সানি লিওনের নাম শুনলেই চোখের সামনে ভেসে ওঠে এক লাস্যময়ী নারীর ছবি। নেট দুনিয়ায় এই অভিনেত্রীকে নিয়ে চর্চা কম হয় না। তাঁর বয়স বাড়লেও, চেহারায় সে ছাপ পড়ে না। আজ ৪১ বছরে পা দিলেন সানি। এখনও তিনি অনেক পুরুষের স্বপ্নের রাজকুমারী !
ভারতীয় বংশোদ্ভূত অভিনেত্রী ভারতের রুপোলি পর্দায় দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন অনেকদিন হল। যদিও জন্ম তাঁর কানাডাতে। তবে তাঁর জার্নির শুরুটা ছিল এক্কেবারে অন্যরকম, পর্ণ ছবিতে প্রথম আত্মপ্রকাশ করেন সানি লিওন। কিন্তু অনেকেই জানেন না, তাঁর পেডিয়াট্রিক নার্স হওয়ার বাসনা ছিল মনে। সেই নিয়ে পড়াশুনাও করেছেন। কিন্তু, পরে যোগ দেন পর্ণ ইন্ডাস্ট্রিতে। তবে সেখানেই তিনি নিজেকে সীমাবদ্ধ রাখেননি। কানাডা থেকে পাড়ি দিয়েছিলেন ভারতে। এখানেই একের পর এক প্রজেক্টের সঙ্গে নিজেকে জড়িয়ে ফেলেছেন, কুড়িয়েছেন প্রশংসা।
এই তারকার একটি দিক অনেকেরই অলক্ষ্যে থেকে গেছে, তা হল ১৮ বছর বয়সে তিনি বুঝতে পারেন তিনি একজন উভকামী। পুরুষদের পাশাপাশি, মেয়েদের প্রতিও যে তাঁর আকর্ষণ আছে, সেটাই উপলব্ধি করেন।
মায়ের সঙ্গে কেমন ছিল সানি লিওনের সম্পর্ক, জানুন ‘করণজিৎ কউর: দ্য আনটোল্ড স্টোরি অফ সানি লিওন’ সিজন-২-এর ট্রেলর। এবার আসা যাক তাঁর ভারতীয় মেইনস্ট্রিমের যাত্রায়। এমটিভি ইন্ডিয়াতে এমটিভি ভিডিও মিউজিক অ্যাওয়ার্ডের জন্য রেড কার্পেট রিপোর্টার হিসাবে ভারতে মেনস্ট্রিম দুনিয়ায় পা রাখেন সানি। সলমন খানের বিগ বসেও প্রতিযোগী হিসেবে তাঁকে দেখা যায়। এমনকি আরেক জনপ্রিয় রিয়েলিটি শো, স্প্লিটসভিলাতে সঞ্চালক হিসেবে কাজ করেছেন ‘বেবি ডল’।
তারপর বলিউড… পূজা ভাটের ‘জিসম টু’ সিনেমায় মুখ্য চরিত্রে অভিনয়ের মধ্যে দিয়ে বলিউডে (Bollywood) পা রাখেন সানি লিওন। সমালোচকদের প্রশংসা না পেলেও ব্যবসায়িক দিক থেকে সফল ছিল সিনেমাটি। এরপর জ্যাকপট, রাগিনী এমএমএস ২, এক পহেলি লীলা, তেরা ইন্তেজারের মতো ছবিতে স্বমহিমায় দেখা গেছে তাঁকে।
একজন সাধারণ ঘরের মেয়ে কীভাবে গুগলে সবচেয়ে বেশি চর্চিত নাম হয়ে উঠেছেন সানি, সেই গল্প ঘিরে ২০১৮ সালে তৈরি হয়েছিল তাঁর বায়োপিক ‘করণজিৎ কৌর: দ্য আনটোল্ড স্টোরি অফ সানি লিওন’! এবার তিনি পা দিতে চলেছেন ওটিটি প্ল্যাটফর্মে। বিক্রম ভাটের নতুন প্রজেক্টের হাত ধরেই তিনি আত্মপ্রকাশ করছেন এই প্ল্যাটফর্মে।
তবে, যে সানি লিওন একসময় নীলছবির শ্যুটিংয়ে পারদ চড়িয়েছেন, যে সানি কোমর দুলিয়েছেন ‘লায়লা’-এর মতো গানে, সেই সানিই এখন তিন সন্তানের মা। ২০১৭ সালে তিনি ও তাঁর স্বামী ড্যানিয়েল ওয়েবার একটি অনাথ আশ্রম থেকে নিয়ে এসেছিলেন ফুটফুটে এক কন্যাসন্তান। তাঁর নাম নিশা। এর পরে সারোগেসির মাধ্যমে দুই যমজ পুত্র সন্তানের জন্ম দেন তাঁরা।
এমন ছিপছিপে চেহারার সানি কিন্তু খেতে ভালোবাসেন। কী আছে তাঁর পছন্দের তালিকায়? পরোটা ও ইতালিয়ান খাবার তাঁর খুবই পছন্দের। ভালবাসেন কিউই ফল খেতেও। অনেকেই জানেন না যে সানি লিওন একজন আদ্যপান্ত পশুপ্রেমী। পশুদের নিয়ে বেশ কয়েকটি প্রচারেও তাঁকে দেখা গেছে। ২০১৩ সালে পেটার (PETA) প্রচারে ছিলেন সানি। ২০১৬ সালে পেটা তাঁকে ‘বছরের সেরা মানুষ’ সম্মান দেয়। তাঁর একসময়ের পড়াশোনাই তাঁকে এই পশু প্রেমের প্রতি আকৃষ্ট করে। অতীতে তাঁকে আমেরিকান ক্যান্সার সোসাইটির জন্য অর্থ সংগ্রহ করতেও দেখা গেছে। এমনকি করোনাকালে তাঁর এক মানবিক রূপও দেখেছে বিশ্ব।
ভারতীয় সিনেমায় সানি লিওনের সবচেয়ে বড় অবদান হল তাঁর সুপারহিট আইটেম ডান্স। কোমরে বাঁক হেলিয়ে, পায়ের তালে তালে উষ্ণতা ছড়িয়ে কীভাবে সকলের মন কাড়তে হয় সানি লিওনের চেয়ে ভাল আর কেই বা জানেন!