২৫ নভেম্বর ২০২৪, সোমবার, ০৩:৪০:১৬ পূর্বাহ্ন


অনাথ আশ্রমের সেই ছেলেটিই এখন শিল্পপতি !
আন্তর্জাতিক ডেস্ক :
  • আপডেট করা হয়েছে : ২৪-০৫-২০২২
অনাথ আশ্রমের সেই ছেলেটিই এখন শিল্পপতি ! অনাথ আশ্রমের সেই ছেলেটিই এখন শিল্পপতি !


ইতালির নামকরা শিল্পপতি লিওনার্দো দেল ভেচিও। ধনপতিদের তালিকায় তার নাম। বিশ্বের সবচেয়ে বড় চশমার ব্যবসা তাঁরই নামে রয়েছে। লাক্সোটিকা কোম্পানির মালিক এই লিওনার্দো দেল ভেচিওর অতীত কিন্তু চমকপ্রদ। আজ যিনি কোটি কোটি টাকার মালিক, একটা সময় তাঁকেই অভাবের তাড়নায় ঘুরতে হয়েছিল রাস্তায় রাস্তায়। এমনকি পয়সা বাঁচাতে এই ছেলেকেই তাঁর মা অনাথ আশ্রমে দিয়ে এসেছিলেন!

ইতালিজুড়ে লিওনার্দো দেল ভেচিওর খ্যাতি আকাশছোঁয়া। দেশের অন্যতম বড় শিল্পপতি তিনি। একসময় পেট ভরে খেতে পেতেন না, জুটত না ন্যূনতম খাবারও।

তখন বিশ্বযুদ্ধ চলছে। অভাব ঘরে ঘরে। ভেচিওর জন্মের পাঁচ মাস আগেই মারা যান তাঁর বাবা। মা গ্রাজিয়া রোকো মিলান শহরের ফুটপাতে ঘুরতেন চার ছেলেমেয়ে নিয়ে। অভাব এতটাই তীব্র ছিল, যে শহরের এক অনাথ আশ্রমের দরজায় পৌঁছে গিয়েছিলেন গ্রাজিয়া। সেখানেই দিয়ে এসেছিলেন সাত বছরের লিওনার্দোকে। ইতালির সেই মারটিনিট ইনস্টিটিউট অরফ্যানেজেই লিওনার্দোর জীবনের পরবর্তী ৭ বছর কাটে।

গ্রাজিয়ার একটি চিঠি সংরক্ষিত রয়েছে ওই অনাথ আশ্রমের ফাইলে। বহুবছর সেই চিঠিতে কেউ হাত দেননি। পরে জানা গেছে ওই চিঠিতেই গ্রাজিয়া লিখে রেখেছিলেন একলা মায়ের জীবন সংগ্রামের কথা। লিওনার্দোর মা তখন একটি কারখানায় কাজ করতেন। ছেলেকে দেখার কেউ ছিল না। অযত্নে অবহেলায় যুদ্ধের আবহে ছেলেটা হয়তো মরেই যাবে, এই ভেবে অনাথ আশ্রমে তাঁকে রেখে আসতে বাধ্য হয়েছিলেন গ্রাজিয়া। সাত বছর সেখানে কাটিয়ে লিওনার্দোর বয়স যখন ১৪ বছর তখন অনাথ আশ্রম থেকে বেরিয়ে গিয়েছিলেন তিনি। কাজ খুঁজতে বেরিয়ে পড়েছিলেন বৃহত্তর জীবন সংগ্রামে।

লিওনার্দো সেই সময় নিজের কাছে একটা প্রতিজ্ঞা করে বেরিয়েছিলেন। স্থির করেছিলেন, আর কোনওদিন ক্ষুধার্ত থাকবেন না। নিজেকে এমন জায়গায় নিয়ে যাবেন যেখানে কেবল নিজের কাছেই কৈফিয়ৎ দিতে হবে। আর কারও কাছে নয়।

সেদিনের পর ৭৫টা বছর কেটে গেছে। ৮৭ ছুঁইছুঁই লিওনার্দো এখন এত বড় হয়েছেন, তাঁর অধীনে কাজ করেন অন্তত লাখ খানেক কর্মী। জনপ্রিয় ফ্রেঞ্চ-ইতালিয়ান চশমার কোম্পানিও চালান তিনি। আরও কত ক্ষেত্রে কত না বিনিয়োগ রয়েছে বর্ষীয়ান এই শিল্পপতির। অথচ সেই তাঁরই ছোটবেলায় অভাব ছিল নিত্যসঙ্গী।