১৪ নভেম্বর ২০২৪, বৃহস্পতিবার, ১০:৩৬:৩৭ অপরাহ্ন


রাজশাহীর হাটগুলোতে জমে উঠেছে খেজুর গুড়ের ব্যবসা
মঈন উদ্দীন
  • আপডেট করা হয়েছে : ২৭-০১-২০২২
রাজশাহীর হাটগুলোতে জমে উঠেছে খেজুর গুড়ের ব্যবসা রাজশাহীর হাটগুলোতে জমে উঠেছে খেজুর গুড়ের ব্যবসা


রাজশাহীর হাট গুলোতে জমে উঠেছে জমজমাট খেজুর গুড়ের ব্যবসা। প্রশাসনের সঠিক নজরদারির ফলে এ বছর উৎপাদন ও বিক্রি বেড়েছে ভেজালমুক্ত খেজুর গুড়ের।

সংশ্লিষ্টরা জানাচ্ছে, এ বছর মোট ৯৬ কোটি টাকার ব্যবসা হবে খেজুর গুড়ের। এদিকে রাজশাহী ও নাটোরসহ আশেপাশের জেলায় শীত মৌসুমে কয়েক শতকোটি টাকার খেজুর গুড় উৎপাদন ও বাণিজ্য হয়। এতে কর্মসংস্থান হচ্ছে হাজার হাজার পরিবারের। যার মধ্যে রাজশাহীতে ৬ হাজার পরিবার এর সাথে সরাসরি যুক্ত। আর নতুন ভাবে তরুণরাও এই ব্যবসায় যুক্ত হয়ে নিজেদের ভাগের পরিবর্তন ঘটাচ্ছে।

রাজশাহীতে খেজুর গুড় তৈরিতে এ অঞ্চলের পুরুষদের সঙ্গে নারীদেরও রয়েছে গুরুত্বপূর্ণ ভ’মিকা। পুরুষরা গাছ থেকে রস সংগ্রহ করার পরে চুলায় জ্বাল দেওয়া থেকে গুড় প্রস্তুত করে নারীরা। এখন দেশের চাহিদা মিটিয়ে খেজুর গুড় যাচ্ছে দেশের বাইরেও। মধ্যপ্রাচ্যসহ ইউরোপ-আমেরিকাসহ অনেক দেশ থেকে আসছে প্রচুর পরিমাণে বৈদেশিক মুদ্রা।

স্থানীয় গুড় ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, এখন দেশের সবচেয়ে বেশি গুড় তৈরি হয় রাজশাহীও নাটোর জেলাতে। এ ছাড়াও নওগাঁ, পাবনা, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায় কিছু গুড় উৎপাদন হচ্ছে। এর পরে যশোর, মাদারীপুর ও ফরিদপুর এলাকায় গুড় উৎপাদন হয়। রাজশাহীর বাঘা, চারঘাট, পুঠিয়া, দুর্গাপুরসহ নাটোর জেলার বাগাতিপাড়া ও লালপুর উপজেলায় রয়েছে লক্ষ লক্ষ খেজুর গাছ। শীতের মৌসুমে এলেই হাজার হাজার মানুষের কর্মসংস্থানের প্রধান উৎস শুরু হয়।

রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, শুধু রাজশাহী জেলাতেই খেজুর গাছ রয়েছে ১২ লাখ এক হাজার ৭৭৫ টি। এই গাছ থেকে মৌসুমে প্রায় ৯৬ কোটি টাকার গুড় উৎপাদন হচ্ছে। রাজশাহী জেলার সবচেয়ে বেশি গাছ রয়েছে তিনটি উপজেলায়। যার মধ্যে চারঘাট উপজেলায় খেজুরগাছের সংখ্যা এক লাখ ৮৪ হাজার ২৭৫ টি। বাঘা উপজেলায় খেজুরগাছ রয়েছে এক লাখ ৫৫ হজাার ৯২৫ টি। আর পুঠিয়া উপজেলায় খেজুরগাছ রয়েছে ৫ লাখ ৮৭ হাজার ৪৫২ টি। অন্যান্য উপজেলায়ও আরো গাছ আছে। এ ছাড়া নাটোর সদর, বাগাতিপাড়া ও লালপুর উপজেলাতেও কয়েক লক্ষ গাছ রয়েছে। এসব গাছ থেকে উৎপাদিত গুড়ের সবচেয়ে বড় বাজার বসে পুঠিয়া উপজেলার ঝলমলিয়া ও বানেশ্বর হাটে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর বলছে, রাজশাহীতে খেজুর গুড় উৎপাদনের সঙ্গে প্রায় ৩০ হাজারে বেশি মানুষ সম্পৃক্ত। এ বছর রাজশাহীতে ৯৬ কোটি টাকার খেজুর গুড়ের বাণিজ্য হবে।

জেলা প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা মোছাঃ উম্মে ছালমা জানান,‘রাজশাহী অঞ্চলের খেজুর গুড়ের সুনাম অনেক। সুস্বাদু এই গুড় দেশের বাইরে খুব চাহিদা। এখন গুড়ের ভালো দাম পাচ্ছেন গাছিরা। শীতের সময় হাজার হাজার মানুষের জীবিকা চলছে এই খেজুর গুড়ে।

রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক মোজদার হোসেন বলেন, ‘রাজশাহী জেলায় এ বছর প্রায় ৫০০- ৯৩ দশমিক ৪৭ হেক্টোর জমিতে গাছের সংখ্যা রয়েছে ১২ লাখ এক হাজার ৭৭৫ টি। গাছ প্রতি রস উৎপাদন ৮০ কেজি আর গুড় হবে ৮ কেজি করে। যার বাজার দাম ১০০ টাকা কেজি। মোট গুড় উৎপাদন হবে ৯ হাজার ৬০০ শত ১৪ দশমিক ২ মেট্রিকটন। গড়ে কেজিপ্রতি গুড়ের দাম ১০০ টাকা ধরলেও এ মৌসুমে ৯৬ কোটি টাকার গুড়ের বাণিজ্য হবে।

রাজশাহীর সময় /এএইচ