আফগানিস্তানের উত্তরাঞ্চলীয় বালখ প্রদেশ ও রাজধানী কাবুলে সিরিজ বোমা হামলায় নিহত হয়েছেন ১২ জন, আহত হয়েছেন আরও বহুসংখ্যক। বুধবার বালখ ও কাবুলে ৪ টি বোমা বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে এএফপি।
প্রাদেশিক পুলিশ ও স্বাস্থ্যসেবা কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়, বুধবার বালখ প্রদেশের প্রধান শহর মাজার ই শরিফে তিনটি মিনিবাসে বোমা বিস্ফোরণ ঘটে। এতে ১০ জন নিহত হন এবং আহত হন আরও ১৫ জন। নিহতদের মধ্যে ৩ জন নারী রয়েছেন বলে এএফপিকে জানিয়েছেন বালখ প্রাদেশিক স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের প্রধান নাজিবুল্লাহ তাওয়ানা।
মাজার ই শরিফের প্রাদেশিক পুলিশের মুখপাত্র আসিফ ওয়াজিরি এএফপিকে এ সম্পর্কে বলেন, ‘শহরের বিভিন্ন সড়কে তিনটি মিনিবাসে বোমা রাখা হয়েছিল।’
এদিকে, একই দিন কাবুলের একটি মসজিদে বোমা হামলায় ২ জন নিহত ও ১০ জন আহত হয়েছেন বলে এএফপিকে জানিয়েছে আফগানিস্তানের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। আহতদের কাবুলের ইমার্জেন্সি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে উল্লেখ করেছেন মন্ত্রণালের কর্মকর্তারা।
তবে এক টুইটবার্তায় ইমার্জেন্সি হাসপাতালের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, মসজিদে বোমা বিস্ফোরণের ঘটনায় নিহত হয়েছেন ৫ জন এবং আহত হয়েছেন আরও ২২ জন।
এখন পর্যন্ত কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠী হামলার দায় স্বীকার না করলেও দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের দৃঢ় ধারনা, আন্তর্জাতিক জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেটের (আইএস) আফগানিস্তান শাখা আইএস খোরাসান (আইএস-কে) বুধবারের হামলার জন্য দায়ী।
গত বছর আগস্টে আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখল করে তালেবান গোষ্ঠী। তারপর গত কয় মাসে বেশ কয়েকটি প্রাণঘাতী বোমা বিস্ফোরণ হয়েছে দেশটির বিভিন্ন শহরে।
সব’টি বিস্ফোরণই ঘটিয়েছে আইএস-কে এবং অধিকাংশ ক্ষেত্রেই লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে দেশটির সংখ্যালঘু শিয়া মুসলিমদের গোত্র হাজারা সম্প্রদায়কে।
তালেবান ও আইএস-কে— উভয়ই কট্টরপন্থী সুন্নি ইসলামি গোষ্ঠী। তবে এ দুই গোষ্ঠীর পরস্পরের মধ্যে চরম বৈরীতা রয়েছে। এই বৈরীতার প্রধান কারণ এই দুই সংগঠনের মতাদর্শিক ভিন্নতা।
তালেবান গোষ্ঠী আফগানিস্তানকে বিদেশি প্রভাবমুক্ত একটি কট্টর ইসলামি রাষ্ট্র হিসেবে দেখতে ইচ্ছুক। অন্যদিকে আইএস-কে চায়, তুরস্ক থেকে আফগানিস্তান হয়ে পাকিস্তান ও উপমহাদেশে খিলাফত প্রতিষ্ঠিত হোক।
রাজশাহীর সময়/জেড