যদি আহত হয়ে থাক, তবে তারাও তো তেমনি আহত হয়েছে। আর এ দিনগুলোকে আমি মানুষের মধ্যে পালাক্রমে আবর্তন ঘটিয়ে থাকি। এভাবে আল্লাহ জানতে চান- কারা ঈমানদার আর তিনি তোমাদের কিছু লোককে শহিদ হিসাবে গ্রহণ করতে চান। আর আল্লাহ অত্যাচারীদেরকে ভালবাসেন না।’ (সুরা আল-ইমরান : আয়াত ১৩৯-১৪০)
যুদ্ধ শেষে প্রিয় নবির দোয়া: হজরত ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বলের বর্ণনায় এসেছে, ‘ওহুদের দিন যখন মুশরিকরা মক্কার পথে ফিরে যায় তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাহাবায়ে কেরামকে বলেন- ‘তোমরা সমানভাবে দাঁড়িয়ে যাও, আমি কিছুক্ষণ আমার মহিমান্বিত প্রতিপালকের প্রশংসা ও গুণগান করব।’ এ আদেশ অনুযায়ী সাহাবায়ে কেরাম তাঁর পেছনে কাতার বন্দী হয়ে যান। তিনি বলেন-
১. اللَّهُمَّ لَكَ الْحَمْدُ كُلُّهُ اللَّهُمَّ لاَ قَابِضَ لِمَا بَسَطْتَ وَلاَ بَاسِطَ لِمَا قَبَضْتَ وَلاَ هَادِيَ لِمَا أَضْلَلْتَ وَلاَ مُضِلَّ لِمَنْ هَدَيْتَ وَلاَ مُعْطِيَ لِمَا مَنَعْتَ وَلاَ مَانِعَ لِمَا أَعْطَيْتَ وَلاَ مُقَرِّبَ لِمَا بَاعَدْتَ وَلاَ مُبَاعِدَ لِمَا قَرَّبْتَ اللَّهُمَّ ابْسُطْ عَلَيْنَا مِنْ بَرَكَاتِكَ وَرَحْمَتِكَ وَفَضْلِكَ وَرِزْقِكَ
‘হে আল্লাহ! আপনার জন্যেই সব প্রশংসা। হে আল্লাহ! যে জিনিসকে আপনি প্রশস্ত করেন ওটাকে কেউ সংকীর্ণ করতে পারে না, আর যে জিনিসকে আপনি সংকীর্ণ করে দেন ওটাকে কেউ প্রশস্ত করতে পারে না। যাকে আপনি পথভ্রষ্ট করেন তাকে কেউ পথ দেখাতে পারে না এবং যাকে আপনি পথ দেখান তাকে কেউ পথভ্রষ্ট করতে পারে না, যেটা আপনি আটকিয়ে রাখেন ওটা কেউ প্রদান করে না, আর যেটা আপনি প্রদান করেন ওটা কেউ আটকাতে পারে না, যেটাকে আপনি দূর করে দেন ওটাকে কেউ নিটকবর্তী করতে পারে না। হে আল্লাহ! আমাদের উপর স্বীয় বরকত, রহমত, অনুগ্রহ এবং রিজিক প্রশস্ত করে দিন।
২. اللَّهُمَّ إِنِّيْ أَسْأَلُكَ النَّعِيْمَ الْمُقِيْمَ الَّذِيْ لاَ يَحُوْلُ وَلاَ يَزُوْلُ اللَّهُمَّ إِنِّيْ أَسْأَلُكَ النَّعِيْمَ يَوْمَ الْعَيْلَةِ وَالْأَمْنَ يَوْمَ الْخَوْفِ اللَّهُمَّ إِنِّيْ عَائِذٌ بِكَ مِنْ شَرِّ مَا أَعْطَيْتَنَا وَشَرِّ مَا مَنَعْتَ اللَّهُمَّ حَبِّبْ إِلَيْنَا الإِيْمَانَ وَزَيِّنْهُ فِيْ قُلُوْبِنَا وَكَرِّهْ إِلَيْنَا الْكُفْرَ وَالْفُسُوْقَ وَالْعِصْيَانَ وَاجْعَلْنَا مِنْ الرَّاشِدِيْنَ اللَّهُمَّ تَوَفَّنَا مُسْلِمِيْنَ وَأَحْيِنَا مُسْلِمِيْنَ وَأَلْحِقْنَا بِالصَّالِحِيْنَ غَيْرَ خَزَايَا وَلاَ مَفْتُوْنِيْنَ اللَّهُمَّ قَاتِلْ الْكَفَرَةَ الَّذِيْنَ يُكَذِّبُوْنَ رُسُلَكَ وَيَصُدُّوْنَ عَنْ سَبِيْلِكَ وَاجْعَلْ عَلَيْهِمْ رِجْزَكَ وَعَذَابَكَ اللَّهُمَّ قَاتِلْ الْكَفَرَةَ الَّذِيْنَ أُوْتُوْا الْكِتَابَ إِلَهَ الْحَقِّ
‘হে আল্লাহ! আমি আপনার কাছে এমন নেয়ামতের জন্য প্রার্থনা করছি যা স্থায়ী থাকে এবং শেষ হয় না। হে আল্লাহ! আমি আপনার কাছে দারিদ্রের দিনে সাহায্যের এবং ভয়ের দিনে নিরাপত্তার প্রার্থনা করছি। হে আল্লাহ! আপনি আমাদের যা কিছু দিয়েছেন তার অকল্যাণ থেকে এবং যা কিছু দেননি তারও অকল্যাণ হতে আশ্রয় চাচ্ছি। হে আল্লাহ! আমাদের কাছে ঈমানকে প্রিয় করে দিন এবং ওটাকে আমাদের অন্তরে সৌন্দর্যমণ্ডিত করুন। আর কুফর, ফিসক ও অবাধ্যতাকে আমাদের কাছে অপছন্দনীয় করে দিন এবং আমাদের হেদায়াতপ্রাপ্ত লোকদের অন্তর্ভুক্ত করে দিন। হে আল্লাহ! আমাদের মুসলিম থাকা অবস্থায় মৃত্যু দান করুন এবং মুসলিম থাকা অবস্থায় জীবিত রাখুন। আর আমরা লাঞ্ছিত হই এবং ফেদনায় পতিত হই তার আগেই আমাদের সৎলোকদের অন্তর্ভুক্ত করে দিন। হে আল্লাহ! আপনি ঐ কাফেরদের ধ্বংস করুন এবং কঠিন শাস্তি দিন, যারা আপনার নবিদের অবিশ্বাস করে এবং আপনার পথে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে। হে আল্লাহ! ঐ কাফেরদেরও ধ্বংস করুন যাদেরকে কিতাব দেয়া হয়েছে; হে সত্য মাবুদ।’ (বুখারি, আদাবুল মুফরাদ ও মুসনাদে আহমদ)
ওহুদের যুদ্ধ, যুদ্ধের ঘটনা, পরবর্তী দিকনির্দেশনা, বিশ্বনবির দোয়া এবং আল্লাহর পক্ষ থেকে মুমিনদের জন্য সান্ত্বনামূলক আয়াত নাজিল এসবই মুমিনদের জন্য অনুসরণীয় শিক্ষা। সঠিক পথপ্রাপ্তির আলোকবর্তিকা। নবিজীর আনুগত্য ও দিকনির্দেশনায় রয়েছে মুমিনের জন্য সুনিশ্চিত বিজয়।
রাজশাহীর সময়/এএইচ